যান্ত্রিক গোলযোগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বড়জোড়ায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ। এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকায়। তাঁদের দাবি, প্রায় সাতদিন ধরে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে রয়েছে গোটা বড়জোড়া এলাকায়। এ বিষয়ে আগাম কোনও ঘোষণাও করা হয়নি। যদিও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তরফে বলা হচ্ছে, তিনদিন ধরে বড়জোড়ার কিছু অংশে জল দেওয়া যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র সৌমিত্র প্রধান বলেন, “জল পরিশ্রুত করার দ্বিতীয় রিজার্ভারের পাম্প পুড়ে গিয়েই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তাই তিনদিন ধরে বড়জোড়ার কয়েকটি এলাকায় জল সরবরাহ করা যাচ্ছে না।”
ওই আধিকারিক যাই দাবি করুক, জল সরবরাহ বন্ধ থাকার অভিযোগ মিলছে গোটা এলাকা জুড়েই। বড়জোড়ার চট্টোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায় পাড়া, থানাগড়া, উড়ানপাড়া-সহ অন্য এলাকাতেও জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। বড়জোড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য গোপাল দে বলেন, “সাত দিন হল এলাকার কোথাও জল দেওয়া হচ্ছে না। চরম দুর্ভোগে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।” এলাকার বাসিন্দা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাড়ির কুয়ো, পাড়ার পুকুরের জলও শুকিয়ে গিয়েছে। এলাকায় যে কয়েকটি নলকূপ রয়েছে সেগুলিও বিকল। অন্যপাড়ার কুয়োই এখন আমাদের ভরসা। গোটা এলাকার লোকজন সেখান থেকে বালতি-কলসি নিয়ে জল ভরতে যাচ্ছেন।”
মুখোপাধ্যায় পাড়ার বাসিন্দা অসীম চন্দ বলেন, “বাড়ি থেকে অর্ধেক কিলোমিটার দূরে একটি নলকূপ রয়েছে। সাইকেলে বালতি, ড্রাম নিয়ে জল আনতে যেতে হয়। কিন্তু ওই নলকূপে জল নেওয়ার জন্য দিনভর বিশাল লাইন পড়ে। ঘণ্টা খানেক অপেক্ষার পরে জল পাই।” একই ক্ষোভ ঝরে পড়ছে উড়ানপাড়ার বরেন বাউরি, ঝুমা চন্দের কথাতেও। উল্লেখ্য, বাম আমলে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের উদ্যোগে দামোদর নদ থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বড়জোড়ায় জল সরবরাহ করা শুরু হয়। দিনে দু’বার করে জল দেওয়া হয়। এলাকার অধিকাংশ মানুষই এই জলের উপর নির্ভরশীল। জলস্তর কমে যাওয়াতে গত বছর গ্রীষ্মে প্রবল জলকষ্টের মধ্যে পড়ে বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের মানুষ। তবে গত বর্ষায় জেলায় বৃষ্টিপাতের হার ছিল কম। তাই শীত শেষের মুখেই এলাকার বেশিরভাগ কুয়ো, পুকুর প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে। তাই গ্রীষ্ম শুরুর আগেই এই সমস্যায় জলের জন্য হাহাকার পড়ে গিয়েছে। বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কাজল পোড়েল বলেন, “সাতদিন হল জল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে গোটা বড়জোড়া জুড়েই। কেন এখনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাছে আমি তা জানতে চেয়েছি।” সৌমিত্রবাবু অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, খারাপ হওয়া যন্ত্রাংশের মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত জল সরবরাহ শুরু হবে।