পৌষ উত্‌সব

নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে মেলা বসবে একই মাঠে

খাগড়াগড়-কাণ্ডকে মনে রেখে নিরাপত্তার চাদরে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলাকে মুড়ে ফেলতে চাইছে জেলা প্রশাসন। শনিবার বিকেলে পৌষ উত্‌সব নিয়ে তারা বিশ্বভারতীর সঙ্গে একটি বৈঠকও সারে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, মেলা বসবে আগের মতোই, তবে এবার পর্যটকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:০৪
Share:

খাগড়াগড়-কাণ্ডকে মনে রেখে নিরাপত্তার চাদরে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলাকে মুড়ে ফেলতে চাইছে জেলা প্রশাসন। শনিবার বিকেলে পৌষ উত্‌সব নিয়ে তারা বিশ্বভারতীর সঙ্গে একটি বৈঠকও সারে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, মেলা বসবে আগের মতোই, তবে এবার পর্যটকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া অগ্নি নির্বাপণ, আইনশৃঙ্খলা-সহ একাধিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে।

Advertisement

বৈঠকে বিশ্বভারতীর মেলা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, এবারও স্টল ও নাগোরদোলা বসবে কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন পূর্বপল্লির মাঠেই। দিন কয়েক আগে বিশ্বভারতীর চীন ভবনে এবারের পৌষ মেলা সংক্রান্ত প্রাথমিক বৈঠক হয়। সেখানে বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের নির্দেশে নাগরদোলা-সহ দোকানগুলির বসার জায়গা স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ হিসেবে ওই বৈঠকে সুশান্তবাবু জানান, সরকারি ভাবে পৌষ উত্‌সব তিন দিন এবং পরের দিন নিয়ে মোট চার দিনের জন্য হলেও, উত্‌সবে আসা দোকানদাররা জায়গা ছাড়তে চায় না। ফলে বিশ্বভারতীর পঠন-পাঠন-সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ কর্ম ব্যাহত হয়। চরম অসুবিধের মুখে পড়তে হয় পড়ুয়া-সহ বিশ্বভারতীর কর্মী-অধ্যাপক এবং আধিকারিকদের। ঘটনা হল, উপাচার্যের কারণ ব্যাখ্যার কর্মী-পরিষদ সিদ্ধান্ত নেয় মেলা চলাকালীন উত্‌সবের জন্য ওই জায়গাগুলি খালি রেখে স্টলের জন্য অন্য মাঠে ব্যাবস্থা করা হবে। এ দিন আদতে যা প্রত্যাহার করে কর্মী-পরিষদ।

কেন উপাচার্যের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার সে প্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর কর্মী পরিষদের এক সম্পাদক অমর্ত্য মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে পুনর্বিবেচনা করেছেন। মেলায় কোনও রদবদল হচ্ছে না। অন্যান্য বারের মতোই এইবারও সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকছে।” অন্যদিকে বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডকে সামনে রেখে, পৌষমেলায় কোনও রকমের ঝুঁকি নিতে চাইছে না জেলা পুলিশ। তাই সিসিটিভি, পুলিশ কুকুর, বোমা নিস্ক্রিয়কারী দল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে প্রাধান্য দিয়ে মাঠে নামছে জেলা পুলিশ। সেক্ষেত্রে মেলায় ঢোকার প্রতিটি ড্রপ গেটেই এবার কড়া নিরাপত্তা থাকছে। এখন থেকেই তাঁরা ঠিক করে ফেলতে চাইছে কোন কোন গাড়ি মেলার এলাকায় ঢুকতে পারবে। ঘটনা হল, বিশ্বভারতীর নিজস্ব যে ‘কার-পাস’ তার বিলি নিয়ে অভিযোগ ওঠে প্রতিবারই। এবারও এখন থেকেই নানা ভবনের কর্তা ব্যক্তিরা সেই নিয়ে মুখও খুলেছেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, অনুমতি না থাকলে কোনও গাড়িই এবার ভিতরে ঘুরবে না। নিরাপত্তার জন্য এবার সতর্ক থাকবে চেক পোস্টগুলিও।

Advertisement

বস্তুত, খাগড়াগড়-কাণ্ডে জঙ্গিদের বীরভূম-যোগ মেলায় জেলা পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগ সতর্ক। এক কর্তা জানান, এনআইএ-এর জিজ্ঞাসাবাদে ওই সব জঙ্গি কার্যকলাপ জনসমাগম হয় এমন জায়গায় করানোর কথা কবুল করেছিল। দেশি বিদেশী পর্যটকদের নিয়ে লক্ষাধিক জনসমাগমের পৌষ মেলায়, নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে জেলা পুলিশ। বোলপুরের এসডিপিও সূর্য প্রতাপ যাদব বলেন, “সিসিটিভি, ডগ স্কোয়াড, বম স্কোয়াড, ড্রপ গেট এবং ওয়াচ টাওয়ার থাকবে মেলার মধ্যে। থাকবে পুলিশ সহায়তা কেন্দ্রও। ভিড়ের কথা মাথায় রেখে আপদকালীন ব্যাবস্থা এবং বিপর্যয় মোকাবিলার দলও থাকছে মেলার সময়ে। সব রকম ব্যাবস্থা নিচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন