টিএমসিপি-র আন্দোলনে থাকার জের

কাজ খোয়ালেন সিভিক ভলান্টিয়ার

সিভিক ভলান্টিয়ার্স বাহিনীর সদস্য হয়েও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে কাজ হারালেন এক যুবক। মিঠুন মাহাতো নামে পুরুলিয়ার ঝালদা থানায় কর্মরত ওই সিভিক ভলান্টিয়ার ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিক পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুরুলিয়া জেলা শাখার সম্পাদক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৪৮
Share:

মিঠুন মাহাতো।

সিভিক ভলান্টিয়ার্স বাহিনীর সদস্য হয়েও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে কাজ হারালেন এক যুবক। মিঠুন মাহাতো নামে পুরুলিয়ার ঝালদা থানায় কর্মরত ওই সিভিক ভলান্টিয়ার ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিক পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুরুলিয়া জেলা শাখার সম্পাদক। সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে ওই সংগঠন যে আন্দোলন চালিয়েছে, তাতে সামিল ছিলেন মিঠুনও।

Advertisement

গত ২ অক্টোবর থেকে তিনি যে আর সিভিক ভলান্টিয়ার্স বাহিনীর সদস্য নন, এ কথা তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২২ সেপ্টেম্বর ঝালদা অচ্ছ্রুরাম স্মৃতি কলেজের টিচার-ইন-চার্জের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁকে ঘেরাও করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ওই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এলাকারই টিএমসিপি নেতা মিঠুন। টিচার-ইন-চার্জের ঘরের দরজায় তালাও ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। মিঠুন ওই কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন একটা সময়। ঝালদার এই ছাত্রনেতা গত বছর পুজোর আগে থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে ঝালদা থানাতেই কর্মরত। গত সেপ্টেম্বরে পুরুলিয়া শহরে ‘ওয়েস্টবেঙ্গল সিভিক পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা শাখার সম্মেলনে মিঠুন মাহাতোকে সংগঠনের সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

মিঠুন বলেন, “২ অক্টোবর আমি ঝালদা থানায় কাজের বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে জানানো হয়, আমাকে কাজ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কেন এই সিদ্ধান্ত, তা জানতে চেয়ে কোনও সদুত্তরও পাইনি। শুধু বলা হয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।” কাজ হারিয়ে মিঠুন জেলা পুলিশ সুপারকে চিঠি লিখে ফের তাঁকে কাজে বহাল করার অনুরোধ করেছেন। তাঁদের সংগঠনের জেলা সভাপতি মিলন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমরা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছি কেন মিঠুনকে কাজ থেকে বরখাস্ত করা হল।” পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার বলেন, “সিভিক ভলান্টিয়াররা পুলিশের সঙ্গেই কাজ করেন। তাঁদের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় থাকা উচিত নয়। এটা শৃঙ্খলার প্রশ্ন। মিঠুন মাহাতো ঝালদায় কলেজে একটি ছাত্র সংগঠনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সে কারণেই তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে।”

Advertisement

মিঠুনের অবশ্য বক্তব্য, তাঁরা বর্তমানে আর ‘সিভিক পুলিশ’ নন। রাজ্য সরকারের নির্দেশে তাঁরা এখন ‘সিভিক ভলান্টিয়ার’। তা ছাড়া, তিনি সেদিন দলের নির্দেশেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। “দলের নির্দেশ মেনে আন্দোলনে সামিল না হলেও মুশকিল, আর সামিল হলেও মুশকিল। আমরা কী করব, জানি না।”বলছেন কাজ হারানো মিঠুন। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি নিরঞ্জন মাহাতো বলেন, “মিঠুন ওই এলাকায় আগে আমাদের সংগঠনের নেতা ছিল, এটা সত্যি। কিন্তু, এই আন্দোলনে মিঠুনকে নেতৃত্ব দিতে সংগঠনের তরফে বলা হয়নি। মিঠুন আমাকে ওই আন্দোলনে সামিল হওয়ার কিছু জানায়ওনি।” টিএমসিপি-র এক জেলা নেতার দাবি, সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ নেওয়ার পরে মিঠুনকে সংগঠন ছাড়ার ব্যাপারে সতর্কও করা হয়েছিল। মিঠুন অবশ্য সেই দাবি মানতে নারাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন