টাকা পাচ্ছেন না মালিকেরা, নিশ্চয় যান নিয়ে অনিশ্চয়তা

শর্ত অনুযায়ী জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে ১৫ দিন অন্তর মালিকদের প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু গত জানুয়ারি মাস থেকে কোনও টাকাই পাচ্ছেন না ‘নিশ্চয় যান’ প্রকল্পের গাড়ি মালিকেরা। এই অবস্থায় গাড়িগুলি আর চালানো সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মালিকেরা। স্বাভাবিক ভাবে নিশ্চয় যান প্রকল্প নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে জেলায়।

Advertisement

অরুণ মুখোপাধ্যায়

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৪ ০০:৩০
Share:

শর্ত অনুযায়ী জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে ১৫ দিন অন্তর মালিকদের প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু গত জানুয়ারি মাস থেকে কোনও টাকাই পাচ্ছেন না ‘নিশ্চয় যান’ প্রকল্পের গাড়ি মালিকেরা। এই অবস্থায় গাড়িগুলি আর চালানো সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মালিকেরা। স্বাভাবিক ভাবে নিশ্চয় যান প্রকল্প নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে জেলায়।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় এই প্রকল্প ২০১২ সালের ১ এপ্রিল থেকে এই জেলায় চালু হয়েছে। উদ্দেশ্য প্রসূতি ও এক বছর বয়স পর্যন্ত অসুস্থ শিশুদের বাড়ি থেকে নিয়ে এসে নিকটতম স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে ভর্তি করা এবং পরবর্তীকালে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া। শিশু জন্মের ৪২ দিন পর্যন্ত শিশু ও মাকে যতবার প্রয়োজন হবে ততবার বাড়ি থেকে হাসপাতাল ও হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া এবং প্রয়োজন হলে আরও উন্নত সরকারি হাসপাতালে মা ও শিশুদের নিয়ে যাওয়া যাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। তাও নিখরচায়। ৪২ দিন পর এক বছর বসয়ী শিশুরা অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া আসার ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের সুবিধা মিলবে। সেটা এক বছর পর্যন্ত। তবে এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও আর্থিক প্রতিবন্ধকতা নেই।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে জেলায় ১০৯টি অ্যাম্বুল্যান্স বরাদ্দ হয়। ওই অ্যাম্বুল্যান্সগুলি ১৯টি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং দু’টি মহকুমা এবং একটি সদর হাসপাতালে ব্যবহার করা হচ্ছে। নিশ্চয় যান প্রকল্পের মালিক সংগঠনের জেলা সভাপতি কাঞ্চন মণ্ডলের বক্তব্য, “এই প্রকল্পে যখন অ্যাম্বুল্যান্সগুলি চালু হয় তখন শর্ত ছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে ১৫ দিন অন্তর মালিকদের প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু গত জানুয়ারি মাস থেকে এই মাস পর্যন্ত কোনও টাকাই মালিকেরা পাননি। এই ব্যাপারে সোমবার জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক কার্তিক মণ্ডলের কাছে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে টাকার ব্যবস্থা না করলে নিশ্চয় যান প্রকল্পের অ্যাম্বুল্যান্স চালানো সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

অ্যাম্বুল্যান্স মালিকদের এই সিদ্ধান্তে কপালে ভাঁজ পড়েছে সিউড়ি সদর হাসপাতালের সুপার অসিত বিশ্বাসের। তিনি মঙ্গলবার মালিক সমিতিকে ডেকে অনুরোধ করেছেন, অ্যাম্বুল্যান্সগুলি যেন তুলে না নেওয়া হয়। তা হলে বহু গরিব পরিবারগুলি সমস্যায় পড়বে। গরিব পরিবারগুলি যে সমস্যায় পড়বে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন মালিক সমিতির সভাপতি কাঞ্চনবাবুও। তবে তিনি বলেন, “কত দিন আর টাকা ফেলে রাখা যায়? পেট্রোল পাম্পে প্রচুর দেনা হয়েছে। গাড়ি চালকদের বেতন দিতে অসুবিধে হচ্ছে। আমরাও অসহায়।” তাঁর দাবি, দীর্ঘদিন টাকা না পাওয়ার কথা জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে মৌখিক ভাবে বহুবার জানানো হয়েছে। কোনও কাজ হইনি। মানবিকতার কারণে বহু মালিক গয়না থেকে শুরু করে জমি পর্যন্ত বন্দক রেখে টাকা জোগাড় করে তেল কিনেছেন এবং চালকদের বেতন মেটাচ্ছেন। জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক কার্তিক মণ্ডল বলেন, “নিশ্চয় যান প্রকল্পের মালিক সমিতির পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন টাকা পাচ্ছেন বলে আমাকে লিখিত জানিয়েছেন। আমি সেই আবেদনপত্র রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছি। আসা করছি সমস্যা খুব শীঘ্রই মিটে যাবে।”

এখনও টিকে

• সিউড়ি সদর হাসপাতালে ১৪টি।

• রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে ১৬টির মধ্যে ৮টি।

• বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ২০টির মধ্যে ১৩টি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন