কোনও রাজনৈতিক প্রতীকে লড়াই না হলেও বিশ্বভারতী কর্মিসভার নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় গণ্ডগোল হতে পারে এই আশঙ্কায় আশ্রমে শনিবার নামাতে হয় পুলিশ ও র্যাফ। শেষমেষ নির্বাচনে জয়ী হয় দেবব্রত হাজারি ওরফে তরুগোষ্ঠী। জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত সরকার ওরফে গগনের গোষ্ঠীকে হারিয়ে শেষ হাসি হাসলেন তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরা। কারণ, তাঁর সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন তরুবাবু।
তবে তরুবাবু এলাকার কংগ্রেসের নেতাকর্মী হিসেবে পরিচিত আশিস ঠাকুর ও কালীশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থন নিয়ে গগনের গোষ্ঠীকে হারানোয় প্রশ্ন উঠেছে। একে অনেকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, তরুবাবু ২০১২ সালের আগে পর্যন্ত তৃণমূলের বিরোধী গোষ্ঠীর হয়ে লড়তেন। ২০১২ সালের ২৪ ডিসেম্বর তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। ওই বছর কর্মিসভার নির্বাচনে তিনি হেরে গেলেও এ বার অনুপম হাজরা ও কংগ্রেস নেতাকর্মীকে পাশে নিয়ে তিনি লড়ে জয়ী হন। এই নির্বাচনকে ঘিরে গগন গোষ্ঠীর মধ্যে ইতিমধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি গগনবাবু। তরুবাবু অবশ্য বলেন, “একই দল করলেও বিশ্বভারতীর কর্মিসভা নির্বাচন নীতির লড়াই। এতে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। নীতির লড়াইয়ে বিশ্বভারতীর সাধারণ কর্মীদের জয় হয়েছে। আমি খুশি।”
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে পর্যন্ত কর্মিসভার নির্বাচন হত এক বছর অন্তর। ওই সময় গগনবাবু বেশ কয়েক বার ভোটে জয়ী হয়েছেন। ২০১০ সাল থেকে দু’বছর অন্তর কর্মিসভার নির্বাচন হয়ে আসছে। তাতেও গগনগোষ্ঠী দু’বার জয়ী হয়েছে। এ বারের নির্বাচনে গগন ও তরু গোষ্ঠী ছাড়া অন্য কোনও গোষ্ঠী ভোটে লড়েনি। শনিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোট হয়েছে। মোট ভোটার ছিল ৯৩৯। প্রায় ৯০ শতাংশ ভোট পড়েছে। বিকেল তিনটে থেকে গণনা শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ফলাফল ঘোষণা হয়। দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৮০ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছে তরু গোষ্ঠী। ওই গোষ্ঠীর তরুবাবু হয়েছেন বিশ্বভারতী কর্মিসভার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন কালীশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় ও সহসম্পাদক হয়েছেন আশিস ঠাকুর।