পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ

ছাত্রাবাসের কাছে পালুইয়ে আগুন

রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের ছাত্রাবাসের কাছে ডেয়ারির খড়ের পালুই আগুন পুড়ে গেল। বৃহস্পতিবার ভোরের ঘটনা। তবে সময়মতো আগুন নজরে আসায় এবং দমকল পৌঁছে যাওয়ায় খড়ের তিনটি বড় পালুই পুরোপুরি পুড়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে বিদ্যাপীঠ সূত্রে জানানো হয়েছে। বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক স্বামী শক্তিপ্রদানন্দ বলেন, “সারদা সদনের আবাসিক ছাত্রেরাই ভোরবেলায় এই আগুন প্রথম দেখতে পায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৭
Share:

ভোর সাড়ে ৪টেতে দাউদাউ আগুন জ্বলে ওঠে। দমকল কর্মীদের তৎপরতায় ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আগুন আয়ত্তে আসে।—নিজস্ব চিত্র।

রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের ছাত্রাবাসের কাছে ডেয়ারির খড়ের পালুই আগুন পুড়ে গেল। বৃহস্পতিবার ভোরের ঘটনা। তবে সময়মতো আগুন নজরে আসায় এবং দমকল পৌঁছে যাওয়ায় খড়ের তিনটি বড় পালুই পুরোপুরি পুড়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে বিদ্যাপীঠ সূত্রে জানানো হয়েছে। বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক স্বামী শক্তিপ্রদানন্দ বলেন, “সারদা সদনের আবাসিক ছাত্রেরাই ভোরবেলায় এই আগুন প্রথম দেখতে পায়। কিন্তু আগুন কী ভাবে লাগল তা বোঝা যাচ্ছে না।” দমকলের কর্মীরাও ঠাওর করে উঠতে পারেননি আগুন লাগার কারণ।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া শহরের উপকন্ঠে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের চত্বরের মধ্যেই বিদ্যাপীঠের নিজস্ব ডেয়ারি রয়েছে। এই ডেয়ারিতে শতাধিক গরু রয়েছে। মূলত বিদ্যাপীঠের আবাসিক পড়ুয়াদের দুধ সরবরাহের জন্য ডেয়ারি চালু রয়েছে। গরুর খাবারের জন্য বর্ধমান থেকে ২০০ ক্যুইন্টালের বেশি পরিমাণ খড় বিদ্যাপীঠে আনা হয়েছিল। গত বছর বৃষ্টি ভাল না হওয়ায় পুরুলিয়ায় ভাল চাষ হয়নি। সে কারণেই এ বার বর্ধমান থেকে খড় নিয়ে আসা হয়। ডেয়ারির এক কর্মী জানিয়েছেন, সমস্ত খড় তিনটি পালুই করে রাখা হয়েছিল। এ দিন আগুন নজরে আসে ভোরবেলায়। ডেয়ারির দায়িত্বে থাকা স্বামী জীবসেবানন্দ বলেন, “ভোরবেলায় খবর পাই যে ডেয়ারির খড়ের পালুইয়ে আগুন লেগেছে। পালুইয়ের কাছেই ছাত্রাবাস। গিয়ে দেখি দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। সঙ্গে সঙ্গে নেভানোর কাজ শুরু হয়।’’

এই খড়ের পালুইগুলির কাছেই সারদা সদন ছাত্রাবাস রয়েছে। সেখানে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়ারা থাকে। ওই আগুনে ছাত্রদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায়। এই ভবনের আবাসিক সঞ্জয় আদক বলে, “এ দিন ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ আমার এক বন্ধু ঘুম থেকে উঠেছিল। সেই দেখতে পায় যে খড়ের পালুই দাউ দাউ করে জ্বলছে। তার চিৎকার চেঁচামেচিতে আমাদেরও ঘুম ভেঙে যায়। এ রকম আগুন কখনও চোখে দেখিনি।” আর এক পড়ুয়া দীপপ্রকাশ সরকারের কথায়, “উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। তাই ভোরবেলায় পড়ার জন্য একজন ঘুম থেকে উঠে এই আগুন দেখতে পায়। সেই চিৎকার করে সবাইকে জানায়। তারপর নিরাপত্তারক্ষীদের মারফৎ দমকলে খবর দেওয়া হয়।” খবর পেয়ে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন বিদ্যাপীঠে পৌঁছয়। খবর পেয়ে পুলিশও আসে। ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আসে। আবাসিকরা জানিয়েছে, যেখানে আগুন লেগেছিল তার থেকে বিদ্যাপীঠের গোবর গ্যাসের প্ল্যান্টটি খুব দূরে নয়। তাই সেখানে আগুন পৌঁছলে বিস্ফোরণের আশঙ্কা ছিল। ছাত্রদের একাংশের কথায়, “আগুনের লেলিহান শিখা দেখে ভয় হচ্ছিল। জোরে হাওয়া দিলে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারত।”

Advertisement

এ দিন সকালে বিদ্যাপীঠে গিয়ে দেখা যায়, পুড়ে যাওয়া খড়ের পালুই থেকে তখনও ধোঁয়া বেরোচ্ছে। পুড়ে যাওয়া খড়ের স্তূপের নীচে আগুন থাকার আশঙ্কায় দমকল কর্মীরা মাটি খোঁড়ার যন্ত্রের সাহায্যে খড়ের স্তূপ সরাচ্ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন