পাইপ ফেটে মর্গে বিপত্তি

বাঁকুড়া মর্গ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া মেডিক্যাল চত্বরে নালা গড়ার কাজ চলছিল। সেই কাজ করতে গিয়ে কোনও ভাবে মাটির নীচ দিয়ে যাওয়া মর্গের জল সরবরাহ করার পাইপ ফেটে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০০:৪৫
Share:

চলছে পাইপ সারাই। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতাল চত্বরে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে ফেটে গিয়েছিল মর্গের জল সরবরাহের পাইপলাইন। রবিবার ওই ঘটনার জেরে দিনভর বাঁকুড়া মর্গে জল পরিষেবা বন্ধ ছিল। সোমবারও পাইপলাইন সারাই না হওয়ায় ক্ষোভ ছড়ায় মর্গের কর্মীদের মধ্যে। ক্ষুব্ধ কর্মীরা ময়না-তদন্তের কাজ বন্ধ রাখবেন বলে হুঁশিয়ারি দেওয়ায় উপস্থিত লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। বিষয়টি নিয়ে সরব হন বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার। পরে অবশ্য বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে দ্রুত মর্গের পাইপলাইন সারাই শুরু করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়।

Advertisement

বাঁকুড়া মর্গ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া মেডিক্যাল চত্বরে নালা গড়ার কাজ চলছিল। সেই কাজ করতে গিয়ে কোনও ভাবে মাটির নীচ দিয়ে যাওয়া মর্গের জল সরবরাহ করার পাইপ ফেটে যায়। এই ঘটনার জেরেই রবিবার থেকে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে মর্গে। মর্গের কর্মীদের একাংশ জানান, মৃতদেহ ধোয়া থেকে শুরু করে মর্গের সাফাই— সব কাজই ওই জলে হয়। এমনকি দেহ কাটা-ছেঁড়ার কাজে যুক্ত কর্মীরা স্নানও সারেন ওই জলেই। জল বন্ধ থাকায় প্রথম দিন একটি পুকুর থেকে তাঁরা জল এনে কাজ সেরেছিলেন। সূত্রের দাবি, এ ভাবেই রবিবার মোট আটটি দেহের ময়না-তদন্ত হয়েছিল বাঁকুড়া মর্গে।

বাঁকুড়া মেডিক্যালের মর্গের কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ, “আমরা ভেবেছিলাম পাইপলাইন সারাই করে সোমবার থেকে জল পরিষেবা স্বাভাবিক করে দেওয়া হবে। কিন্তু এ দিন দুপুর পর্যন্ত কিছুই করা হয়নি। জল না থাকলে আমরা কাজ করব কী ভাবে, সেই প্রশ্নই তুলেছিলাম।’’ এ দিকে জল চালু না হলে ময়না-তদন্তের কাজ বন্ধ রাখা হবে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। মর্গে আসা মৃতদের পরিজনেরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। বাঁকুড়া মর্গ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচটি দেহ ময়না-তদন্তের জন্য বাঁকুড়া মর্গে নিয়ে আসা হয়েছিল।

Advertisement

ঘটনার খবর পান বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, “মর্গের সমস্যাটি শুনেই আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে কথা বলি। জানতে পারি, হাসপাতাল চত্বরে মাটির তলায় কোনও দিক দিয়ে যে মর্গের পাইপলাইন গিয়েছে সে কথা নালা গড়ার কাজ করা সংস্থাকে জানানোই হয়নি। মর্গের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার চব্বিশ ঘণ্টা পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন নজর দেননি তা বুঝতে পারলাম না।” বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধানের দাবি, “মর্গে জল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, তা আমাদের জানানো হয়নি। এ দিন ঘটনাটি শুনেই দ্রুত পাইপলাইন সারাইয়ের

ব্যবস্থা করেছি।”

এক পড়শির অপমৃত্যু হওয়ায় দেহের ময়না-তদন্তের জন্য বাঁকুড়ায় এসেছিলেন বেলিয়াতোড়ের বারবেন্দ্যার বাসিন্দা তপন কারক। তিনি বলেন, “মর্গে এসেই শুনলাম জল নেই বলে ময়না-তদন্ত বন্ধ থাকবে। শুনে আমরা দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। তেমনটা হলে খুব সমস্যার মধ্যে পড়তে হত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন