শীতের কামড়, সুনসান পথঘাট

বাঁকুড়ায় পাঁচ বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে এ দিন পারদ নামল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:০৪
Share:

দিনশেষের রাঙা মুকুল: এই মরসুমের এখনও পর্যন্ত শীতলতম দিনের সূর্য বসেছে পাটে। শুক্রবার পুরুলিয়ার বোরোতে। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো

উত্তুরে কনকনে হাওয়ার দাপটে ঝটকা দিয়ে পারদ নামছে দুই জেলায়। হাড়ে কাঁপুনি ধরিয়ে শুক্রবার এখনও পর্যন্ত মরসুমের শীতলতম দিন এল পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায়। পুরুলিয়া জেলা কৃষি দফতর জানাচ্ছে, এ দিন পুরুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে যায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। নিকট অতীতে ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি পারদ নেমেছিল আরও নীচে, ৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

Advertisement

বাঁকুড়ায় পাঁচ বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে এ দিন পারদ নামল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া দফতরের কয়েক দশকের হিসেব ঘেঁটে জানা যায়, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর বাঁকুড়া জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল ৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তারপরে পারদের এমন পতন দেখা যায়নি। ২০১৫ সালে ২৭ ডিসেম্বর পারদ নামে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গত বছর তা-ও নামেনি। সে বার মরসুমের শীতলতম দিন ছিল ২৯ ডিসেম্বর, পারদ নেমেছিল ১০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তাই এ বার জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ায় উচ্ছ্বসিত অনেকেই। শীত এমনই ব্যাট করলে বড়দিন ও নতুন বর্ষযাপনের পিকনিক জমে যাবে বলে খুশিতে ডগমগ তাঁরা।

কালীপুজোর পর থেকেই ঠান্ডার অনুভূতি গ্রামাঞ্চলে পাওয়া যাচ্ছিল। তারপরে ধীরে ধীরে ভোরে ও সন্ধ্যায় গরম পোশাক চাপাতে দেখা যায় অনেককেই। কিন্তু ডিসেম্বর শুরু হলেও শীত সে ভাবে আসছিল না। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে গত সপ্তাহে দুই জেলার একাধিক ব্লকে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি নামে। তারপরে মেঘ কাটতেই টি-২০ মেজাজে শীতের ব্যাটিং শুরু হয়েছে।

Advertisement

গত রবিবার পুরুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার তা বেড়ে হয় ১৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফের মঙ্গলবার নেমে যায় ১১.৫ ডিগ্রিতে। তারপর থেকেই পারদ নামতে শুরু করে। বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার ঝপ করে নামে ৫ ডিগ্রিতে।

বাঁকুড়াতেও পারদ গত ক’দিনে হু হু করে নেমেছে। মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও বুধবার এক ঝটকায় প্রায় পাঁচ কমে দাঁড়ায় ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা আরও কিছুটা নামে ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আকাশ নির্মেঘ এবং উত্তুরে হাওয়ার দাপট থাকায় সকালের দিকে ব্যস্ত রাস্তায় ভিড় কম দেখা গিয়েছে। বাস, ট্রেনেও ভিড় কম ছিল। পাড়ায় পাড়ায় রোদ পোহাতে দেখা গিয়েছে। অফিস-কাছারিতেও দিনভর ঠান্ডা নিয়ে চর্চা শোনা গিয়েছে। সন্ধ্যায় বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করেন বাসিন্দারা।

পুরুলিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সকালে মানুষজন রাস্তায় বেরোতে পারছেন না। সকালের দিকের বাসে যাত্রী খুবই কম হচ্ছে।’’ সপ্তাহান্তে শীতের এমন দাপট থাকলে মুকুটমণিপুর, শুশুনিয়া, বিষ্ণুপুর, জয়চণ্ডীপাহাড়, অযোধ্যাপাহাড় প্রভৃতি পর্যটনকেন্দ্র পর্যটকেরা ভিড় করবেন বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন