দলীয় সদস্যদের অনাস্থার মুখে তৃণমূলেরই প্রধান

সিপিএমের এক সদস্যাকে নিয়ে এ বার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিলেন। মানবাজার ১ ব্লকের ধানাড়া পঞ্চায়েতের ঘটনা। শুক্রবার ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের পাঁচ সদস্যর সঙ্গে অনাস্থার দাবিতে সিপিএমের ১ সদস্যা সই করেছেন। এ দিনই ওই আবেদন বিডিও-র কাছে জমা পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মানবাজার শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১০
Share:

সিপিএমের এক সদস্যাকে নিয়ে এ বার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিলেন। মানবাজার ১ ব্লকের ধানাড়া পঞ্চায়েতের ঘটনা। শুক্রবার ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের পাঁচ সদস্যর সঙ্গে অনাস্থার দাবিতে সিপিএমের ১ সদস্যা সই করেছেন। এ দিনই ওই আবেদন বিডিও-র কাছে জমা পড়ে।

Advertisement

ধানাড়া পঞ্চায়েতে মোট আসন ১১। তৃণমূলের ৬ এবং সিপিএমের ৫ জন সদস্য রয়েছেন। প্রধান পদটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকায় তৃণমূলের একমাত্র মহিলা সদস্য অঞ্জলি মুর্মুকে প্রধান নির্বাচিত করা হয়েছিল। তা হলে এ বার তৃণমূলের ওই পাঁচ সদস্য সিপিএমের সদস্যাকে কি প্রধান হিসেবে সমর্থন করবেন? এই অনাস্থা প্রস্তাব জমা পরার পরে এ বার এই প্রশ্নই মানবাজারে ঘুরছে। প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থায় সই করা তৃণমূল সদস্যদের কাছ থেকে এর উত্তর অবশ্য মেলেনি।

ধানাড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বিশ্বজিৎ কোটাল ফোন ধরেন নি। অন্য সদস্য সমীর মণ্ডল বলেন, “আমরা পাঁচ তৃণমূল সদস্যই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা চেয়েছি।” কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেছেন, “অঞ্জলিদেবী পঞ্চায়েত পরিচালনার ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেন না। তিনি নিজের মর্জিমাফিক পঞ্চায়েত চালান। আমরা এই পঞ্চায়েতে গুরুত্ব পাই না। সেই কারণে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা চেয়েছি।” তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে অঞ্জলিদেবী বাদে আর কেউ মহিলা সদস্য নেই। তা হলে আপনারা কাকে প্রধান নির্বাচিত করবেন? অনাস্থার দাবিতে সই থাকা সিপিএমের মহিলা সদস্যকে? সমীরবাবু বলেন, “আমরা অনেক ভেবেই অনাস্থা চেয়েছি। কাকে প্রধান হিসাবে চাইছি সেই নাম আমরা এখন প্রকাশ করছি না।”

Advertisement

অনাস্থার আবেদনে সই করা সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য তুলসি সিং সর্দারের মন্তব্য, “আগে তো অনাস্থা পাশ হোক। প্রধান অপসারিত হওয়ার পরে তখন নতুন প্রধান কে হবেন, তা ঠিক করা হবে।” প্রধান অঞ্জলি মুর্মু অবশ্য দাবি করেছেন, “আমি পঞ্চায়েতের সব সদস্যকে সমান গুরুত্ব দিই। একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। তা ছাড়া দলই তো আমাকে প্রধান হিসাবে বসিয়েছে। আমি তো নিজের ইচ্ছায় বসিনি।” তাঁর অভিযোগ, প্রধান হয়ে কাজ করতে গিয়ে দলের কিছু নেতার কাছে বাধা পেয়েছেন। তাঁদের আর্থিক চাহিদা মেটাতে পারেননি বলে বিরাগভাজন হয়েছেন। তিনি বলেন, “এ কারণে ছ’মাস আগেই আমি পদত্যাগ করতে চেয়েছিলাম। জেলা নেতৃত্বকে এ কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছিলাম। এখন ওরা আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা চাইলে পদ ছেড়ে দেব।”

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য প্রদীপ চৌধুরী বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে ঠিক কী হয়েছে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” তৃণমূলের জেলা নেতা নবেন্দু মাহালি একই সুরে বলেন, “স্থানীয় নেতাদের কাছে বিষয়টি খবর নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে দু’পক্ষকে ডেকে পাঠাব।”

কিছু দিন আগে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা চেয়ে চিঠি জমা দিয়েছেন বান্দোয়ানের কুইলাপাল পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্য। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার দুই সদস্য। ওই পঞ্চায়েতে মোট সদস্য সংখ্যা ছয়। কাজেই সেখানে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয় কি না তা নিয়েও জ্বল্পনা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন