সাইকেলের অভিনব মণ্ডপ জেলা স্কুলে

পুজো মণ্ডপের একঘেয়েমি কাটিয়ে তুলতেই এই ভাবনা। স্কুলের দুই অঙ্কন শিক্ষক সারথি দাস ও প্রদীপ সাউ বলেন— “এটা গ্যালারি-ভিত্তিক শিল্প কর্ম নয়, বরং বলা যেতে পারে পাবলিক আর্ট। এখানে সাইকেল একটা নতুন মাধ্যম।’’

Advertisement

তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৬:১০
Share:

সাজ: বীরভূম জেলা স্কুলের পড়ুয়াদের ইনস্টলেশন। নিজস্ব চিত্র

পরপর সাইকেল সাজিয়ে সরস্বতীর অভিনব পুজো মণ্ডপ গড়ে তুলেছে বীরভূম জেলা স্কুলের পড়ুয়ারা। ১৬৫ বছরের বেশি পুরনো এই ঐতিহ্যবাহী স্কুলের এ বারের মূল আকর্ষণ প্রায় ৩৫ ফুট উচ্চতার এক অভূতপূর্ব শিল্প-কর্ম, যাকে বলা হচ্ছে ‘সাইট স্পেসিফিক ইন্সটলেশন’।

Advertisement

পুজো মণ্ডপের একঘেয়েমি কাটিয়ে তুলতেই এই ভাবনা। স্কুলের দুই অঙ্কন শিক্ষক সারথি দাস ও প্রদীপ সাউ বলেন— “এটা গ্যালারি-ভিত্তিক শিল্প কর্ম নয়, বরং বলা যেতে পারে পাবলিক আর্ট। এখানে সাইকেল একটা নতুন মাধ্যম।’’

শনিবার সন্ধ্যায় জনা কুড়ি স্কুল ছাত্র মাঠে বাঁশের কাঠামো বেঁধে সাইকেল দিয়ে শিল্প কর্ম তৈরি করতে লেগে পড়েছিল যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। শুধু সাইকেলই নয়, ব্যবহার করা হচ্ছে তার, টায়ার, টিউব-সহ সাইকেলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। প্রায় তিন তলা বাড়ির সমান উচ্চতার এই শিল্প কর্মে প্রায় ৩৫০টির বেশি সাইকেল ব্যবহার করা হচ্ছে।

Advertisement

কেন সাইকেলকে এ বারের পূজোতে শিল্পের মাধ্যম করা হল?

উত্তর পাওয়া গেল মাস্টারমশাইদের কাছে। তাঁরা জানালেন, দৈনন্দিন জীবনে সাইকেলের ব্যবহার খুবই বেশি। বিশেষ করে ছাত্রদের কাছে সাইকেল পরিবহনের একটা বড় মাধ্যম। সাইকেল যে গতির প্রতীক, সেই বিষয়টা ছাত্রদের মনে প্রভাব ফেলতেই এই আয়োজন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন সাহা বলেন, “সাইকেল একটা আবেগ। এর সঙ্গে ছাত্রজীবন জড়িয়ে রয়েছে। এই দূষণহীন যানের তুলনা হয় না। সেখানেই আমাদের স্কুলের এই শিল্পকর্মের সার্থকতা।”

স্কুলের বাগানের দেওয়াল সাইকেল বিষয়ক নানা ছবিতে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। দশম ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রেরাই অগ্রণী ভূমিকায়। তবে অনন্য ক্লাসের ছাত্রেরাও বাদ নেই। একাদশের অভিষেক ঘোষ, অপূর্ব রায়, সৌম্যদীপ চক্রবর্তী বলে, ‘‘মফস্‌সল আর গ্রাম-বাংলার ছাত্রজীবনে সাইকেলের একটা আলাদা জায়গা আছে। তাই সাইকেলকে পুজো মণ্ডপে আনতে পেরে ভাল লাগছে।’’

সাইকেলে স্কুলে আসা-যাওয়া, টিউশন নিতে গেলেও সেই সাইকেল। অনেকের প্রেমের শুরুও সাইকেলেই। ইন্টলেশন শিল্প ছাড়াও থাকবে সাইকেলের ইতিহাস সম্বলিত নানা তথ্য। স্কুল চত্বরে আর ভিডিও প্রদর্শনীর মাধ্যমেও সাইকেল নিয়ে চলবে আলোকপাত। সাইকেল ছাড়াও পুরনো বছরগুলোতে স্কুলের চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, প্লাস্টিকের জলের বোতল, মই, টায়ার, চাটাই এ সব নিয়ে অনেক শিল্পকর্মের উপহার দিয়েছে ঐতিহ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা এই স্কুল।

এ ছাড়া দু’দিন ধরে চলবে নানা বিষয়ে প্রদর্শনী। প্রতি দিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও থাকছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন