নির্বিঘ্নেই সভা সারল বিজেপি

আগের দিনই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভাঙচুর চালিয়ে দলীয় সভামঞ্চে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। সোমবার দুপুরে ময়ূরেশ্বরের বীরচন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মাঠে নির্বিঘ্নেই সভা করতে পারল বিজেপি। শুধু তা-ই নয়, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক দলের ওই সভা সফল ভাবে ভরিয়ে তুললেন। শাসকদলের বিরুদ্ধে আক্রমণের ধার বাড়ালেন দলের উজ্জীবিত নেতারাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৮
Share:

ময়ূরেশ্বরের বীরচন্দ্রপুরে দলের প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি

আগের দিনই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভাঙচুর চালিয়ে দলীয় সভামঞ্চে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। সোমবার দুপুরে ময়ূরেশ্বরের বীরচন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মাঠে নির্বিঘ্নেই সভা করতে পারল বিজেপি। শুধু তা-ই নয়, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক দলের ওই সভা সফল ভাবে ভরিয়ে তুললেন। শাসকদলের বিরুদ্ধে আক্রমণের ধার বাড়ালেন দলের উজ্জীবিত নেতারাও। তৃণমূল নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে দলের পরাজিত প্রার্থী অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় আবার সভায় দাবি করলেন, “লোকসভা আর পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের পুলিশকে দিয়ে সন্ত্রাস করে ক্ষমতা দখল করেছিল তৃণমূল। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আর তারা সেই সুযোগ পাবে না। রাজনাথ সিংহের সঙ্গে আমার কথা হয়ে গিয়েছে। ২০১৬ সালে ভোট হবে মিলিটারি দিয়ে।”

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি ময়ূরেশ্বরের ওই এলাকায় তৃণমূলের বাধার মুখে পড়েছিল দলের একটি কর্মিসভা। তারই প্রতিবাদে এ দিনের সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল। সভায় যোগ দিয়েছিলেন দলের বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য, সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য সভাপতি শাকিল আনসারি প্রমুখ। সভায় প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষের ভিড় হয়েছিল। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস, ট্রাক্টর, ম্যাটাডোর চড়ে কর্মী-সমথর্কেরা এসেছিলেন। মহিলা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ জনের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এ দিনের সভায় বক্তৃতা রাখতে গিয়ে শমীকবাবু দাবি করেন, “১৯৮৫ সাল থেকে নব্বইয়ের দশকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা ছিল। কিন্তু তিনি তখন কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। তিনি তৃণমূল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যখন কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল বাজপেয়ী সরকার। তাঁর সুশাসন না থাকলে এটা সম্ভব হতো না। কিন্তু, এখন মমতা সরকারের নৈরাজ্যে মানুষ বীতশ্রদ্ধ।” তাঁর অভিযোগ, “বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের পাশাপাশি পুলিশেরও আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। এটা বেশি দিন চলবে না। মমতা মুখে সংখ্যালঘু-প্রীতির কথা বলেন। কিন্তু আসলে মেরুকরণের রাজনীতিই করেন।” একই সুর ছিল শাকিল আনসারিও। তিনিও দাবি করে, “ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূল সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণ, মাদ্রাসা স্থাপনের ঢালাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আসলে তা ধোঁকা দেওয়া হয়েছিল। সাধারণ মানুষ সংবিধান না জানলেও এলএলবি পাস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভালই জানতেন, ধর্মের উপর ভিত্তি করে কোনও সংরক্ষণ করা যায় না। বাস্তবে সেটাই হয়েছে।”

এ দিনের সভায় অবশ্য সংযতই দেখা যায় দুধকুমারকে। এমনকী, রামপুরহাটের জনসভায় দেওয়া তাঁর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। দুধকুমার বলেন, “বিজেপি কখনও মারার কথা বলে না। আমরা খুনোখুনির রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।” এ দিন মঞ্চে হাজির ছিলেন পাড়ুইয়ের সাগর ঘোষের ছেলে হৃদয় ঘোষ এবং ওই অঞ্চলের প্রাক্তন তৃণমূল নেতা নিমাই দাস। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এ দিন সিপিএম ও তৃণমল ছেড়ে বহু কর্মী-সমর্থক তাদের দলে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য তথা ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধীরেন্দ্রমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় যদিও বলেন, “এ রকম কিছু হয়েছে বলে জানি না।” বিজেপি-র সভাকে তিনি ‘ব্যর্থ’ বলেই দাবি করেছেন।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন