বিক্রেতা আছেন, ক্রেতা নেই! —নিজস্ব চিত্র।
ঘটা করে গত মাসের ২৩ তারিখ রামপুরহাটে কিষাণ মাণ্ডি উদ্বোধন করা হয়ে ছিল। কৃষি বিপনন মন্ত্রী অরুপ রায় বলেছিলেন, ‘‘আজ থেকে প্রতিদিন এখানে বাজার বসবে’’। বাজার বসছে, কিন্তু ক্রেতা নেই! ফলে, কিছু বিক্রেতা নিয়মিত ফিরছেন বিক্রি না হওয়া সব্জি নিয়েই। অভিযোগ, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ফেলে দিতে হচ্ছে সব্জি।
বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, তাঁদের রামপুরহাট বাজার থেকে কাঁচা সব্জি নিয়ে আসা-যাওয়া করতে ১০০ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। আর সারাদিনের বিক্রি মাত্র ১৫০ টাকা। কেউ বলছেন, তাঁরা ডাকবাংলা ছ-ফুকোতে প্রতিদিন সাত থেকে আট হাজার টাকার বিক্রি করতেন। এখানে এসে কোনওদিন ৫০ টাকা, কোনওদিন ১০ টাকার বিক্রি করছেন। সে জন্যই তাঁরা আসা বন্ধ করেছেন কেউ। কেউ বন্ধ করার কথা ভাবছেন।
মহেন্দ্রপুর থেকে আসা গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘‘আমার প্রতিদিন বিক্রি ছিল আট হাজার টাকার মতো, এখানে কিছুই নেই।’’ একই কথা বললেন, অজয় সাহা। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় ফেরি করতাম। খবর পেয়ে ভেবেছিলাম একটা ঝাঁ চকচকে বাজারে বসতে পারব। আর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে হবে না। কিন্তু আমার সেই আশা পূর্ণ হল না।’’ কদম রসুল বড় কৃষ্ণপুর এলাকা থেকে বাজারে আসছেন। তাঁর নাম ও মোবাইল নম্বর লেখা একটা জায়গা বসে বলেন, ‘‘প্রতিদিন এখানে আসার ফলে আমাদের যে ভাবে ক্ষতি হচ্ছে তাতে আর দু’একদিন আসার পরে বন্ধ করে দিতে হবে।’’
মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওখানে ক্রেতারা যাচ্ছে না এটা ঠিকই। তবে আমরা ক্রেতাদের যাওয়ার ব্যাপারে প্রচার চালাব। আর আমরা কিছু পাইকারী বিক্রেতাকে ওখানে নিয়ে যেতে চাই। আর টিআরডিএ থেকে একটা রাস্তা করা হচ্ছে শুধুমাত্র সাইকেল চালানোর জন্য সেই রাস্তাটা হয়ে গেলে মানুষজন আসবে।’’
কী বলছেন সাধারণ ক্রেতারা? নিশ্চিন্তপুর এলাকার বাসিন্দা নিয়ামত আলি বলেন, ‘‘আমি ওখানে কেন যাব, রামপুরহাট বাজার বা হাটতলা থেকে বাজার করব। সেখান থেকেই আমার বাজার করা সুবিধা, কারণ রামপুরহাট শহরে আমার দোকান আছে।’’
ওই একই দিনে আরও একটি কিষাণ মাণ্ডি উদ্বোধন হয়েছিল, মাড়গ্রাম থানার বেনেগ্রামে। কিন্তু সেখানে আজও কোনও বিক্রেতা বসেনি। নলহাটিতে ২০১১ সালের মার্চ মাসে কবি ইকবাল বাজার নিয়ন্ত্রণ সমিতির শিলান্যাস হয়। এক কোটি টাকা মঞ্জুর হয়, সরকার পরিবর্তনের পর কাজ শুরু হয়। আজও কাজ শেষ হয়নি। নলহাটির বিধায়ক দীপক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা ভোটের আগে নিশ্চয় উদ্বোধন করবে, তবে আমি মনে করি কৃষকদের স্বার্থে এটা তাড়াতাড়ি শুরু হোক, এলাকার কৃষকেরা উপকৃত হবে।’’