Pradhan Mantri Awas Yojana

মাটির বাড়ি আর কবে পাকা হবে, প্রশ্ন সিজা গ্রামের

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিজা গ্রামে প্রায় সাড়ে চারশো পরিবার রয়েছে। এখানে অন্তত ১০০টি পরিবার মাটির বাড়িতে বসবাস করে।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:০১
Share:

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (আবাস প্লাস) ২ লক্ষ ১০ হাজার বাড়ির অনুমোদন পেয়েছে জেলা। প্রকৃত উপভোক্তা যাচাই করতে সমীক্ষা চলছে। কাঁচা বাড়ি পাকা হবে, সেই আশায় মুখে হাসি ফুটেছে বহু পরিবারের। শনিবার বিকেলে সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের চোরমুড়া গ্রামে আবাস যোজনার বাড়ির সমীক্ষায় নিজে গিয়ে জেলাশাসক বিধান রায় বলেছিলেন, ‘‘আবাস যোজনায় যেন প্রকৃত উপভোক্তারা সুবিধা পান তা খতিয়ে দেখতে এসেছি। আমি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছি তার অন্যথা যেন কোনও ভাবেই না হয়। যদি কোথাও বিচ্যুতির খবর আসে তা আমি নিশ্চয় খতিয়ে দেখব।’’

Advertisement

ঠিক একদিন পরেই সিউড়ি বিধানসভা এলাকার সাহাপুর পঞ্চায়েতের সিজা গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, প্রশাসনের আশ্বাসই সার, এখানে বহু পরিবার রয়েছে যাঁরা মাটির বাড়িতে বসবাস করেন। অথচ গ্রামের এক জন বাসিন্দার নামও আবাস প্লাস এর তালিকায় ঠাঁই পায়নি। এর জন্য অবশ্য শাসকদলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতিকেই কাঠগড়ায় তুলছেন সকলে। তৃণমূল কর্মী থেকে এলাকার বাসিন্দাদের অধিকাংশের অভিযোগ, গ্রামে মাটির বাড়িতে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে ‘আবাস প্লাস’ এর তালিকায় তুলতে টাকা চেয়েছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি। তাতে রাজি না হওয়ায় আস্ত গ্রামকেই সরকারি আবাস যোজনা থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। এই অভিযোগ শুনে বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ওঁরা এ কথা আগে জানাননি কেন?’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিজা গ্রামে প্রায় সাড়ে চারশো পরিবার রয়েছে। এখানে অন্তত ১০০টি পরিবার মাটির বাড়িতে বসবাস করে। এক জনের নামও বাড়ি প্রাপকের তালিকায় নেই। গ্রামের বাউড়ি পাড়ায় বাসিন্দা পরী বাউড়ি বলেন, ‘‘আমার তিন ছেলের সকলেই মাটির বাড়িতে বাস করে। প্রতিটি গ্রামে গরিবেরা ঘর পাচ্ছে শুনছি, তবে আমরা বাদ!’’ ওই পাড়ার নারায়ণ বাউড়ি, পুষ্পা, শেফালি বাউড়িরা বলেন, ‘‘অন্য গ্রামে একই পরিবারের স্বামী স্ত্রী দু’জনের নামে বাড়ির অনুমোদন হচ্ছে। আমরা তো একটা বাড়িও পেলাম না। শাসকদল ছাড়া কাকে বলব?’’ সহমত পোষণ করছেন তৃণমূল বুথ সভাপতি শেখ কামাল হোসেন। তিনি বলছেন, ‘‘আমাদের গ্রামটিতে ভোটারের সংখ্যা ৮৩২। গত বিধানসভায় ৫১৩ ভোটে লিড দিয়েছিলাম। গোটা ব্লকে আবাস প্লাসের তালিকায় ৪৯৪৭জন উপভোক্তা আছেন। অথচ প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতির দাবি মতো টাকা না দেওয়ায় আমাদের গ্রামের মানুষকে বঞ্চিত করা হল। কোন মুখে ভোট চাইতে যাব?’’

Advertisement

প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। তবে দুবরাজপুরের ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্র বলছেন, ‘‘আবাস যোজনা সহ নানা দুর্নীতির অভিযোগে আগেই ওঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা যে ওই গ্রামের বাসিন্দারা সরকারি প্রকল্পের বাড়ি থেকে বঞ্চিত হলেন।’’ বিডিও রাজা আদকের দাবি, ‘‘কে কীভাবে বাদ গেলেন সেটা দেখার সময় নেই। আবাস প্লাসের যে তালিকা ধরে সমীক্ষা হচ্ছে সেটাই এখন বিবেচ্য। পরে যদি সুযোগ আসে বাড়ি পাওয়ার তখন সেটা বিবেচনা করা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন