দুপুরে কেন শুধুই খিচুড়ি, শিক্ষকদের আটকে বিক্ষোভ

স্কুলের পাঁচিল তৈরির টাকা দু’বছর আগে এসে পড়ে আছে। অথচ নির্মাণ হয়নি। দুই শিক্ষক অনিয়মিত ভাবে স্কুলে আসেন। মিড-ডে মিলের রান্নার মান নিয়েও রয়েছে ক্ষোভ। এরকম একাধিক অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে শুক্রবার মানবাজারের শুকাপাতা প্রাইমারি স্কুলে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা। দুই শিক্ষককে একটি ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে ছিটকিনি দিয়ে আটকেও রাখলেন তাঁরা। মানবাজার ১ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের নির্দেশে অফিসের দুই কর্মী স্কুলে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। শিক্ষকরা মুক্ত হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মানবাজার শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৪ ০০:৩১
Share:

স্কুলের পাঁচিল তৈরির টাকা দু’বছর আগে এসে পড়ে আছে। অথচ নির্মাণ হয়নি। দুই শিক্ষক অনিয়মিত ভাবে স্কুলে আসেন। মিড-ডে মিলের রান্নার মান নিয়েও রয়েছে ক্ষোভ। এরকম একাধিক অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে শুক্রবার মানবাজারের শুকাপাতা প্রাইমারি স্কুলে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা। দুই শিক্ষককে একটি ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে ছিটকিনি দিয়ে আটকেও রাখলেন তাঁরা। মানবাজার ১ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের নির্দেশে অফিসের দুই কর্মী স্কুলে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। শিক্ষকরা মুক্ত হন।

Advertisement

এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ শুকাপাতা প্রাইমারি স্কুলে গিয়ে দেখা গেল স্কুল চত্বরে শতাধিক বাসিন্দা, অভিভাবক বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মণীন্দ্রনাথ সোরেন, বিশ্বনাথ হেমব্রম, বালকচন্দ্র সোরেন অভিযোগ করেন, “প্রায় দু’বছর আগে সর্বশিক্ষা মিশন থেকে স্কুলের পাঁচিলের জন্য টাকা দিয়েছে। অথচ প্রধানশিক্ষক টালবাহানা করে পাঁচিল তৈরি করেননি।” অভিভাবকদের অভিযোগ, শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ঋতুতেই এই স্কুলে খিচুড়ি রান্না হয়। ডাল, ভাত, সব্জি রান্না করতে বললেও করা হয় না। প্রতিদিন খিচুড়ি খাওয়ার ফলে পড়ুয়াদের পেটের অসুখ লেগেই রয়েছে। তার উপরে শিক্ষকরা প্রতিদিন স্কুলে নিয়মিত আসেন না বলেও তাঁদের অভিযোগ।

প্রধান শিক্ষক স্বপন মিশ্র অবশ্য দাবি করেছেন, “আমাদের নিয়মিত স্কুলে না আসার অভিযোগ ঠিক নয়। রান্নার লোকজনদের নিষেধ করার পরেও তাঁরা খিচুড়ি ছাড়া অন্য রান্না করতে চাইছেন না। আমরা কী করতে পারি?” আবার রান্নার দায়িত্বে থাকা সবি সোরেন, ফুলমণি সোরেনদের পাল্টা দাবি, “আমাদের যে পরিমাণ ডাল, আলু, সয়াবিন দেওয়া হয় তাতে তরকারি রান্না করলে পড়ুয়াদের সবার পাতে দেওয়া যাবে না। তাই সব মিশিয়ে খিচুড়ি রান্না করতে বাধ্য হই।” তাঁরা জানিয়েছেন, এখানে মাছ, মাংস রান্না হয় না। মাসে একদিন বা দু’দিন ডিম দেওয়া হয়।

Advertisement

বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্কুলে নলকূপ নেই। রান্নার শেড নেই। ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রান্না হয় না। প্রধান শিক্ষক বলেন, “স্কুলে নলকূপ ও রান্নার শেডের জন্য বহুবার আবেদন করেছি। রান্নার লোকজন বাইরের নলকূপ থেকে জল নিয়ে এসে রান্না করেন।” পাঁচিল তোলা নিয়ে অভিযোগ সর্ম্পকে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, টাকা এসে থাকলেও গ্রামে এই নিয়ে দু’রকমের মত রয়েছে। তাই কোথায় পাঁচিল তোলা হবে, তা ঠিক না করতে পারায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।

মানবাজার ১ চক্রের কর্মী তারকনাথ পুরোহিত জানান, প্রধানশিক্ষককে রান্নার মান ভাল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিন যেন খিচুড়ি রান্না না হয় এটাও দেখতে বলা হয়েছে। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ইরা সুবুদ্ধি বলেন, “ওই স্কুলে পাঁচিল কোথায় তোলা হবে তা নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে দু’রকমের মত রয়েছে। মীমাংসা না হওয়ায় কাজ আটকে রয়েছে। শীঘ্রই গ্রামে গিয়ে এ নিয়ে আলোচনা করব।” তিনি জানান, স্কুলে নলকূপ এবং রান্নার শেড তৈরির জন্য দফতরের আলাদা আর্থিক বরাদ্দ থাকে না। সমস্যার কথা তিনি বিডিওকে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন