দলীয় সভার অনুব্রতর গলায় অন্য সুর

ফের ভোল বদল অনুব্রতর! দলীয় কর্মীরা একসময় তাঁকেই নির্দল প্রার্থী ও পুলিশ-প্রশাসনের উপরে বোমা মারার পরামর্শ দিতে দেখেছিলেন। তৃণমূলের সেই বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলই কিনা প্রকাশ্য মঞ্চে নিজের ভুলের জন্য হাতজোড় করে ক্ষমা চাইলেন! দলীয় কর্মীদের সংযত আচরণ করার পরামর্শও দিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের সময় পাড়ুইয়ের কসবা পঞ্চায়েতের ওই বিতর্কিত বক্তৃতার পরে তুমুল হাততালি জুটেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০০:৫৬
Share:

পায়ে চোট। তাই দেহরক্ষীর কাঁধে ভর করেই বক্তৃতা। —নিজস্ব চিত্র

ফের ভোল বদল অনুব্রতর!

Advertisement

দলীয় কর্মীরা একসময় তাঁকেই নির্দল প্রার্থী ও পুলিশ-প্রশাসনের উপরে বোমা মারার পরামর্শ দিতে দেখেছিলেন। তৃণমূলের সেই বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলই কিনা প্রকাশ্য মঞ্চে নিজের ভুলের জন্য হাতজোড় করে ক্ষমা চাইলেন! দলীয় কর্মীদের সংযত আচরণ করার পরামর্শও দিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের সময় পাড়ুইয়ের কসবা পঞ্চায়েতের ওই বিতর্কিত বক্তৃতার পরে তুমুল হাততালি জুটেছিল। সোমবার সিউড়ি ২ ব্লকের কেন্দুয়া পঞ্চায়েত এলাকার দেশালপুরের এই দলীয় কর্মীসভাতেও অনুব্রতর ভোলবদলে কর্মী-সমর্থকদের তুমুল হাততালি দিতে দেখা গেল। কয়েক দিন আগেই পায়ে চোট পেয়েছেন অনুব্রত। ব্যাথা নিয়েই এ দিনের সভায় পৌঁছন। ছিলেন জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, দলের সিউড়ি ২ ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম।

এ দিনের সভায় উপস্থিত দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে অনুব্রতকে বলতে শোনা গেল, “আমাদের দলের কেউ কোনও ভুল করে থাকলে আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমার যদি কোনও ভুল হয়ে থাকে, তা হলেও হাতজোড় করে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাইছি।” এর পরেই তিনি দলীয় কর্মীদের নিজেদের আচরণ সম্বন্ধে সতর্ক করে দিলেন। তাঁর পরামর্শ, “সংযত থাকুন। আত্মতুষ্টিতে ভুগবেন না। মানুষই আমাদের ক্ষমতায় এনেছেন। তাঁদের সম্মান দিন।” আরও পরে জানিয়ে দিলেন, ভুল করলে দলীয় কর্মীদেরও ছাড় নেই। উপস্থিত জনতাকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, “দলের কোনও কর্মী যদি আপনাদের অসম্মান করে থাকেন, তা হলে আমাকে জানান। আমি ব্যবস্থা নেব।” ভিড়ে ঠাসা জনসভাই হাততালির ঝড় উঠল।

Advertisement

বিতর্কিত অনুব্রতর সুরে আচমকা এই পরিবর্তন?

জেলার রাজনৈতিক কারবারিদের মত, গত কয়েক মাসে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে সংঘাত জেলায় যে যে অংশে হয়েছে, তার মধ্য সিউড়ি ২ ব্লক অন্যতম। এখনও পর্যন্ত সেখানে তৃণমূলের সংগঠন অনেক বেশি শক্তিশালী। বিজেপিও অবশ্য দাঁত কামড়ে পরে থেকে এলাকায় সংগঠন মজবুত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তার জেরেই অনুব্রতর এমন নরম সুর বলে রাজনীতির কারবারিদের মত। বিজেপির জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল অবশ্য বলছেন, “এ সবই নাটক! জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ যে হারে বিজেপিতে নাম লেখাচ্ছেন, তাতে ভয় পেয়েই এখন অনুব্রত সামনে দলীয় কর্মীদের সংযত হওয়ার কথা বলে নাটক করছেন। আবার তাঁদেরই উস্কানি দিয়ে পিছন থেকে ছুরি মারছেন!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন