ভোটের প্রচারে।—ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ দিন রোগে ভুগে মৃত্যু হল মুরারই বিধানসভার দু’বারের সিপিএম বিধায়ক মহম্মদ কামরে ইলাহির (৫৩)। মঙ্গলবার বিকেলে চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। রেখে গেলেন স্ত্রী, বৃদ্ধা মা এবং দুই পুত্র-কন্যাকে। পেশায় চিকিত্সক কামরে ইলাহির মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া নেমেছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক রামচন্দ্র ডোম বলেন, “আমরা শোকস্তব্ধ। দলের এক একনিষ্ঠ কর্মীর পাশাপাশি আমরা এক জন দক্ষ চিকিত্সককেও হারালাম। খবর পাওয়ার পরেই ওঁর পরিবারের পাশে থাকার জন্য দলের কিছু কর্মীদের চেন্নাই পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।” দলের ওই নেতার এমন অকাল প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জেলার প্রবীণ সিপিএম নেতা ব্রজ মুখোপাধ্যায়, দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ। দল ও পরিবার সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার সুন্দরপুর গ্রামে কামরে ইলাহির জন্ম। এমবিবিএস পাশ করার পরে তিনি কর্মজীবন শুরু করেছিলেন রাজনগরের তাঁতিপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তার পরে যান মুরারই গ্রামীণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বিএমওইচ থাকাকালীন ১৯৯৪ সালে কামরে ইলাহি এলাকার ৩০টি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মুসলিম মহিলার ‘লাইগেশন অপারেশন’ করে সারা ফেলেছিলেন। জন্ম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংখ্যালঘু এলাকার মানুষ জনকে সচেতন করাকে তিনি নিজের ব্রত করেছিলেন। এলাকায় চিকিত্সক হিসেবে তাঁর সুনাম ছিল। গরিব রোগীদের তিনি বিনা পয়সায় দেখতেন। এমনকী, চিকিত্সার ব্যবস্থাও করতেন। পরে স্বেচ্ছা অবসর নিয়েছিলেন। এলাকার সুপরিচিত ওই চিকিত্সককে সিপিএম ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করেছিল। সে ভোটে তিনি মুরারই কেন্দ্রের দীর্ঘ দিনের কংগ্রেস বিধায়ক মোতাহার হোসেনকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। ২০০৬ সালেও সেই জয় অব্যাহত রেখেছিলেন। অবশ্য পরিবর্তনের হাওয়ায় ২০১১ সালে অল্প ভোটের ব্যবধানে কামরে ইলাহি তৃণমূল প্রার্থী নুরে আলম চৌধুরীর কাছে হেরে যান। গত লোকসভা ভোটে দল তাঁকে বীরভূম কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল। তৃণমূলের শতাব্দী রায়ের কাছে তাঁকে হারের মুখ দেখতে হয়।