খাতড়ার গ্রামে রান্নাঘরের আগুন ছড়িয়ে দগ্ধ ১২ বাড়ি

ভয়াল আগুনে পুড়ে গেল প্রায় গোটা পাড়া। ভস্মীভূত হল খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির ১২টি বাড়ি। সর্বস্ব খোয়াল ১১টি পরিবার। বুধবার দুপুরে খাতড়া থানার চন্দনপুর গ্রামের ওই অগ্নিকাণ্ডে বাড়ির আসবাবপত্র-সহ বিভিন্ন সামগ্রী পুড়ে গেলেও কেউ হতাহত হননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খাতড়া শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৩৮
Share:

আগুন নেভাতে ব্যস্ত দমকলকর্মীরা।—নিজস্ব চিত্র।

ভয়াল আগুনে পুড়ে গেল প্রায় গোটা পাড়া। ভস্মীভূত হল খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির ১২টি বাড়ি। সর্বস্ব খোয়াল ১১টি পরিবার। বুধবার দুপুরে খাতড়া থানার চন্দনপুর গ্রামের ওই অগ্নিকাণ্ডে বাড়ির আসবাবপত্র-সহ বিভিন্ন সামগ্রী পুড়ে গেলেও কেউ হতাহত হননি। সব মিলিয়ে বেশ কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। প্রশাসনের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

খাতড়া থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে দহলা পঞ্চায়েতের ছোট্ট গ্রাম চন্দনপুর। এই গ্রামের দুলেপাড়ায় দুপুর ১টা নাগাদ প্রথম আগুন লাগে স্থানীয় অশোক দুলের খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির রান্নাঘরে। নিমেষের মধ্যে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশাপাশি একের পর এক বাড়িতে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ বাঁকুড়া থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে অবশ্য ১১টি পরিবারের ১২টি বাড়ি কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে। পুলিশ ও দমকলের অনুমান, একটি রান্নাঘর থেকে আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে এই বিপর্যয়। এ দিন বিকেলে গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, একটি পাড়া কার্যত ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে। তখনও আকাশে বাতাসে ধোঁয়ার তীব্র গন্ধ। অধিকাংশ বাড়ির ছাউনি পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দমকল কর্মীরা অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে জল ছড়িয়ে আগুন নেভানোর কাজ করছেন। পোড়া বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে স্থানীয় সনকা দুলে বললেন, “তখন দমকা হাওয়া বইছিল। দেখি পাশের ঘরে আগুন ধরেছে। সেই আগুন আমাদের বাড়িতেও লাগে। মুহূর্তের মধ্যে পুড়ে ছাই হয়ে গেল গোটা বাড়িটা।”

ওই পাড়ারই মমতা মণ্ডলের কথায়, “চোখের সামনে একের পর এক বাড়িতে আগুন লাগতে দেখি। এ ভাবেই পরপর কয়েকটি বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দাবানলের চেহারা নেয়। গ্রামের সবাই আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগালেও কোনও লাভ হয়নি। চোখের সামনেই ওদের সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়।” পোড়া বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে এ দিন বিকেলে জবরী দুলে, সুবল দুলে, ভুবন দুলে, চন্দ্রধর দুলে বললেন, “পরনের কাপড়টুকু বাদে সব কিছুই পুড়ে গিয়েছে। আমরা এখন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছি। প্রশাসন আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের ব্যবস্থা করুক।” খবর পেয়ে ওই গ্রামে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজে তদারকি করেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্যামল সরকার, খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মৃত্যুঞ্জয় রায়। মৃত্যুঞ্জয়বাবু বলেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের অবিলম্বে সাহায্য করার জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছি।” খাতড়ার ভারপ্রাপ্ত বিডিও দীপক মাইতি বলেন, “খবর পেয়ে ওই গ্রামে ব্লকের এক আধিকারিককে পাঠানো হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আপাতত ত্রাণসামগ্রী ও কিছু ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাঁরা পরে ক্ষতিপূরণ পাবেন। তবে কিছুটা সময় লাগবে।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন