কলেজে ভর্তি নিয়ে সংঘর্ষ, অভিযুক্ত টিএমসিপি

কলেজে ভর্তি নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে অধ্যক্ষের ঘরেই তাণ্ডব চালাল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। অধ্যক্ষের ঘর তছনছ হল, রক্তাক্ত হল ঘরের মেঝে। শনিবার সকালে রামপুরহাট কলেজে বাঁশ, লাঠি নিয়ে সংঘর্ষের জেরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট প্রেসিডেন্ট-সহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। গুরুতর জখম এক ছাত্র এবং দুই বহিরাগত। তাঁরা রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৩১
Share:

কলেজে ভর্তি নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে অধ্যক্ষের ঘরেই তাণ্ডব চালাল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। অধ্যক্ষের ঘর তছনছ হল, রক্তাক্ত হল ঘরের মেঝে। শনিবার সকালে রামপুরহাট কলেজে বাঁশ, লাঠি নিয়ে সংঘর্ষের জেরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট প্রেসিডেন্ট-সহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। গুরুতর জখম এক ছাত্র এবং দুই বহিরাগত। তাঁরা রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার। ওই দিন দ্বিতীয় বর্ষ ভর্তির জন্য লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে দু’দল ছাত্রের মধ্যে গণ্ডগোল বাধে। কলেজ সূত্রে খবর ওই দু’টি দলই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। সে দিনের গণ্ডগোলের বিষয়ে নালিশ জানাতে এক ছাত্র তাঁর পরিবারের লোক সঙ্গে নিয়ে শনিবার অধ্যক্ষের কাছে আসেন। অভিযোগ, সেই সময় বহিরাগতদের নিয়ে অন্য শিবির অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে পড়ে। লাঠি, বাঁশ নিয়ে অধ্যক্ষের ঘরে, কলেজের অফিস ও কম্পিউটার রুমে দাপিয়ে বেড়ায়। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়দেব পান বলেন, “কলেজ চত্বরে মারপিট হচ্ছে দেখে থামাতে গিয়েছিলাম। বেরিয়ে গিয়ে যখন পুলিশকে এবং কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতিকে ফোন করে পরিস্থিতি জানাতে যাই, তখন কিছু বহিরাগত লাঠি, বাঁশ নিয়ে ঘরে ঢুকে পড়ে।”

পুলিশ এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে। আটক ছাত্রদের মধ্যে একজন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট সভাপতি রিয়াজুল হক। আহতদের তরফে অবশ্য রাত অবধি পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। কলেজের অধ্যক্ষ ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন থানায়।

Advertisement

এ দিন ঘটনার পর পরই কলেজে গিয়ে দেখা যায়, অধ্যক্ষর ঘর তছনছ হয়ে রয়েছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষর ঘরে রক্তের দাগ। ভর্তি হতে আসা এক ছাত্রী কলেজের গণ্ডগোলের পরিস্থিতি দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে কলেজের অফিস ঘরের টেবিলেই শুয়ে থাকতে দেখা যায়। কর্মীদের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। ছাত্রছাত্রীরা দিশাহারা হয়ে ছড়িয়ে পড়েছেন।

এর আগেও ওই কলেজে এমন নজির রয়েছে। ২০১২-এর ১১ জানুয়ারি অধ্যক্ষর ঘরে ঢুকে দীর্ঘক্ষণ তাঁকে ঘেরাও করে ছাত্ররা। তাতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তৎকালীন অধ্যক্ষ শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনও ঘটনায় জড়িত থাকার জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নাম উঠে এসেছিল। রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি। আশিসবাবু বলেন, “পুলিশকে বলেছি, যারাই যুক্ত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।”

ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কেউ জড়িত নেই, দাবি জানিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাগর কেশরীর দাবি, “রিয়াজুলকে পুলিশ ভুল বুঝে আটক করেছে। বহিরাগতরা কলেজে ঢুকে মারধর করেছে।” রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, “দু’দল ছাত্রের মধ্যে গণ্ডগোল। এর সঙ্গে রাজনীতির সংযোগ নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন