কারচুপির নালিশ, নিতুড়িয়ার পঞ্চায়েতে ঘেরাও কর্মীরা

একশো দিনের কাজে শ্রমিকদের হাজিরা খাতায় সুপারভাইজর কারচুপি করেছেন, এই অভিযোগকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল নিতুড়িয়ার ভামুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে। মাস্টাররোলে শ্রমিকদের নামের পাশে স্বাক্ষরের জায়গায় ওই কর্মী নিজেই আঙুলের ছাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ তুলে সোমবার তৃণমূলের কর্মীরা পঞ্চায়েত কর্মীদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নিতুড়িয়া শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৪ ০১:০১
Share:

চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

একশো দিনের কাজে শ্রমিকদের হাজিরা খাতায় সুপারভাইজর কারচুপি করেছেন, এই অভিযোগকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল নিতুড়িয়ার ভামুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে। মাস্টাররোলে শ্রমিকদের নামের পাশে স্বাক্ষরের জায়গায় ওই কর্মী নিজেই আঙুলের ছাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ তুলে সোমবার তৃণমূলের কর্মীরা পঞ্চায়েত কর্মীদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। ওই সুপারভাইজর-সহ পঞ্চায়েতের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ লিখিত ভাবে জানানো হয় বিডিও-র কাছেও। পরে নিতুড়িয়ার যুগ্ম বিডিও অনুপ চক্রবর্তী সেখানে গিয়ে নথিপত্র আটক করেন। তিনি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দেওয়ার পরেই বিক্ষোভ ওঠে।

Advertisement

পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি আসনমনি গ্রামে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে একটি পুকুর সংস্কার করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী ওই কাজে যে সব শ্রমিকরা যুক্ত প্রকল্প এলাকায় গিয়ে মাস্টাররোলে তাঁদের স্বাক্ষর বা আঙুলের ছাপ নেওয়ার কথা সুপারভাইজরের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অন্য ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূল কর্মী সাধন মাজি, সুরজিৎ ধীবর, ললন পাণ্ডে, সঞ্জয় চক্রবর্তীদের দাবি, এ দিন দুপুরে তাঁরা পঞ্চায়েত অফিসে একটি কাজে গিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁরা দেখেন পঞ্চায়েতের দুই কর্মীর সামনে টেবিলে বসে মাস্টাররোলে আঙুলের ছাপ দিয়ে যাচ্ছেন সুপারভাইজর আশিস সোরেন। ওই তৃণমূলকর্মীদের দাবি, “আশিসবাবুকে আঙুলে কালি লাগিয়ে একটি কাগজের উপরে পর পর টিপছাপ দিতে দেখে সন্দেহ হয়। কাছে গিয়ে বুঝতে পারি আসনমনি গ্রামে একশো দিনের কাজের মাস্টাররোলে শ্রমিকদের হাজিরা নিয়ে তিনি কারচুপি করছেন। তাঁদের আটকে রেখে থানায় খবর দিই।” আশিসবাবুর বিরুদ্ধে তাঁরা কারচুপির অভিযোগ এবং ওই দুই কর্মীর বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় পরোক্ষ ভাবে যুক্ত থাকার লিখিত অভিযোগ করেন।

Advertisement

পঞ্চায়েতটি সিপিএম পরিচালিত হওয়ায় কার্যত এই ঘটনায় ঝাঁপিয়ে পড়ে তৃণমূল। পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করে তৃণমূল কর্মীরা কয়েক ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখান। এ দিনই পঞ্চায়েতে তদন্তে যান যুগ্ম বিডিও। তিনি আসনমনি গ্রামের একশো দিনের কাজের প্রকল্পের নথিটি বাজেয়াপ্ত করেন। তবে অভিযুক্ত আশিসবাবুর দাবি, “মাস্টাররোলে আমি আঙুলের ছাপ দিইনি। শ্রমিকরা যাতে দ্রুত মজুরি পান সে জন্যই কিছু প্রয়োজনীয় কাজ পঞ্চায়েতে বসে সারছিলাম।”

বস্তুত প্রশাসন সূত্রেই জানা যাচ্ছে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে দুর্নীতি রুখতে বিভিন্ন পদ্ধতি নেওয়া হলেও শ্রমিকদের কাজ না করিয়েও মাস্টাররোলে ভুয়ো শ্রমিকদের নাম ও আঙুলের ছাপ বসিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ হামেশাই পাওয়া যায়। কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গিয়েছে। নিতুড়িয়ার বিডিও শারদদ্যুতি চৌধুরী বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্তে যুগ্ম বিডিওকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁর নেতৃত্বে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন