মুখ্যমন্ত্রী সভা করবেন কলেজের মাঠে। আবার ওই দিনই কলেজে রয়েছে পরীক্ষা। তাই কলেজ থেকে কিছুটা দূরের একটি স্কুলে পরীক্ষা ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা দেওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এবং নির্ধারিত জায়গাতেই (অর্থাৎ কলেজেই) পরীক্ষার্থীদের বসানোর দাবিতে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হল এসএফআই।
কাল, শুক্রবার বেলিয়াতোড়ের যামিনী রায় কলেজের মাঠে প্রশাসনিক সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিন পার্ট-২ পাস কোর্সের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা রয়েছে। বড়জোড়া কলেজের ৭৮ জন ছাত্রছাত্রী ওই পরীক্ষা দেবেন। সভার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের নির্দেশে কলেজের বদলে কিছুটা দূরে থাকা বেলিয়াতোড় গার্লস হাইস্কুলে পরীক্ষাটি স্থানান্তরিত করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ওই স্কুল সূত্রের খবর, কলেজের পরীক্ষা চলাকালীন স্কুল বন্ধ থাকবে না। স্কুলের দোতলার দু’টি ক্লাঘর পরীক্ষার জন্য ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এফএফআইয়ের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক ধর্মেন্দ্র চক্রবর্তীর অভিযোগ, “যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা কলেজের বদলে স্কুলে হতে যাচ্ছে। ওই দিন আবার স্কুলও খোলা থাকছে। এতে পরীক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে।” বুধবার কলেজেই পরীক্ষা করানোর দাবিতে জেলাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছে ওই ছাত্র সংগঠন। বেলিয়াতোড় যামিনী রায় কলেজের টিচার-ইন-চার্জ প্রকাশ নায়েক অবশ্য বলেন, “কলেজ থেকে স্কুল হাঁটা পথে মিনিট পাঁচেকের রাস্তা। আমরা পরীক্ষার্থীদের স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থাও করেছি। তাঁদের কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।” বেলিয়াতোড় গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শীলা মাজির বক্তব্য, “আমাদের স্কুলে যে ক’টি অতিরিক্ত ক্লাসঘর রয়েছে, তার মধ্যেই দু’টি কলেজের পরীক্ষার জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে। এতে পরীক্ষার্থী বা স্কুলের ছাত্রীদের কোনও সমস্যা হবে না।”
বাঁকুড়া জেলা টিএমসিপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা যুব তৃণমূল সভাপতি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাম আমলেও বিভিন্ন সময় কলেজের পরীক্ষা স্কুলে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। ছাত্রসমাজকে নিয়ে খারাপ রাজনীতি করছে এসএফআই। ওই স্কুলে পরীক্ষা হলে পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা হবে না।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, জেলার উন্নয়নের জন্যই মুখ্যমন্ত্রী সভা করতে আসছেন। এসএফআই উন্নয়ন-বিরোধী বলেই মিথ্যা অভিযোগ করছে। কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা বাঁকুড়া সদর মহকুমাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ও বলেন, “পরীক্ষার্থীরা যাতে সমস্যায় না পড়ে, তার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ তৎপর।”