মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাদের লেখা চিঠি পৌঁছেছে কি না, এখনও জানা নেই কৃষ্ণধন ভল্লা, মিতালি বায়েনদের। কিন্তু, বুধবার আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘দিদির কাছে চিঠি পাঠানোর’ খবর প্রকাশিত হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই বিদ্যুৎ পৌঁছে গেল মিতালিদের স্কুল গিধিলা মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে। পড়ুয়া রাজীব ভল্লা, লক্ষ্মী হাঁসদাদের প্রতিক্রিয়া, “গরমে খুব কষ্ট পেয়েছি। আর আমাদের সেই সমস্যা নেই।”
২০০৬ সালে তৈরি হয়েছিল বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের এই স্কুলটি। স্কুলের ১০০ ফুট দূরেই বিদ্যুতের খুঁটি বসেছিল। আর্থিক সঙ্গতি তেমন না থাকায় প্রথম দিকে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করতে পারেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, পড়ুয়াদের কষ্ট দেখে স্কুলের ক্লাসঘরগুলিতে আলো-হাওয়ার ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন বর্তমান স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ২০১৩ সালের এপ্রিলে সংশ্লিষ্ট দফতরে টাকা জমা দিয়ে আবেদন করা হয়। বছর ঘুরলেও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি স্কুলে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ কার্যত আশা ছেড়ে দিলেও হাল ছাড়েনি পড়ুয়ারা। নিজেদের দুর্দশার কথা জানিয়ে এ বছর ৩১ মার্চ ‘শ্রদ্ধেয় দিদি’কে (মুখ্যমন্ত্রী) ডাকযোগে চিঠি পাঠায় বারো জন পড়ুয়া।
বুধবার এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে বিদ্যুৎ দফতর। এ দিনই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিনটি খুঁটি বসিয়ে তার টেনে স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে নিজেদের স্কুলে আলো-পাখা চালু হওয়া দেখতে ছুটির পরেও শিক্ষক, অভিভাবকদের সঙ্গে থেকে গিয়েছিল অধিকাংশ পড়ুয়া। অভিভাবক খুদিরাম দাস, রাজকুমার দাসদের কথায়, “সংবাদমাধ্যমের দৌলতেই প্রশাসন এই তৎপরতা দেখাল। আমাদের ছেলেমেয়েরা এ বার একটু আরামে ক্লাস করতে পারবে।”
প্রধান শিক্ষক কৃপাময় দাস বলেন, “প্রত্যন্ত স্কুলটির কথা মাথায় রেখে যে বা যারা বিদ্যুৎ দফতরকে সক্রিয় করেছে, তাদের নিছক ধন্যবাদ জানিয়ে খাটো করতে চাই না।” রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ময়ূরেশ্বর গ্রুপ ইলেকট্রিক সাপ্লাইয়ের স্টেশন ম্যানেজার গঙ্গাধর মালি অবশ্য বলেন, “ঠিকাদারকে যথা সময়ে ওই স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে এত দিন সংযোগের ব্যবস্থা করা যাইনি।”