তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে বাঁকুড়ায় আহত ১২ জন

গ্রামের আটচালায় বসে গল্প করছিলেন দুই বিজেপি কর্মী। টাঙ্গি, কাটারি, লাঠি নিয়ে তাঁদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বাধা দিতে গিয়ে বিজেপি-র আরও কয়েক জন আহত হওয়ায় আগুনে ঘি পড়ল। ওই ঘটনাকে ঘিরে শনিবার সকালে বাঁকুড়া সদর থানার মন্যাডি গ্রামে তৃণমূল ও বিজেপি-র মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত হলেন দু’পক্ষের ১২ জন। গ্রামে দু’পক্ষের ক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৪ ০১:৪০
Share:

জখম বিজেপি কর্মী কার্তিক মণ্ডল।

গ্রামের আটচালায় বসে গল্প করছিলেন দুই বিজেপি কর্মী। টাঙ্গি, কাটারি, লাঠি নিয়ে তাঁদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বাধা দিতে গিয়ে বিজেপি-র আরও কয়েক জন আহত হওয়ায় আগুনে ঘি পড়ল। ওই ঘটনাকে ঘিরে শনিবার সকালে বাঁকুড়া সদর থানার মন্যাডি গ্রামে তৃণমূল ও বিজেপি-র মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত হলেন দু’পক্ষের ১২ জন। গ্রামে দু’পক্ষের ক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ।

Advertisement

এ দিনই বীরভূমের ইলামবাজারে ও শুক্রবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় ৩ বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “হামলার মোকাবিলা করব আইনি পথেই। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে জানিয়েছি।”

লোকসভা ভোটের পরেই বাঁকুড়ার মন্যাডি গ্রামে কিছু বিক্ষুব্ধ তৃণমূল ও সিপিএম কর্মী বিজেপি-তে যোগ দেন। বিজেপি তার পর থেকে নানা সময়ে এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছোটখাটো হামলার অভিযোগ তুলেছে। থানায় স্মারকলিপিও দিয়েছে। কিন্তু এ দিনের ঘটনা অন্য মাত্রা নেয়।

Advertisement

আহত তৃণমূল কর্মী মথুর গড়াই।

স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন আটচালায় বিজেপি কর্মী কার্তিক মণ্ডল ও রামকৃষ্ণ মণ্ডল গল্প করছিলেন। অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের উপরে হামলা করেন। বাঁচাতে গিয়ে আহত হন বিজেপি কর্মী সুনীল মণ্ডল, তাপস মণ্ডল, ভৈরব গড়াই, জয়দেব গড়াই ও ঈশ্বর গড়াই। ৭ জনকেই বাঁকুড়া মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাপসবাবুর দাবি, “দলের লোকেদের তৃণমূলের ছেলেরা কোপাচ্ছে দেখে বাধা দিতে যেতে এক জন আমার হাতে কাটারিমারে।”

পুলিশ সূত্রে খবর, লোক জড়ো হতে হামলাকারীরা এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে ঢোকে। বিজেপি বাড়িটি ঘিরে ফেলে পাল্টা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। পুলিশ ওই বাড়ির ভিতর থেকে তৃণমূল কর্মী রাধেশ্যাম গড়াই, মথুর গড়াই, মহাদেব গড়াই, বাউড়িদাস গড়াই ও শিবদাস মণ্ডলকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। আটক করা হয় ছ’জনকে। বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকারের দাবি, “তৃণমূল হামলা করল। পুলিশ আমাদের আহত কর্মীদের বাড়ির লোকেদেরই আটক করল!” তবে জেলার ডিএসপি (আইন ও শৃঙ্খলা) বাপ্পাদিত্য ঘোষের দাবি, “জেরার জন্যই আটক করা হয়েছে।” বিকেলে বাঁকুড়া থানায় তৃণমূলের ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান সুভাষবাবু।

বাঁকুড়া ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি ধবল মণ্ডলের দাবি, “বিজেপি-তে যাওয়া সিপিএমের কয়েক জন আমাদের কর্মীদের মেরেছে। নিজেরা হাত-পা কেটে মিথ্যা অভিযোগ করছে।” বিজেপি নেতা সুভাষবাবুর দাবি, “তৃণমূলের লোকেরাই নিজেদের হাত-পা কেটেছে।”

সকালে ইলামবাজারের ঘুড়িষায় বিজেপি সমর্থক মুস্তফা মণ্ডল এবং শুক্রবার ডেবরায় সদ্য সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে আসা দুই ভাই বিমল সামন্ত ও লক্ষ্মণ সামন্তকে মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল। তিন জনই চিকিত্‌সাধীন। কোনও ক্ষেত্রেই অবশ্য তৃণমূল হামলার অভিযোগ মানেনি।

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন