Winter season

পারা দশের ঘরে, ঠান্ডায় কাবু জেলায় বিক্রিতে ধুম কম্বলের

শীতের প্রভাব বাড়তেই শীত-পোশাকের চাহিদা বেড়েছে। ভিড় হচ্ছে জেলার কাপড়ের দোকান এবং লেপ-কম্বল বিক্রেতাদের কাছে। অন্যান্য বছর নভেম্বরের মাঝের দিক থেকেই বিক্রি শুরু হয় শীতবস্ত্রের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:০৪
Share:

শীত বাড়ার সাথে সাথে চলছে পুরানো লেপ ভেঙে লেপ তৈরির কাজ। রামপুরহাটে মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিম্নচাপের মেঘ কাটতেই জাঁকিয়ে শীত পড়েছে বীরভূমে। বোলপুর, সিউড়ি, রামপুরহাট- তিন মহকুমাতেই গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার নামছে তাপমাত্রার পারদ। মঙ্গলবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এই মরশুমের সবচেয়ে কম। আচমকা ঠান্ডা পড়ায় কাবু হয়ে পড়েছেন বিশেষ করে বয়স্কেরা। সকাল সকাল স্কুলে যেতে সমস্যায় পড়ছে ছোটরাও।

শীতের প্রভাব বাড়তেই শীত-পোশাকের চাহিদা বেড়েছে। ভিড় হচ্ছে জেলার কাপড়ের দোকান এবং লেপ-কম্বল বিক্রেতাদের কাছে। অন্যান্য বছর নভেম্বরের মাঝের দিক থেকেই বিক্রি শুরু হয় শীতবস্ত্রের। কিন্তু, এ বার মেঘের কারণে ডিসেম্বরের শুরুর দিকেও তাপমাত্রার পারদ খুব একটা নামেনি। ফলে, শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসলেও বিক্রি আশানুরূপ হচ্ছিল না বস্ত্র বিক্রেতাদের৷ অকাল বৃষ্টির শেষে মেঘ কাটতেই বদলেছে পরিস্থিতি। হুহু করে নেমেছে তাপমাত্রা। ফলে চাহিদা বেড়েছে শীতবস্ত্রের। সিউড়ির কোর্ট বাজার এলাকায় সার দিয়ে বস্ত্র ব্যবসায়ীরা বসেন। সেখানে শীতপোশাকের বিক্রি গত কয়েক দিনে কয়েকগুণ বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা৷

ফারুক আলম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, “তিন চার দিন আগে পর্যন্তও দিনে ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছিল না। তবে, শেষ তিন দিন ধরে বিক্রির পরিমাণ ৭৫০০ থেকে ৮০০০ টাকা হয়েছে। তবে, গত বছর এই সময়ে দৈনিক গড়ে যা বিক্রিবাটা হত, এ বার সেই তুলনায় বিক্রি অনেকটাই কম।” বিক্রি কমার জন্য ব্যবসায়ীরা দায়ী করছেন শহরের বড় বড় শপিং মল এবং গ্রামে গ্রামে জিনিসের সহজলভ্যতাকে।

সিউড়ির টিকাপাড়ার একটি কাপড়ের দোকানের মালিক ইন্দ্রনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “শেষ কয়েক দিনে শীতবস্ত্রের বিক্রি অন্তত ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবু বলব, এ বছর বিক্রি অনেকটাই কম। এ বার শীত অনেকটা দেরিতে এসেছে আর এখন সবাই নিজের নিজের এলাকাতেই কাপড় কিনতে স্বচ্ছন্দ। যাঁরা বাইরে থেকে শহরে আসছেন, তাঁরা হয়তো মলগুলিতে জিনিস কিনতেই বেশি পছন্দ করছেন।’’

শীতবস্ত্রের পাশাপাশি পুরনো লেপ ধুনে নতুন লেপ তৈরি করা বা নতুন বাহারি কম্বল কেনার ঝোঁকও মানুষের বেড়েছে। দোকানে দোকানে এখন নানা আকারের ও রঙের কম্বল সাজানো। রামপুরহাটের এক লেপ-কম্বলের দোকানের মালিক আইনুল কুরেশি বলেন, “নতুন লেপের বিক্রি অনেকটাই কমে গেছে। অধিকাংশ ক্রেতা নরম কম্বল কিনতেই বেশি পছন্দ করেন। বিয়েবাড়িতে উপহার দেওয়ার জন্যও অনেকে ওই কম্বল কিনছেন।’’ তিনি জানান, এর পাশাপাশি প্রতি বছরই পুরনো লেপের কাপড় বদলে, তুলো ধুনে তাকে নতুন করে ব্যবহার করার জন্য অনেকেই লেপ নিয়ে আসেন দোকানে। এ বারেও তেমন লেপ আসছে অনেক। আচমকা ঠান্ডা পড়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বার কিছুটা বেশি পরিমাণেই আসছে। জেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামেও লেপ বোনার কাজ করছেন ধুনুরিরা।

আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা আরও কিছুটা নামার সম্ভাবনা আছে। তাপমাত্রার পতন হলেও কুয়াশার দেখা এখনও সেভাবে মেলেনি জেলায়। ফি-বছর শীতের সকালে পুরু কুয়াশার যে আস্তরণ দেখতে অভ্যস্ত জেলার মানুষ, তা এ বার অমিল। বরং শীতের মিঠে রোদ গায়ে মেখে প্রাতর্ভ্রমণে বেরোচ্ছেন বহু মানুষ। কুয়াশা না-থাকায় রেল ও সড়ক যোগাযোগও স্বাভাবিকই আছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন