জন্মের শংসাপত্র দেখিয়ে বিয়ে বন্ধ

সরকারি কর্তারা কনে দেখে বলেছিলেন, এর তো বিয়ের বয়েসই হয়নি। এ যে নাবালিকা। মানতে চাননি কনের বাবা। শেষে স্কুলে গিয়ে মেয়ের জন্মের শংসাপত্র দেখে প্রশাসনের আধিকারিকদের কথাই তাঁকে মানতে হল। শুক্রবার বিয়ের দিনেই আটকে গেল অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বিয়ে। পুরুলিয়ার জয়পুর থানা এলাকার একটি গ্রামের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জয়পুর শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৪ ০০:৪৯
Share:

সরকারি কর্তারা কনে দেখে বলেছিলেন, এর তো বিয়ের বয়েসই হয়নি। এ যে নাবালিকা। মানতে চাননি কনের বাবা। শেষে স্কুলে গিয়ে মেয়ের জন্মের শংসাপত্র দেখে প্রশাসনের আধিকারিকদের কথাই তাঁকে মানতে হল। শুক্রবার বিয়ের দিনেই আটকে গেল অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বিয়ে। পুরুলিয়ার জয়পুর থানা এলাকার একটি গ্রামের ঘটনা।

Advertisement

জয়পুরের বিডিও মেঘনা পাল বলেন, “এক নাবালিকার এ দিন বিয়ে হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর আসে। স্কুলে জন্ম তারিখ অনুসারে এখন তার বয়েস মোটে ১৬ বছর সাত মাস। ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেওয়া বেআইনি ও স্বাস্থ্য সম্মত নয় বলে বোঝানোর পরে মেয়েটির বাবা বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হন। তিনি আমাদের লিখিত ভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাঁর মেয়ে ১৮ বছর পার করলে তবেই তিনি বিয়ে দেবেন।”

বিয়ের তোড়জোড় প্রায় পাকা। পাত্র ঝাড়খণ্ডের। রাতে বিয়ের অনুষ্ঠান। সকাল থেকেই বাড়িতে আত্মীয়দের আনাগোনা চলছিল। হঠাৎ দুপুরে সেই গ্রামে বিয়ে বাড়িতে পুলিশ নিয়ে হাজির হন জয়পুরের যুগ্ম বিডিও শিবাজী বসু। তাঁরা মেয়ের বাবাকে এখন বিয়ে না দেওয়ার জন্য বোঝান। স্থানীয় সূত্রের খবর, মেয়ের বিয়ের বয়েস হয়েছে বলে তার পরিবার প্রথমে আধিকারিকদের কাছে দাবি করেন। শেষে স্থানীয় বড়াম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেয়ের জন্মের শংসাপত্র আনতে পাঠানো হয়। মেয়ের পরিবারের লোকজন স্কুলে গিয়ে মেয়ের জন্মতারিখ দেখে আসেন। তখনই জানা যায় মেয়েটির বয়স এখনও ১৮ হয়নি।

Advertisement

বড়াম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস দেশমুখ বলেন, “এ দিন আমি স্কুলের কাজে পুরুলিয়া সদরে গিয়েছিলাম। তবে স্কুল থেকে খবর পাই, এক ছাত্রীর বিয়ের বয়েস হয়েছে কি না তা জানতে তার বাবা স্কুলে এসেছিলেন। তাঁকে ছাত্রীটির জন্মের তারিখ দেখানো হয়েছে। অষ্টম শ্রেণীর ওই ছাত্রীর এখনও ১৮ বছর বয়েস হয়নি।”

এ দিন ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি-র পুরুলিয়া জেলা শাখায় প্রথম ওই বিয়ের খবর আসে। সংগঠনের জেলা সম্পাদক মধুসূদন মাহাতো বলেন, “স্থানীয় সূত্রে নাবালিকার বিয়ের খবরটা পেয়ে বিডিওকে জানাই। তাঁকে অনুরোধ করি, সকাল সকালই বিয়েটা রুখতে হবে। অভিজ্ঞতায় দেখেছি এই ধরনের ক্ষেত্রে দেরি হয়ে গেল জটিলতা বাড়ে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন