পুজোয় পাশ, জোর পরীক্ষা দীপাবলিতেই

প্রথম ধাপের পরীক্ষায় বেশ ভাল ভাবেই উতরে গেল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। যার ফলে গত বছর কালীপুজোর রাত থেকে এ বার পুজোর রাতের ফারাক টের পেয়েছেন জেলার বাসিন্দারা। পুলিশের চেষ্টা সত্ত্বেও গত বার কালীপুজোর রাতে যথেষ্ট শব্দবাজি ফেটেছিল জেলার বিভিন্ন এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৬ ০০:২০
Share:

প্রথম ধাপের পরীক্ষায় বেশ ভাল ভাবেই উতরে গেল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। যার ফলে গত বছর কালীপুজোর রাত থেকে এ বার পুজোর রাতের ফারাক টের পেয়েছেন জেলার বাসিন্দারা।

Advertisement

পুলিশের চেষ্টা সত্ত্বেও গত বার কালীপুজোর রাতে যথেষ্ট শব্দবাজি ফেটেছিল জেলার বিভিন্ন এলাকায়। এ বার কিন্তু অভিজ্ঞতাটা একটু অন্য রকম। টুকটাক কিছু চকলেট বোমার আওয়াজ কানে এলেও নির্বিচারে শব্দবাজি ফাটেনি—এমনটাই বলছেন পুরুলিয়া শহর থেকে শুরু করে রেলশহর আদ্রা, রঘুনাথপুর, ঝালদা, নিতুড়িয়ার মতো এলাকার বাসিন্দাদের বড় অংশ। তবে, তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, পুলিশ-প্রশাসনের আসল পরীক্ষা রবিবারের রাত। ঝাড়়খণ্ড লাগোয়ো পুরুলিয়ায় দিওয়ালির রাতেই বেশি শব্দবাজি ফাটানোর রেওয়াজ আছে। ফলে রবিবার রাতে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানো রুখতে পুলিশ কতটা সমর্থ হচ্ছে, সেটা দেখতে চাইছেন সাধারণ মানুষ।

দুর্গাপুজো থেকেই নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি রুখতে পুলিশ অভিযান ও নজরদারি শুরু করেছিল। ওই সময় ছয় বাজি বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আটক করা হয়েছিল প্রচুর নিষিদ্ধ শব্দবাজি। পুলিশের দাবি, তারই জেরে শব্দবাজি বিক্রেতাদের মনে কিছুটা ভয় ঢুকেছে। এবং কালীপুজোয় শব্দবাজি বিক্রি অনেকটাই রোখা গিয়েছে। পুরুলিয়া শহর, আদ্রা, রঘুনাথপুরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, শব্দবাজি বিক্রি ও ফাটানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের প্রচার এ ক্ষেত্রে অনেকটাই কাজ করেছে। বাজি বিক্রেতাদের গ্রেফতার, পুলিশি অভিযানে নিষিদ্ধ শব্দবাজি আটক এই ধনের বিষয়গুলির জন্য কিছুটা হলেও সচেতনতা তৈরি হয়েছে। কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, পুলিশের চাপেই এ বার প্রকাশ্যে বাজি বিক্রি অনেকটাই কম।

Advertisement

পুরুলিয়া শহরের চকবাজারের দুই পরিচিত বাজি ব্যবসায়ী গৌতম চেল, হিমাদ্রি সেন জানান, এ বছর তাঁরা পুরোটাই আলোর বাজি বিক্রি করেছেন। আর যাঁরা চকলেটের মতো শব্দবাজি ফাটাতেন, তাঁদের একাংশ বলছেন, ‘‘বেশির ভাগ মানুষই এখন শব্দবাজি ফাটানো ভালভাবে নেন না। কয়েক জন গত বছর প্রতিবাদ পর্যন্ত করেছিলেন। তাই এ বার শব্দবাজি ফাটানোর দিকে যাইনি।” পুরুলিয়া শহরের তেলকল পাড়ার বাসিন্দা অজিত মাহাতো, কুক্‌স কম্পাউন্ডের ইন্দ্রাণী মাইতি, হুচুকপাড়ার নবীন মুখোপাধ্যায় কিংবা রঘুনাথপুরের ব্লকডাঙ্গার সুকুমার নাগরা বলেন, ‘‘কালীপুজোর রাতটা এ বার ব্যতিক্রম ছিল। টুকটাক শব্দবাজির আওয়াজ পাওয়া গেলেও রাতে নির্বিচারে বাজি ফাটেনি।’’

এ বার পুজোর রাতে মূলত আতসবাজির রোশনাই চোখে পড়েছে জেলায়। গত বছর অবধি কিন্তু কালীপুজো মিটতেই গভীর রাতে বিকট শব্দে চকলেট,দোদোমার মতো শব্দবাজির আওয়াজে চমকে উঠতে হয়েছিল জেলার বাসিন্দাদের। এ বার ওই ছবিটা অনেকটাই বদলেছে। তবে দীপাবলির রাতে চকলেটের মতো নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর প্রবণতার কথা মনে করে জেলার অনেক বাসিন্দারই আশঙ্কা, দীপাবলি হয়তো কালীপুজোর মতো নাও হতে পারে।

আসলে কালীপুজো যদি সেমিফাইনাল হয়, দিওয়ালি যে সেমিফাইনাল! এই মহা-ম্যাচে পুলিশ উতরে যাচ্ছে কিনা, তার উত্তর মিলবে রবিবার রাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন