জমি দিয়ে মেলেনি চাকরি, অনশনে বসলেন মঙ্গলা

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, বারো বছর আগে নিতুড়িয়ার সড়বড়ি মৌজায় দুবেশ্বরী গ্রামের প্রান্তে খোলমুখ খনি তৈরি করা হয়েছিল। সেই সময়েই এলাকার অন্য বাসিন্দাদের সঙ্গে জমি গিয়েছিল দুবেশ্বরী গ্রামের বাসিন্দা বিধবা মঙ্গলা মান্ডির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নিতুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৩০
Share:

ছেলের সঙ্গে নিতুড়িয়ার পারবেলিয়া কয়লা খনির অফিসের সামনে। নিজস্ব চিত্র

খোলমুখ খনির জন্য জমি দিয়েছিলেন বারো বছর আগে। মেলেনি ক্ষতিপূরণ। মেলেনি চাকরি। অনেক বার ইসিএল কর্তৃপক্ষের দরজায় ঘুরেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ মঙ্গলা মান্ডির। চাকরির দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে নিতুড়িয়ার পারবেলিয়া কয়লা খনির অফিসের সামনে ছেলে বিদ্যাসর মান্ডিকে নিয়ে অনশন শুরু করেছেন তিনি। তবে ইসিএল কর্তৃপক্ষের দাবি, মঙ্গলা তাঁর জমির কিছু নথিপত্র জমা করতে না পারায় জটিলতা হয়েছে।

Advertisement

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, বারো বছর আগে নিতুড়িয়ার সড়বড়ি মৌজায় দুবেশ্বরী গ্রামের প্রান্তে খোলমুখ খনি তৈরি করা হয়েছিল। সেই সময়েই এলাকার অন্য বাসিন্দাদের সঙ্গে জমি গিয়েছিল দুবেশ্বরী গ্রামের বাসিন্দা বিধবা মঙ্গলা মান্ডির। অন্য লোকজন জমির ক্ষতিপূরণ হিসাবে টাকা নিলেও মঙ্গলা চাকরি দাবি করেছিলেন। জটিলতার শুরু সেই সময় থেকেই।

মঙ্গলার দাবি, বারো বছর আগে খোলামুখ খনির জন্য তাঁর ২ একর ৩৫ ডেসিমিল জমি গিয়েছিল। তাঁর বাবার বাড়ি দুবেশ্বরী গ্রামে। এ দিন পারবেলিয়া কয়লাখনির অফিসের সামনে বসে তিনি বলেন, ‘‘খোলামুখ খনির জন্য ইসিএল যে জমি নিয়েছিল তার সবটাই ছিল আমার নামে। আমি সেই সময়ে চাকরির শর্তে জমি দিতে রাজি হয়েছিলাম। ইসিএলের আধিকারিকেরা চাকরি দেবেন বলে প্রতিশ্রতি দিয়েছিলেন। কিন্তু জমি নেওয়ার পরে চাকরির ব্যাপারে টালবাহানা শুরু হয়।’’

Advertisement

কয়লা তুলে নেওয়ার পরে ওই খোলমুখ খনি এখন পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। বালি, ছাই দিয়ে খনি ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। জমিতে চাষও হয় না। এই অবস্থায় কোনও মতে ছেলেকে নিয়ে দিন গুজরান করেছেন বলে দাবি মঙ্গলার। বছর বাইশের বিদ্যাসর বলেন, ‘‘কয়লা খনির জন্য দেওয়া জমিটুকুই আমাদের সম্বল ছিল। বারো বছর আগে সেই জমি যাওয়ার পরে মাকে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতে হয়েছে। এখন আমি দিনমজুরি করি।’’

কেন এমনটা হল?

নিয়ম অনুযায়ী, চাকরি পেতে নিদেন পক্ষে দু’ একর জমি দিতে হয়। ইসিএলের সোদপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার এমকে যোশী জানান, দুবেশ্বরীতে খোলামুখ খনি তৈরির সময়ে প্রথমে মঙ্গলা মান্ডির থেকে ১ একর ৭০ ডেসিমিল জমি নেওয়া হয়েছিল। তার বদলে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয় বলে আরও ৩০ ডেসিমিল জমি নেওয়া হয়। কিন্তু মোট দু’একর জমির মালিকানা সংক্রান্ত কয়েকটি নথি ওই মহিলার কাছে না থাকায় চাকরি দিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

সমস্যা নিয়ে অনেক বার ইসিএল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়ে লাভ না হওয়াতেই অনশন শুরু করেছেন বলে দাবি করেছেন মঙ্গলা। তবে জিএম বলছেন, ‘‘আমরা জমি সংক্রান্ত সমস্ত নথি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছি। কিন্তু সেখান থেকে আরও কিছু নথি চাওয়া হয়েছে। সেই নথি আমরা তাঁকে জমা করতে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন