বাড়ির অমতে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন এক যুবক-যুবতী। যুবতী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় গ্রামে ফিরতে চেয়েছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, গ্রামবাসীর একাংশ এবং যুবতীর বাড়ির লোকজন ওই দম্পতির গ্রামে ঢোকায় আপত্তি তুলেছেন। শেষে জেলার মহিলা সুরক্ষা আধিকারিকের মধ্যস্থতায় গ্রামে ঢুকতে পেরেছেন ওই দম্পতি। পুলিশও তাঁদের অভয় দিয়েছে।
ঘটনাটি বাঁকুড়ার ইঁদপুর থানা এলাকার। ওই দম্পতি একই গ্রামের বাসিন্দা। কলেজে পড়ার সময় থেকে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ছেলের পরিবারের তুলনায় মেয়েটির পরিবার অনেকটাই স্বচ্ছল। দম্পতির অভিযোগ, মেয়ের পরিবার তাঁদের এই সম্পর্ক মেনে নিতে চায়নি। বাধ্য হয়েই ২০১৩ সালের ৩ জুলাই দু’জনে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। এ নিয়ে মেয়ের পরিবার পুলিশের দ্বারস্থ হলেও দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় আইনগত দিক দিয়ে কিছু করা যায়নি। যুবকটি একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। কর্মসূত্রে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে যান শিলিগুড়িতে। সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তাঁকে গ্রামের বাড়িতে, নিজের বাবা-মায়ের কাছে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন ওই যুবক।
এ দিকে, তাঁরা গ্রামে ফিরে আসছেন খবর পেয়েই মেয়ের বাড়ির লোকজন ও কিছু গ্রামবাসী তাঁদের ফোন করে গ্রামে ঢুকতে বারণ করেন এবং গ্রামে এলে মারধর করারও হুমকি দেন বলে ওই যুবকের অভিযোগ। তার জেরে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি থেকে বাঁকুড়ায় এসে সোজা মহিলা সুরক্ষা দফতরে হাজির হন দম্পতি। তাঁদের কথায়, “মারধরের হুমকি শুনে আমরা ভয় পেয়েছিলাম। তাই মহিলা সুরক্ষা আধিকারিকের কাছে গিয়ে ঘটনাটি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে সাহায্য চাই।” পুরো ঘটনা শোনার পর জেলা মহিলা সুরক্ষা আধিকারিক অপর্ণা দত্ত ইঁদপুর থানায় ফোন করে দম্পতিকে সাহায্য করার নির্দেশ দেন। অপর্ণাদেবীর কথা মতো ওই দম্পতি ইঁদপুর থানায় যান। পুলিশকর্মীরা তাঁদের নির্ভয়ে বাড়ি যেতে এবং কোনও সমস্যা হলে ফোনে থানায় যোগাযোগ করতে বলেন।
পুলিশের আশ্বাস পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই দম্পতি গ্রামে ঢোকেন। অপর্ণাদেবী বলেন, “ওঁরা দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক। তাই ওঁদের বিয়েতে কেউ আপত্তি জানাতে পারেন না। ওই দম্পতিকে গ্রামে ঢুকতে না দেওয়াটা আইনত অপরাধ। কেউ এই কাজ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ইঁদপুর থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “বিষয়টির উপর আমাদের নজর রয়েছে। ওই দম্পতির কোনও রকম অসুবিধা হলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে হয়েছে।”