গ্রামে দাপিয়ে বেড়াল দাঁতাল

দ্বারিকা শিল্পাঞ্চলের পাশে অবন্তিকা, বনমালিপুর, রেওড়া, ভাটরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়াল দাঁতাল। সোমবার সকালের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৪৮
Share:

পারাপার: দ্বারকেশ্বর দিয়ে বিষ্ণুপুরের অবন্তিকা গ্রাম থেকে ভাটরা গ্রামের পথে দাঁতাল। সোমবার দুপুরে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।

দ্বারিকা শিল্পাঞ্চলের পাশে অবন্তিকা, বনমালিপুর, রেওড়া, ভাটরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়াল দাঁতাল। সোমবার সকালের ঘটনা। ওন্দার রেঞ্জ আধিকারিক সুভাষ ঘোষ জানান, হাতিটি ‘রেসিডেন্ট’। এ দিন সকালেই বেলিয়াতোড় রেঞ্জের কুন্দলা বিটের চাপড়া ঘাট হয়ে দ্বারকেশ্বর পেরিয়ে ঢুকে পরেছে রানিখামারে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রচুর মানুষ ভিড় করেন। অনেককেই দেখা যায় হাতির কাছাকাছি চলে যেতে। বনকর্মী এবং পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।

Advertisement

রামসাগর স্টেশন থেকে বনমালিপুর যাওয়ার রাস্তায় নতুনগঞ্জ গ্রামের কাছে গিয়ে দেখা গেল, হাতিটি রাস্তা ধরে হেঁটে চলেছে। কিছুক্ষণ পরেই ধানের গন্ধে নেমে পড়ে মাঠে। স্থানীয় চাষি অরূপ পাল, বংশী পালরা বলেন, ‘‘ফসলের ক্ষতি তো হলই, সেচের শ্যালোও উপড়ে দিয়েছে।’’

রামসাগরের শ্যামল রায়, মানস দে, বাপি চক্রবর্তীদের অভিযোগ, বন দফতর হাতির গতিবিধির ব্যাপারে আগাম কোনও খবর দেয়নি।

Advertisement

এই ব্যাপারে ডিএফও (বিষ্ণুপুর-পাঞ্চেত) নীলরতন পাণ্ডা বলেন, ‘‘ওই এলাকায় সচরাচর হাতি ঢোকে না। তাই আমরাও দেরি করে খবর পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে মাইক নিয়ে বন কর্মীরা বেরিয়ে পড়েছিলেন।’’

রেওড়া, বনমালিপুর হয়ে দ্বারিকার দিকে এগোতে থাকে হাতিটি। রেওড়া গ্রামের বৈদ্যনাথ পাল, বিদ্যাধর পালরা বলেন, ‘‘গ্রামে রাধাষ্টমীর অনুষ্ঠান হচ্ছে। হাতি হাঁটতে দেখে সবাইকে ফোন করে সাবধান করে দিয়েছি।’’ জয়কৃষ্ণপুরের গৌর মিশ্র, দিলীপ খানরা বলেন, ‘‘প্রায় বছর পাঁচেক আগে এক বার দুটো হাতি এসেছিল। গ্রামের কাঁঠাল গাছ ফাঁকা করে দিয়েছিল। তার পরে এই।’’

ততক্ষণে হাজির হুলাপার্টি। তাড়া খেয়ে হাতি ধান খেত ছেড়ে বাড়ির উঠোন, মোরাম রাস্তা পার করে সোজা কাশ ফুলে ঢাকা দ্বারকেশ্বরে পৌঁছয়। নদ ধরেই ছুটতে থাকে। পার হয়ে যায় অবন্তিকা, সারদা সেতু, ভাটরা, জনতা, সুভাষপল্লি, আঁচবাড়ি। শেষ পাওয়া খবরে, গোপালপুর গ্রামের কাছে স্নান করতে দেখা গিয়েছে দাঁতালটিকে।

ডিএফও (বিষ্ণুপুর-পাঞ্চেত) জানান, বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তিনটি হাতি স্কোয়াডের লোকজন নেমেছেন। ধানের ক্ষতি যাতে না হয়, নজর রাখা হয়েছে সে দিকেও। তিনি জানান, এলাকার কেউ কেউ হাতির কাছাকাছি চলে যাচ্ছেন। বিষয়টি পুলিশ এবং প্রশাসনকে বলে রাখা হয়েছে। বন দফতর সূত্রের খবর, দাঁতালটি যেখান থেকে এসেছিল, সেখানে না ফিরলে মেদিনীপুরের দিকে পাঠানোর চেষ্টা করা হবে। ইতিমধ্যে হাতির বড় একটি দল মেদিনীপুর-বাঁকুড়া সীমানায় রয়েছে। তবে হাতি না সরা পর্যন্ত চিন্তা যাচ্ছে না চাষিদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন