দীর্ঘ কয়েক বছর আগে অবসর নিয়েছেন গ্রন্থাগারিক। একমাত্র কর্মীর ভরসায় কাজকর্ম চলত তিনিও ২০১৪ সাল শুরুর দিকে অবসর নেন। তার পর থেকেই কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে খয়রাশোলের বড়রা নৃসিংহস্মৃতি পাঠগার নামের সরকার পোষিত গ্রামীণ গ্রান্থাগারটি। কবে নতুন কর্মী দায়িত্ব নেবেন, কবে গ্রন্থাগার নিয়মিত খুলবে তা নিয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পাঠক, ছাত্রছাত্রী ও এলাকার বাসিন্দারা। এই বিষয়ে জেলাগ্রন্থাগারিকের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন, এলাকাবাসীর একাংশ। তবে সমস্যা মেটেনি। জেলা গ্রন্থাগারিক কৃষ্ণেন্দু প্রামাণিকের আশ্বাস, “জেলার বিভিন্ন গ্রান্থাগারে কর্মীদের বদলি ও পদন্নোতি হয়েছে। খুব শীঘ্রই ওই গ্রান্থাগারে কর্মী পাঠানো হচ্ছে।”
জানা গিয়েছে, পাঁচ বছর আগে গ্রান্থাগারিক অবসর নিয়েছেন। তাঁর পরে গত ফেব্রুয়ারি মাসে অবসর নেন জুনিয়র লাইব্রেরি অ্যাটেন্টডেন্ট বা সহায়ক প্রফুল্ল মণ্ডল। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, গ্রান্থাগারিক তো নিয়োগই হয়নি, সহায়ক অবসরের পরেও একই ছবি। তা হলে, কীভাবে চলবে গ্রন্থাগার? খয়রাশোলের অপর একটি গ্রমীণ গ্রন্থাগার কেন্দ্রগড়িয়া কল্যাণসঙ্ঘের যিনি গ্রন্থাগারিক, সেই শচীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বড়রা গ্রন্থাগারের অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি মাত্র দু’একদিনের জন্য গ্রান্থাগারে এলেও লোকজন বই পান না। তিনি শুধুমাত্র প্রশাসনিক কাজকর্মটুকু দেখেন। বর্তমানে রবিবার শুধু কয়েক ঘন্টার জন্য খোলেন গ্রান্থাগরের প্রশাসক শেখ সামিউদ্দিন। তিনি যেহেতু বড়রা উচ্চ বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষক তাই সপ্তাহের অন্য দিন সময় পান না।
গ্রন্থাগারের নিয়মিত সদস্য গৌরাঙ্গ মিত্র, পতিতপাবন মণ্ডল, শেখ মুজাফ্ফর হোসেন, বড়রা গ্রামের উপপ্রধান তথা বড়রা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাঞ্চন অধিকারী বলছেন, “৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে খয়রাশোলের বড়রা, বাবুইজোড় এবং পারশুণ্ডী এই তিনটি পঞ্চায়েত এলাকার মানুষের অত্যন্ত প্রিয় এই লাইব্রেরিটি চালানোর লোক না এলে শুধু নিয়মিত পাঠকেরা তাঁদের প্রিয় গল্প উপন্যাস বা কবিতার বই পাবেন না শুধু তাই নয়। লাইব্রেরি খোলা না থাকলে এলাকার উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীরা পাঠ্য বই ও রেফারেন্স বই পাড়ার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। কারণ, ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে নিয়মিত পড়াশোনা করতে আসেন। একই ভাবে সমস্যায় পড়বেন বিভিন্ন পদে নিয়োগ (সরকারি ও বেসরকারি) পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন যে সব তরুণ-তরুণী তাঁরাও। কারণ, ৫ হাজারের মতো বই সমৃদ্ধ ও ৪৫০ জন নিয়মিত সদস্যের ওই গ্রন্থাগার যথেষ্টই উপকারে আসে এলাকার মানুষের।”