চুবিয়ে খুন, গ্রেফতার পড়শি যুবক

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নফরমণ্ডলডি গ্রামের বাসিন্দা পদকি মাঝির স্বামী ধর্মধাস মাঝির মৃত্যু হয়েছে কয়েক বছর আগে। নিঃসন্তান পদকি একাই থাকতেন বাড়িতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাশীপুর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ১২:০৬
Share:

পদকি ও বিনোদ

এক প্রৌঢ়াকে জলে ডুবিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হল তাঁরই পড়শি যুবক। রবিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার কাশীপুর থানার রাঙামাটি-রঞ্জনডি পঞ্চায়েতের নফরমণ্ডলডি গ্রামে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম পদকি মাঝি (৫০)। অভিযোগ পেয়ে সেই রাতেই পুলিশ অভিযুক্ত বিনোদ সোরেন নামের বছর তিরিশের ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে। সোমবার ধৃতকে তোলা হয়েছিল রঘুনাথপুর আদালতে। বিচারক তাকে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশের দাবি, গ্রাম্য বিবাদের জেরেই এই খুনের ঘটনা বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তবে ধৃত বিনোদ এ দিন আদালতে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নফরমণ্ডলডি গ্রামের বাসিন্দা পদকি মাঝির স্বামী ধর্মধাস মাঝির মৃত্যু হয়েছে কয়েক বছর আগে। নিঃসন্তান পদকি একাই থাকতেন বাড়িতে। রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ির পিছনে পুকুরে গিয়েছিলেন জল নিতে। অভিযোগ, সেই সময়েই তাঁকে জলে ডুবিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে ওই পড়শি যুবক।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি করেছেন নিহতের আত্মীয়া প্রথমি সোরনে। তাঁর দাবি, মাঠ থেকে চাষের কাজ সেরে তিনি পুকুরে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই চোখে পড়ে ঘাটের কাছে পদকির ঘাড় জলে ডুবিয়ে ধরেছে বিনোদ। ছটফট করছিলেন পদকি।
ওই মহিলার অভিযোগ, ‘‘দূর থেকে প্রথমে কিছু বুঝতে পারিনি। কাছে গিয়ে দেখি পদকিকে জলের মধ্যে ডুবিয়ে ধরে রেখেছে বিনোদ। পদকিকে খুন করা হচ্ছে বুঝতে পেরে চিৎকার জুড়ে দিই। বিপদ বুঝে পদকিকে ছেড়ে পালিয়ে যায় বিনোদ।” পড়শিরা যখন জড়ো হয়ে উদ্ধার করতে পুকুরে নামেন, তখন পদকির দেহে আর সাড়া মেলেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের ভাইপো বাবুরাম সোরেন রাতে বিনোদের বিরুদ্ধে তাঁর পিসিমাকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরেই গ্রামে তদন্ত গিয়ে বিনোদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাবুরামের দাবি, তিনি প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে শুনেছেন, বিনোদ তাঁর পিসিমাকে ডুবিয়ে মেরেছে।
কিন্তু, খুনের কারণ কী? প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, কয়েকবছর আগে পদকির বাড়ির একটি ছাগল চুরি যায়। তাঁদের সন্দেহ ছিল, বিনোদ ওই ছাগল চুরি করেছে। সেই সময়ে বেঁচে ছিলেন পদকির স্বামী ধর্মদাসবাবু। ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে ধর্মধাস তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। তারপর থেকেই পদকিদের উপরে রাগ ছিল বিনোদের। সেই পুরনো আক্রোশের বশেই বিনোদ পদকিকে খুন করেছে বলে দাবি তাঁর পরিজনদের।
পুলিশের দাবি, গ্রামে এমনিতেই রগচটা বলে পরিচয় আছে বিনোদের। এ ছাড়া, নিয়মিত সে নেশাও করে বলে অভিযোগ। ভিন্‌ রাজ্যে দিনমজদুরের কাজ করে বিনোদ। মাঝে মধ্যে নফরমণ্ডলডি গ্রামে ফেরে। সম্প্রতি বিহার থেকে গ্রামে ফিরেছিল সে। যদিও অভিযুক্ত দাবি করেছেন, তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন