মুরারই পঞ্চায়েত

দলের অন্দরে দ্বন্দ্ব, অনাস্থায় সরতে হল তৃণমূল প্রধানকে

তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে শেষ পর্যন্ত অপসারিত হলেন মুরারই পঞ্চায়েতের প্রধান। উচ্চ আদালতের নির্দেশে অনাস্থা নিয়ে নিষেধাজ্ঞার অন্তর্বর্তী আদেশ উঠে যাওয়ার পরই সোমবার পঞ্চায়েতের ১৮ জন সদস্যের উপস্থিতিতে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা সভা হয়। মুরারই ১ ব্লকের বিডিও আবুল কালাম বলেন, “অনাস্থায় প্রধান সুদীপ মেহেনা প্রধান পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন। আদালতের ফাইনাল জাজমেন্ট না পাওয়া পর্যন্ত নতুন প্রধান নির্বাচন করা যাবে না। ততদিন উপপ্রধান নুরজাহান বিবিকে প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মুরারই শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৫৭
Share:

তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে শেষ পর্যন্ত অপসারিত হলেন মুরারই পঞ্চায়েতের প্রধান। উচ্চ আদালতের নির্দেশে অনাস্থা নিয়ে নিষেধাজ্ঞার অন্তর্বর্তী আদেশ উঠে যাওয়ার পরই সোমবার পঞ্চায়েতের ১৮ জন সদস্যের উপস্থিতিতে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা সভা হয়। মুরারই ১ ব্লকের বিডিও আবুল কালাম বলেন, “অনাস্থায় প্রধান সুদীপ মেহেনা প্রধান পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন। আদালতের ফাইনাল জাজমেন্ট না পাওয়া পর্যন্ত নতুন প্রধান নির্বাচন করা যাবে না। ততদিন উপপ্রধান নুরজাহান বিবিকে প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ২৪ সদস্যের মুরারই পঞ্চায়েতে দলগত অবস্থান ছিল কংগ্রেস ৯, সিপিএম ৬, তৃণমূল ৬ , ফরওয়ার্ড ব্লক ২ এবং নির্দল এক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুরারই পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে ঠেকাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর কংগ্রেসের ব্লক নেতৃত্ব যেমন নানান ভাবে রাজনৈতিক খেলা শুরু করেছিল তেমনি তৃণমূলের তরফ থেকেও নানান রকম খেলা শুরু হয়েছিল। কিন্তু বামপন্থী সদস্যরা নিজেদের অবস্থানে থেকে যাওয়ার জন্য কংগ্রেসের ৯ জন সদস্য এবং ১ জন নির্দল সদস্যের সমর্থনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় প্রধান নির্বাচিত হন কংগ্রেসের সুদীপ মেহেনা। আর উপপ্রধান কংগ্রেসের নুরজাহান বিবি।

ঘটনা হল, লোকসভা নির্বাচনের আগে মুরারই ১ ব্লকের কংগ্রেসের আবদুর রহমানকে ব্লক সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর পঞ্চায়েতে রাজনৈতিক রং অনেক বদলে যায়। রহমানসাহেব-সহ জেলা কংগ্রেসের বেশ কিছু নেতা এবং মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতি অধিকাংশ কংগ্রেস সদস্যই তৃণমূলে যোগ দেন। এরপর থেকে তৃণমূলের মুরারই ১ ব্লকের সভাপতি বিনয় ঘোষদের সঙ্গে মতবিরোধ হতে শুরু করে আবদুর রহমানদের। সূত্রের খবর নিজের প্রভাব খাটিয়ে মুরারই পঞ্চায়েত দখল করার চেষ্টা শুরু করেন বিনয় ঘোষ। সেই জন্য কংগ্রেস, সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লক দলের সদস্যদের নিয়ে আলাদা দল গঠন করে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রক্রিয়া শুরু হয়।

Advertisement

পঞ্চায়েত নির্বাচনের বছর ঘুরতেই ৪ সেপ্টেম্বর প্রধান সুদীপ মেহেনার বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসে তৃণমূলের ৪ সদস্যের সঙ্গে সিপিএমের ৫ ফরওয়ার্ড ব্লকের ২ এবং কংগ্রেসের ৩ সদস্য। প্রধানের বিরুদ্ধে মোট ১৪ জন সদস্যর আনা অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য ১৯ সেপ্টেম্বর মুরারই ১ ব্লকের বিডিও আবুল কালাম সভা ডাকেন। কিন্তু উচ্চ আদালতে অনাস্থা নিয়ে প্রধান সুদীপ মেহেনা মামলা করার জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশে ১৯ সেপ্টেম্বর অনাস্থা সভা স্থগিত থেকে যায়।

পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত অনাস্থা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখার নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। পরে ১৭ নভেম্বর উচ্চ আদালতের নির্দেশে অনাস্থা নিয়ে অন্তর্বর্তী নির্দেশ উঠে যাওয়ার পর শুক্রবার সেই অনাস্থার সভা হয়।

এ দিকে অনাস্থা প্রস্তাবে ১৪ জন সাক্ষর করলেও এ দিন প্রধানের বিরুদ্ধে আনা সভায় সিপিএমের ৬ জন সদস্যই অনাস্থা সভায় যোগ দেন। সেই সঙ্গে কংগ্রেসের ৪ জন এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের ২ জন সদস্য তৃনমূলের ৬ জন সদস্যের সঙ্গে হাত মেলায়। মোট ২৪ জন সদস্যের মধ্যে ১৮ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। যারা ছিলেন না, তাঁদের মধ্যে ৫ জন কংগ্রেস সদস্য এবং ১ জন নির্দল নিয়ে মোট ৬ জন সদস্য আছেন। অপসারিত প্রধান সুদীপ মেহেনাকে ফোন করা হলে, তিনি ফোন ধরেননি। তবে এক পঞ্চায়েত সদস্য বলেন, “দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই অনাস্থা আনতে হল। না হলে সদস্য পদ থাকত না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন