গ্রামে বোতলের জল দিতে প্রকল্প

লক্ষ্য, বিশুদ্ধ পানীয় জল গ্রামের মানুষের নাগালে পৌঁছে দেওয়া। সেই কাজে জেলার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বনির্ভর দলগুলিকে ব্যবহার করতে চেয়ে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সাহায্য চাইল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৫২
Share:

লক্ষ্য, বিশুদ্ধ পানীয় জল গ্রামের মানুষের নাগালে পৌঁছে দেওয়া। সেই কাজে জেলার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বনির্ভর দলগুলিকে ব্যবহার করতে চেয়ে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সাহায্য চাইল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বাজার চলতি বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের বোতলবন্দি জলের সমতুল পরিস্রুত পানীয় জল কম দামে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পাইলট প্রকল্প ‘আনন্দধারা’-র সাফল্যের বিষয়টি মাথায় রেখেই এই ভাবনা। ‘আনন্দধারা’-র আওতায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ব্যবহার করে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের কাছে কী ভাবে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট কিছুদিন আগেই রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কাছে পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক অলোকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘এই মর্মে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে এই প্রকল্প নিয়ে কথা বলব।’’

চলতি ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে পুরুলিয়া শহরে একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পরিস্রুত পানীয় জল তৈরির প্রকল্পের উদ্বোধন করেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব ছোটেন ডি লামা। জেলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি প্রকল্প দফতরের আধিকারিক অমল আচার্য জানাচ্ছেন, ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠী খুব কম সময়ে তাদের জলের চাহিদা তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে। তাদের তৈরি জলের নাম ‘জীবনধারা’। ২০ লিটার জল মাত্র ১৫ টাকায় বিক্রি করছেন বলে জানান ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য রিনা মাহাতো, গায়ত্রী দাস।

Advertisement

এই সাফল্য প্রত্যন্ত গ্রামেও বিশুদ্ধ জল পৌঁছনোর প্রকল্পে উৎসাহিত করেছে প্রশাসনকে। প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলার ২০টি ব্লকের মধ্যে ১৮টিতেই ফ্লোরাইডের নমুনা মিলেছে। বেশ কিছু জায়গায় জলে মাত্রাতিরিক্ত আয়রনও রয়েছে। বেশির ভাগ গ্রামেই পানীয় জলের উৎস বলতে নলকূপ। পঞ্চায়েত সচিব যখন পুরুলিয়ায় এসেছিলেন, তখন প্রশাসনের এই পরিকল্পনার কথা জানান প্রাক্তন জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী।

জেলায় ১৭০টি পঞ্চায়েত রয়েছে। প্রতি পঞ্চায়েতেই বিভিন্ন স্বনির্ভর দলকে নিয়ে একটি সঙ্ঘ রয়েছে। প্রশাসনের ভাষায় যা ক্লাস্টার। ঠিক হয়েছে, একটি বেসরকারি সংস্থা পানীয় জল তৈরির যন্ত্র স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দেবে। যন্ত্র, জলবন্দি করার প্লাস্টিকের জার, বিদ্যুতের সংযোগ ও মাটির নীচ থেকে জল তোলার খরচ বাবদ প্রকল্প ব্যয় প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষের কিছু বেশি। ১৭০টি পঞ্চায়েতের জন্য ৫ কোটি ১০ লক্ষ টাকার প্রকল্প রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাকি খরচ বহন করবে সংশ্লিষ্ট স্বনির্ভর গোষ্ঠী।

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিতে এ ব্যাপারে ঋণ দিয়ে সাহায্য করতে একটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রাথমিক কথা হয়ছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা হিসেব করে দেখেছি, ২০ লিটার জল তৈরি করতে কমবেশি দু’টাকা খরচ হবে। তাই বাজারের থেকে অনেক কম দামে বেচলেও এক দিকে যেমন স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হবে, অন্য দিকে সাধারণ মানুষও নিরাপদ পানীয় জল পাবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন