জোগান নেই রেশন কার্ডের জেলায় ক্ষোভ

নতুন রেশন কার্ডের জোগান না থাকায়, জেলা জুড়ে এপিএল পরিবার ভুক্ত মানুষ সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। শুধু ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে নয়, নতুন কার্ডের অভাবে বেকার যুবক-যুবতীরা এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিসে নাম নথিভুক্ত করতেও পারছেন না। মিলছে না রেশনও। ঘটনা হল, নতুন কার্ডের জন্য ওই সমস্ত পরিবার গুলিকে দীর্ঘ দিন থকে ব্লক অফিসে বার বার গিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে। জেলা জুড়ে এই সমস্যায় বেকায়দায় পড়েছেন জেলা খাদ্য সরবরাহ দফতরের কর্মীরাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:১৮
Share:

নতুন রেশন কার্ডের জোগান না থাকায়, জেলা জুড়ে এপিএল পরিবার ভুক্ত মানুষ সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। শুধু ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে নয়, নতুন কার্ডের অভাবে বেকার যুবক-যুবতীরা এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিসে নাম নথিভুক্ত করতেও পারছেন না। মিলছে না রেশনও।

Advertisement

ঘটনা হল, নতুন কার্ডের জন্য ওই সমস্ত পরিবার গুলিকে দীর্ঘ দিন থকে ব্লক অফিসে বার বার গিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে। জেলা জুড়ে এই সমস্যায় বেকায়দায় পড়েছেন জেলা খাদ্য সরবরাহ দফতরের কর্মীরাও। পরিস্থিতি এমনই, দফতরের ব্লক পরিদর্শক থেকে মহকুমা নিয়ামক এবং জেলা নিয়ামকরাও এ ব্যপারে চাপের মুখে পড়েছেন। এতে, জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকেই খাদ্য সরবরাহ দফতর নতুন রেশন কার্ডের জন্য এখন আর নতুন কোনও আবেদন পত্র জমা নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েও দিয়েছেন। খাদ্য সরবরাহ দফতরের জেলা নিয়ামক পৃথা সাহা রায় বলেন, “নতুন রেশন কার্ড তৈরির জন্য প্রায় আড়াই মাস ধরে কার্ডের যোগান নেই। উপরমহলে জানিয়েও কোনও ফল মিলছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষর কাছ থেকেও কার্ড পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন রেশন কার্ড করা বন্ধ আছে।” তাঁর দাবি, এ ব্যপারে জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে একাধিক বার বলা হয়েছে। শীর্ষ মহলে একাধিক বার লিখিত ভাবে জানানও হয়েছে।

জেলা খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রের হিসাব অনুযায়ি, এই মহূর্তে জেলার ১৯টি ব্লকে গড়ে প্রায় আট হাজার নতুন রেশন কার্ড প্রয়োজন। এছাড়াও যাঁদের রেশন কার্ড হারিয়ে গিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা আগুনে পুড়ে গিয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে নকল রেশন কার্ড তৈরির প্রয়োজন। সেই কার্ড তৈরির মতো সাদা ছাপানো কার্ডের যোগান না থাকার জন্য ‘নকল’ কার্ড তৈরির কাজও বন্ধ। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন রেশন কার্ডের জন্য সম্প্রতি প্রায় দেড় লক্ষাধিক সাদা ছাপানো রেশন কার্ড যোগানের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ডিজিট্যাল রেশন কার্ড হবে, বলেই পুরনো কার্ড নিয়ে এখন দেরি হচ্ছে। কিন্তু ডিজিট্যাল হোক বা ম্যানুয়াল, নতুন রেশন কার্ডের অভাবে এলাকায় মানুষ সমস্যায় পড়ছেন বলে জানিয়েছেন মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের আলি রেজা। তিনি বলেন, “মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী ২ লক্ষ ২২ হাজার লোকের বাস। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ বাসিন্দাকে রেশন কার্ড দেওয়া হয়েছে। এখনও প্রায় বাইশ হাজার বাসিন্দা রেশন কার্ড দিতে হবে।” আলি রেজা জানান, এর মধ্যে আদিবাসী পরিবারও আছে যারা দীর্ঘদিন থেকে ব্লক অফিসে এসে রেশন কার্ডের জন্য ঘুরে ঘুরে যাচ্ছে। জেলাশাসক এবং সভাধিপতি সম্প্রতি পঞ্চায়েত সমিতিতে এসেছিলেন তাঁদের কাছে নতুন রেশন কার্ড ব্যপারে জানান হয়েছে।

মুরারইয়ের লতাগ্রামের বাসিন্দা প্রণবকুমার মণ্ডল, দাঁতুড়া গ্রামের হুমায়ুন কবীর, কাশিমনগর গ্রামের এমতাজ শেখরা বলেন, “রেশন কার্ডের অভাবে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছি না। কেরোসিন তেল পাচ্ছি না। নতুন কার্ডের জন্য ছ’মাস ধরে ব্লকে ঘুরছি। কিন্তু আজ-কাল করে কবে যে পাব বুঝতে পারছি না!”

জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, “সাদা রেশন কার্ড যোগানের অভাবে নতুন রেশন কার্ড তৈরির কাজ বন্ধ আছে। সেটা কর্তৃপক্ষকে জানান হয়েছে। তবে যতদূর জানি, ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। সেই জন্য হয়ত সাদা ছাপানো কার্ড আসছে না। তবুও রেশন কার্ডের প্রয়োজনীয়তার কথা শীর্ষ কর্তৃপক্ষ কে জানান হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন