বঙ্গ বিদ্যালয়ের পরে এ বার তামলিবাঁধ ময়দান সংলগ্ন এলাকাতেও অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে উদ্যোগী হল জেলা প্রশাসন। শুক্রবার মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) অসীমকুমার বালা বিজ্ঞপ্তি জারি করে ওই ময়দানের পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলতে বলেছেন ব্যবসায়ীদের। স্টেডিয়ামের পাঁচিল থেকে আট ফুট দূরত্বের মধ্যে কোনও নির্মাণ রাখা যাবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
তামলিবাঁধ ময়দানটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীন। মাঠের বাইরে সরকারি খাস জমিতে বহু হোটেল, গুমটি ও দোকান রয়েছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা পাঁচিলে গর্ত করে নোংরা জল ও আবর্জনা মাঠের মধ্যে ফেলছেন। পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই মাঠে নিয়মিত ক্রিকেট ও ফুটবল কোচিং হয়। শিশুরা আসে। দিনের পর দিন নোংরা জল আর আবর্জনা ফেলায় মাঠ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’’ দীর্ঘ দিন ধরেই মাঠটি বাঁচাতে জেলা প্রশাসনকে পদক্ষেপ করার দাবি তোলা হয়েছে। তিনি জানান, মাস খানেক আগেও এ নিয়ে মহকুমাশাসকের দফতরে জেলা ক্রীড়া সংস্থার তরফে লিখিত আবেদন জানানো হয়। অবশেষে মহকুমাশাসক অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে উদ্যোগী হয়েছেন।
মহকুমাশাসক বলেন, “আমি নিজে ওই মাঠটির পরিস্থিতি দেখেছি। সত্যিই কিছু ব্যবসায়ীর জন্য মাঠের একাংশ আবর্জনায় ভরে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের পাঁচিল থেকে আট ফুট জায়গা ছেড়ে বসতে বলা হয়েছে।’’ তিনি জানান, সাত দিনের মধ্যেই ওই এলাকায় অভিযানে নামা হবে। তার আগেই দোকান সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের।
ওই এলাকার ব্যবসায়ীদের সংগঠন নেহেরু পার্ক মার্কেট কমপ্লেক্স কমিটির সভাপতি রাজীব হাজরা বলেন, “এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে কিছু ব্যবসায়ী নিজেদের জায়গার বাইরে অবৈধ নির্মাণ করেছেন। তাঁদের জন্য মাঠও নোংরা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সংগঠনের পক্ষ থেকেও ওঁদের সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু কানে কথা তোলেননি।’’ এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের পাশেই থাকছেন রাজীববাবু।
বাঁকুড়া শহরের অন্যতম প্রাচীন স্কুল বঙ্গবিদ্যালয়ের জমি দখল মুক্ত করতে সদ্য অভিযান চালানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন মহকুমাশাসক। জানুয়ারির শেষে ওই অভিযান হবে বলে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই অভিযান করা হয়েছে গন্ধেশ্বরী নদী এবং শহরের ভৈরব স্থান এলাকার প্রশাসনিক জমিতে। বাঁকুড়া শহরে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এর জেরে যানজট ও অন্য নানা সমস্যা হচ্ছে বলে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দাবি উঠেছে দখল হটানোর। কিন্তু প্রশাসনকে বিশেষ নড়েচড়ে বসতে দেখা যায়নি।
গত কয়েক মাসে প্রশাসনিক জমি দখলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসনের একের পর এক পদক্ষেপ অন্য বার্তাই দিচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ মনে করছেন। মহকুমাশাসক বলেন, “শীঘ্রই শহরের আরও বেশ কিছু জায়গায় অভিযানে নামব আমরা।”