প্রাক্তন প্রধান তথা তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে দলীয় সদস্যরাই অনাস্থা এনেছিলেন। অনাস্থা সংক্রান্ত সভায় উপস্থিত না হওয়ার জন্য দলীয় সদস্য ও কর্মীদের হাতেই আক্রান্ত হলেন ওই নেতা। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রাক্তন প্রধান হুমায়ুন কবীর রামপুরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শুক্রবার দুপুরে মাড়গ্রাম থানার দুনিগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কোটেশ্বর রাও বলেন, “তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডগোল। এতে একজন জখম হয়েছেন। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে আছে।”
হাসপাতালের হুমায়ুন কবীর বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে আমি কংগ্রেসের প্রধান ছিলাম। পরে আমি এবং আরও চার জন তৃণমূলে যোগ দিলে কংগ্রেস নেতৃত্ব আমাদের পুনরায় কংগ্রেসে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। গত ২১ জুলাই এলাকার বিধায়ক অসিত মাল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর পঞ্চায়েতের সমস্ত কংগ্রেস সদস্য তারাপীঠে অনুব্রত মণ্ডলের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নেন। ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে কয়েকজন সদস্য অনাস্থা আনেন।” তাঁর অভিযোগ, “অনাস্থার সভার দিন আমাকে আমার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু আমি ওই দিন সভায় উপস্থিত হইনি। সেটা আমার অপরাধ হয়েছে। তাই এ দিন দুপুরে আমি যখন রামপুরহাট থেকে বাড়ি ফিরছিলাম, মণ্ডলপাড়ার কাছে বেশ কিছু লোকজন দাঁড়িয়ে আছে দেখে কিছু হয়েছে কি না জানতে চাই। তার পরেই দেখি আমার মাথায় পঞ্চায়েত সদস্য আলেম শেখ তলোয়ার নিয়ে আঘাত করল। আমি পড়ে যাই। এর পর স্থানীয় বাসিন্দারা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।” অবশ্য আলেম শেখ দাবি করেন, “বোলপুরে আমার গ্যারেজ আছে। সেখানে আছি। আমি ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানি না।”
অন্য দিকে, শুক্রবার দুপুরের ঘটনায় আহত হয়েছেন তৈমুর রহমান নামে হুমায়ুন কবীরের এক আত্মীয়। তাঁর অভিযোগ, “এ দিন দুপুরে আমি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে দেখি দু’একজন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আলেম শেখ এবং তাঁর ভাই পল্টুরা আমাকে মারতে থাকেন। মোবাইল, টাকা ওঁরা কেড়ে নেন।” হুমায়ুন কবীরের দাবি, “আলেম শেখ এবং আমি দু’জনেই কংগ্রেসের সদস্য ছিলাম। কিন্তু এখন আমরা তৃণমূল করি। সম্প্রতি কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া আলেম-সহ আরও চারজন সদস্য এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় জয়ী চার জন তৃণমূল সদস্য এবং এক নির্দল সদস্যের সমর্থন নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। দলের মধ্যে আমার প্রভাব খর্ব করার জন্য আমার উপর আক্রমণ করা হয়েছে।”
এ ব্যাপারে বিধায়ক অসিত মালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি বাইরে আছি। কী ঘটেছে তা সম্পূর্ণ না জেনে মন্তব্য করব না।”