কয়েকদিন আগেই একটি মামলায় জেল থেকে সে জামিনে মুক্ত হয়। কিন্তু টাকা না থাকায় উকিলের ফিজ বাকি পড়েছিল। সেই টাকা জোগাড় করতে গিয়েই মানবাজারে ডাকাতি করতে এসেছিল সে। শুক্রবার রাতে মানবাজারে এক পুরোহিতের বাড়িতে ডাকাতি করতে এসে ধরা পড়া এক দুষ্কৃতী জেরায় পুলিশের কাছে এমনই দাবি করেছে।
মানবাজার থানায় রবিবার ওই দুষ্কৃতীকে জেরা করে এমনই চমকপ্রদ তথ্য উঠে এল। পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীর নাম পটল ওরফে বটম মুদি। বাড়ি, কাঁটাডি। পুলিশের দাবি, যাযাবর সম্প্রদায়ের পটল ভুল ঠিকানা দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। তার আসল বাড়ি পুরুলিয়ারই জয়পুরের নারায়নপুর গ্রামে।
শুক্রবার রাতে কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা, পেশায় পুরোহিত, বাবলু মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে রাত দুটো নাগাদ ডাকাত পড়ে। বাইরের গ্রিল কেটে দিলেও ভিতর ঘরের কাঠের দরজা বাবা-ছেলে ঠেলে ধরে থাকায় ডাকাতদল ঘরে ঢুকতে পারেনি। দরজার পাল্লা ধরে দুই পক্ষের ঠেলাঠেলির শেষ মুর্হূতে পুলিশ এসে পড়ায়, দলের এক সদস্য পটল ধরা পড়ে যায়। পুরুলিয়া আদালতে এ দিন তাকে তোলা হলে, বিচারক পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
জেরায় পটল জানিয়েছে, অন্য একটি মামলায় দিন কয়েক আগে সে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছে। উকিলের টাকা মেটান হয়নি। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, সে দিন ওই ডাকাতির দলে তারা পাঁচজন ছিল। ওইদিনই বিকেলে তারা পুরুলিয়া থেকে বাসে মানবাজারে আসে। বাবলুবাবুর বাড়িতে চড়াও হওয়ার আগে মানবাজার থানার ইন্দকুড়িতে ফাঁকা একটি বাড়িতে হানা দিয়েছিল। কিন্তু লোকজন জেগে ওঠায় সেখানে তারা তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি। তারা একটি টিভি সেট তুলে নিয়ে যায়। নগদ টাকা বা গয়না না মেলায়, আর একটি বাড়িতে চড়াও হওয়ার পরিকল্পনা নেয়।
কিন্তু বাবলুবাবুর বাড়িতেই কেন?
পটল জেরায় জানিয়েছে, “বাড়িটা একেবারে শহরের শেষ প্রান্তে হওয়ায় কাজ হাসিল করে পালানোর সুবিধের কথা ভেবে ওই বাড়িতে হানা দিয়েছিলাম আমরা।” জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, এই দলটির বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে আদ্রা, কাশীপুর, পুরুলিয়াতে কয়েকটি অপরাধের সঙ্গে অভিযোগ রয়েছে। ধৃত পটল ওরফে বটমের বিরুদ্ধে আড়শা থানায় একটি হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। বাকি চার দুষ্কৃতীর নাম ঠিকানা মিললেও তারা এখন এলাকায় নেই।