নতুন সিলেবাসে ক্লাস শুরু, বই না পেয়ে বিপাকে স্কুল

শুরু হয়েছে নবম শ্রেণির নতুন সিলেবাসে পঠন-পাঠন। ২ জানুয়ারি থেকে নতুন ক্লাসও শুরু হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবারও পর্যন্ত জেলার কোনও স্কুলে পড়ুয়াদের হাতে বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের সরকারি পাঠ্যপুস্তক এসে পৌঁছায়নি। কার্যত বিপাকে পড়েছে জেলার মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসাগুলি।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০৪
Share:

শুরু হয়েছে নবম শ্রেণির নতুন সিলেবাসে পঠন-পাঠন। ২ জানুয়ারি থেকে নতুন ক্লাসও শুরু হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবারও পর্যন্ত জেলার কোনও স্কুলে পড়ুয়াদের হাতে বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের সরকারি পাঠ্যপুস্তক এসে পৌঁছায়নি। কার্যত বিপাকে পড়েছে জেলার মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসাগুলি। সর্বশিক্ষা মিশন দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক অনিন্দ্য কুমার মণ্ডলের অবশ্য দাবি, “সংশ্লিষ্ট এসআই অফিসে আজ থেকেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বই। স্কুলগুলি তাঁদের প্রয়োজন মতো সেই বই নিয়ে যাবে।”

Advertisement

নতুন শিক্ষাবর্ষে এ বার নবম শ্রেণি থেকে নতুন সিলেবাসের বই পড়তে হবে, এমনই সিদ্ধান্ত নেয় পর্ষদ। নতুন সিলেবাসের যে চারটি বই মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড দেওয়ার কথা, সেগুলি হল বাংলা পাঠ্য বই, বাংলা দ্রুত পঠন, অঙ্ক এবং ইংরেজী। ঘটনা হল, নতুন শিক্ষা বর্ষে ক্লাস শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত জেলায় নবম শ্রেণির জন্য নতুন সিলেবাসের বই কোথাও দেওয়া হয়নি। এতে বিপাকে পড়েছেন পড়ুয়া থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং ওই সমস্ত বিষয়ের শিক্ষকেরা। তাঁদের অনেকের বক্তব্য, স্কুল চালু হয়ে গেলেও বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক বই না পাওয়ার জন্য হয়রান হতে হচ্ছে। এবং অনেকেই অভিভাবকদের বিক্ষোভের আশঙ্কায় ভুগছেন।

নতুন বই নিয়ে জেলা মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শকের অফিসে একটি নোটিস নিয়েও অনেকে ধোঁয়াশার মধ্যে পড়েছেন। ওই নোটিসে উল্লেখ করা আছে, ২ জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত স্কুলকে চারটি বইয়ের জন্য কার কতটা প্রয়োজন সেইমতো রিকিউজিশন দিতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ স্কুল সেই নোটিস না জানতে পারার জন্য রিকিউজিশন এখনও জমা দিতে পারেননি। অনেকে জমাও দেন। রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌরচন্দ্র ঘোষ বলেন, “ডি আই অফিসে কাজে গিয়ে নোটিস দেখে ২ জানুয়ারির মধ্যে স্কুলের নবম শ্রেণির জন্য চারটি বই এর রিকিউজিশন জমা দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু কোনও স্কুলে নোটিস বা সরকারি নির্দেশ পাইনি।” রামপুরহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, “ডিআই অফিসে স্কুলের কাজে গিয়েছিলাম। তাই জানতে পেরেছিলাম, কিন্তু যারা কাজে সম্প্রতি ডি আই অফিস যায়নি তাঁদের কাছে তো নোটিশ আকারে কিছু যায়নি। তাঁদের ক্ষেত্রে রিকিউজিশন পাঠাতে দেরি হবে। এবং এর জন্য নতুন করে আবার রিকিউজিশনের দিন বাড়াতে হবে।”

Advertisement

পাইকর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “আমি গত ২৪ ডিসেম্বর ইন্টারনেট দেখে বোর্ডের নির্দেশ জানতে পেরে ২ জানুয়ারির রিকিউজিশন জমা দিয়েছি।” আবার বিষ্ণুপুর রসমঞ্জরী হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দুলাল চন্দ্র সাহা বলেন, “আমাদের কাছে কোনও নোটিস আসেনি। সুতরাং বই কিভাবে পাব তাই নিয়ে চিন্তায় আছি। তবে আজকেই এস আই অফিসে জানতে পারি বই সিউড়িতে এসে গিয়েছে।”

ঘটনা হল, জেলায় ৬০,০০০ সেট বইয়ের দরকার। জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, যার মধ্যে এসেছে ৪৪,০০০টি সেট। বাকি বই কবে আসবে, সে নিয়েও নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আসরাফ আলি মির্ধার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ফোন বেজে যায়। কোনও উত্তর দেননি তিনি।

জেলা সর্বশিক্ষা মিশন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ৩৮৫ টি মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের জন্য বোর্ডের কাছে রিকিউজিশন করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে বোর্ড থেকে পাওয়া গিয়েছে কিছু বই। বাকি বইও এসে পড়বে। প্রশ্ন উঠছে, গত সপ্তাহে বই এলেও এ দিনও তা স্কুলে পৌঁচ্ছল না কেন?

শিক্ষা দফতরের প্রতি মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বই কম জোগান এই নিয়ে কোনও রকম সংশয় বা ইতস্তত করার কিছু নেই। রাজ্য সরকার দায়িত্ব নিয়ে বই স্কুলে স্কুলে পড়ুয়াদের প্রয়োজন মতো জোগান দেবে। এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন