Visva-Bharati University

‘ওরা মাওবাদী’, তিন সাসপেন্ড পড়ুয়াকে নিয়ে বিদ্যুৎ-মন্তব্যে বিতর্কে উত্তাল বিশ্বভারতী

এই প্রথম নয়, এর আগেও এমন অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে এসেছে। যা বিদ্যুতের বলে দাবি করা হয়েছে। ওই সব অডিয়ো ক্লিপ ঘিরেও বিতর্ক ছড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২১ ১৮:১২
Share:

বিশ্বভারতীর পড়ুয়া সোমনাথ সৌ-এর ধরনা মঞ্চে অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাসপেন্ড হওয়া ৩ পড়ুয়াকে ‘মাওবাদী’ আখ্যা দিলেন খোদ উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এক বৈঠকের একটি অডিয়ো ক্লিপ বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘ওই ৩ পড়ুয়া মাওবাদী।’ যদিও সেই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে ওই অডিয়ো ক্লিপ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ৩ পড়ুয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎকে বোলপুরের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করতে শোনা গিয়েছে ওই অডিয়ো ক্লিপে।

Advertisement

বুধবার অর্থাৎ ১৬ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, অধ্যাপিকা এবং আধিকারিকদের নিয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ। ছড়িয়ে পড়া অডিয়ো ক্লিপটি ওই বৈঠকের বলে দাবি করা হয়েছে। তাতে এক ব্যক্তি ভর্ৎসনার সুরে বলছেন, ‘‘আমাদের অনির্বাণ ডাকছে বুদ্ধিজীবীদের বৈঠকে। আমাদের মাস্টারমশাইরা সব গিয়ে হাজির হচ্ছে। তারা কিন্তু এক বার ভাবল না বিদ্যুৎ চক্রবর্তী...তিনটে ছাত্র যারা মাওবাদী, সেখানে অনির্বাণ গিয়ে বৈঠক করে বলছেন, ‘আমরা উপাচার্যকে বহিষ্কার করব’। কেউ কোনও প্রতিবাদ করলাম না! তার মানে কী! উপাচার্য পাঞ্চিং ব্যাগ। মারতে থাক, যে ভাবে খুশি মারতে থাক। আমরা চুপচাপ থাকব। যখন ধান্দা হবে তখন আমি...।’’— এই ব্যক্তির কণ্ঠস্বরের সঙ্গে বিদ্যুতের মিল রয়েছে। দাবি ওটা বিদ্যুতেরই কণ্ঠস্বর। ঘটনাচক্রে গত বুধবার বিশ্বভারতীর প্রায় ১৮০ জন আধিকারিক, অধ্যাপক এবং অধ্যাপিকাকে নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন বিদ্যুৎ। অডিয়ো ক্লিপে যে ‘অনির্বাণ’-এর নাম শোনা গিয়েছে তিনি বোলপুর কেন্দ্র থেকে হওয়া বিজেপি-র প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেই মনে করা হচ্ছে। ঘটনাচক্রে একাধিক বার উপাচার্যের সমালোচনা করেন বিজেপি প্রার্থী।

গত ২৪ এপ্রিল উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের ফাল্গুনী পান, সোমনাথ সৌ, সঙ্গীতভবনের ছাত্রী রূপা চক্রবর্তীকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। এখনও তাঁরা সাসপেন্ডই আছেন। উপাচার্যের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসেন ওই পড়ুয়ারা। সেই ধর্না মঞ্চে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেন অনির্বাণ। সেই ঘটনার উল্লেখও রয়েছে ওই ক্লিপে। বিদ্যুতের ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত থাকা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অধ্যাপক বলেন, ‘‘ওই কণ্ঠস্বর’ উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। ওই বৈঠকে আরও নানা বিষয়ে কথা বলেন তিনি।’’

Advertisement

ওই অডিয়ো ক্লিপ নিয়ে সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়া সোমনাথ বলছেন, ‘‘এই আন্দোলন বিশ্বভারতীর সাধারণ ছাত্রছাত্রীর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। উপাচার্য এই আন্দোলনকে ভয় পান বলেই মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নিজের পক্ষে সমর্থন জোগাড় করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।’’ এ নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করার কথাও ভেবে দেখছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সংগঠন।

এই প্রথম নয়, এর আগেও এমন অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে এসেছে। যা বিদ্যুতের বলে দাবিও করা হয়েছে। ওই সব অডিয়ো ক্লিপ ঘিরেও বিতর্ক ছড়িয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন