এখন আর মন খারাপ করে না কচিকাঁচাদের

আধুনিক সভ্যতার দাপটে একের পর এক হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ কুটির শিল্প। ওই সব কুটির শিল্পকে তুলে ধরতেই কালীপুজোকে বেছে নিল কীর্ণাহার ঐক্য সম্মিলনী। পশ্চিমপট্টির ওই পুজো এ বার তৃতীয় বর্ষের। উদ্যোক্তারা সকলেই ১৫ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে।

Advertisement

অর্ঘ্য ঘোষ

নানুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২৩
Share:

শালপাতা দিয়ে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি

আধুনিক সভ্যতার দাপটে একের পর এক হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ কুটির শিল্প। ওই সব কুটির শিল্পকে তুলে ধরতেই কালীপুজোকে বেছে নিল কীর্ণাহার ঐক্য সম্মিলনী। পশ্চিমপট্টির ওই পুজো এ বার তৃতীয় বর্ষের। উদ্যোক্তারা সকলেই ১৫ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। কেউ কলেজ পড়ুয়া, কেউ বা স্কুলে পড়ে। তাঁরাই এ বার নিজেরই হাতে তৈরি করেছেন সম্পূর্ণ শালপাতার তৈরি পুজো মণ্ডপ। এই মণ্ডপ ঘিরেই এলাকায় সাড়া পড়ে গিয়েছে। প্রতিমাতেও রয়েছে বিশেষত্ব। দেবী এখানে নিতান্তই এক গৃহবধূ।

Advertisement

ওই পুজো শুরু হওযার পিছনে একটি ইতিহাস রয়েছে। পাড়ায় দুর্গা থেকে শুরু করে কার্তিক পুজো থাকলেও ছিল না কোনও কালী পুজো। অন্য পাড়ার বাসিন্দারা যখন আতসবাজিতে দীপাবলি উৎসবে মেতে ওঠেন তখন কীর্ণাহারের ওই পশ্চিমপট্টি থাকত কার্যত ম্রিয়মান। সেই অভাব দূর করতেই শুরু হয় কালীপুজো। ওই পুজো ঘিরেই প্রতি বছরই গ্রামীণ লোকাচার তুলে ধরা হয়। এ বারও তার অন্যথা হয়নি। সম্পাদক মনোজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আধুনিক সভ্যতার দাপটে একের পর এক হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ কুটির শিল্প। এক সময় নানা অনুষ্ঠানে শালপাতাই ছিল অপরিহার্য সামগ্রী। শালপাতা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন বহু মানুষ। এই শালপাতার জায়গায় আস্তে আস্তে থার্মোকল কিংবা ফাইবারের থালা জায়গা করে নিয়েছে। এক দিন হয়তো শালপাতাটাই ইতিহাস হয়ে যাবে। আমরা তাই শালপাতাকেই তুলে ধরতে চেয়েছি।” পুজো কমিটির সভাপতি শতদ্রু সিংহের কথায়, “এক সময় আমাদের পাড়ায় কোনও কালী পুজো ছিল না। তাই আমরা শক্তির আরাধনা শুরু করি। কচিকাঁচারাও এই পুজোয় রীতিমতো উচ্ছ্বসিত।’ সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী তৃষা ভট্টাচার্য, তৃতীয় শ্রেণির সিমরন পালদের প্রতিক্রিয়া, “এক সময় আমরা অন্যের আতসবাজি জ্বালানো দেখতাম। কারণ আমাদের পাড়ায় কালী পুজো ছিল না। এখন আর মন খারাপ হয় না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন