পঞ্চায়েত নির্বাচনের এক বছরের মধ্যে পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকে একটি পঞ্চায়েতের দখল হারাল সিপিএম। মঙ্গলবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সভায় অপসারিত হলেন দেওলি পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান পদ্মলোচন গরাই। অনস্থা এনেছিল বিরোধী তৃণমূল।
এ দিন ভোটাভুটিতে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন আটজন। বিপক্ষে ভোট পড়ে সাতটি। পাড়ার বিডিও সমীরণ বারিক বলেন, “দেওলি পঞ্চায়েতে সিপিএমের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল তৃণমূল। এ দিনের সভায় সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। ফলে প্রধান অপসারিত হয়েছেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নতুন প্রধান নির্বাচন করা হবে।”
দেওলি পঞ্চায়েতের মোট ১৬টি আসন থাকলেও নির্বাচনের আগেই এক প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় নির্বাচন হয়েছিল ১৫টি আসনে। তার মধ্যে সিপিএম জিতেছিল সাতটি আসনে। তৃণমূলের দখলে গিয়েছিল পাঁচ ও কংগ্রেস পেয়েছিল তিনটি আসন। বাম বিরোধী দুই দলের মোট আসন সংখ্যা সিপিএমের চেয়ে বেশি হলেও সেই সময়ে পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে মতান্তর হওয়ায় সংখ্যা গরিষ্ঠ হিসেবে একক ভাবে বোর্ড গঠন করে সিপিএম।
নির্বাচনের কয়েকমাস পরে অবশ্য কংগ্রেসের তিন সদস্য যোগ দেন তৃণমূলে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও বিধি অনুযায়ী নির্বাচনের এক বছরের মধ্যে পঞ্চায়েতে বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে পারেনি তৃণমূল। ফলে এতদিন সিপিএমের প্রধানকে অপসারিত করতে পারেনি তৃণমূল। এক বছর পরে ২১ অগস্ট দেওলি পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূলের সদস্যেরা।
তৃণমূলের পাড়া ব্লক সভাপতি রামলাল মাহাতোর দাবি, “এলাকা উন্নয়নের কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছিল সিপিএম পরিচালিত বোর্ড। এ ছাড়া সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে আগেই দেওলি পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্যরা আমাদের দলে যোগ দিয়েছিলেন। নিয়ম মেনে এক বছর পরে আমরা অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিই।” তিনি জানান, দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত প্রধান নির্বাচন করা হবে। তবে সিপিএমের অভিযোগ, যেনতেন ভাবে পঞ্চায়েতের দখল পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই কারণেই কংগ্রেস থেকে সদস্যদের ভাঙিয়ে অনাস্থা এনে পঞ্চায়েতে অস্থিরতা তৈরি করছে তারা। আর কংগ্রেসের দাবি, দলত্যাগের আগেই তাদের ওই তিনজন সদস্যকে দলবিরোধী কাজের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।