দিন-দুপুরেই বিষ্ণুপুরে মেশিন দিয়ে চলছিল ভরাটের কাজ। শুক্রবারের নিজস্ব চিত্র।
আগে মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী যমুনাবাঁধ ও লালবাঁধের একাংশ ভরাট করে প্লট হিসেবে জায়গা বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। বাসিন্দাদের তখন তেমন প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। শুক্রবার দিনে-দুপুরে একটি শ্মশানের পুকুর ভরাট করতে গিয়ে হাতে ছ্যাঁকা খেলেন দালাল চক্রের লোকজন। তীব্র জনরোষের মুখে পড়ে বন্ধ হয়ে গেল পুকুর ভরাটের কাজ। ট্রাক্টর ও মাটি কাটার মেশিন ছেড়ে চোঁ চাঁ দৌড় মারল তারা।
বিষ্ণুপুর শহরে মানুষজন মৃতদের সত্কারের কালিন্দী শ্মশানে আসেন। এই শ্মশান লাগোয়া একটি পুকুর রয়েছে। সেই পুকুরের জল নানা কাজে ব্যবহার করা হয়। অনেকে দাহের পরে ওই পুকুরের জল সত্কারের আনুষঙ্গিক কাজে ব্যবহার করেন। কিন্তু সেই পুকুরের উপর নজর পড়ে দালালদের। এ দিন মাটি কাটার মেশিন নিয়ে এসে সেই পুকুরে মাটি ফেলা চলছিল। তা জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। পুকুর ভরাট করা চলবে না এই দাবি জানিয়ে ৭১ জনের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপিও পরে তাঁরা মহকুমাশাসকের হাতে তুলে দেন। পরে মাইক নিয়ে এলাকায় প্রচার করেও ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে পুকুর ভরাটের কাজ হচ্ছিল। গোপনে এ দিনই প্রথম দিনের বেলায় মেশিন নিয়ে এসে ভরাটের চেষ্টা হয়। সঙ্গে সঙ্গে বাসিন্দারা জড়ো হয়ে গাড়ি আটকে বাধা দেন। তাঁরা বলেন, “ওই পুকুর ভরাট হয়ে গেলে শ্মশানের চিতা নেভানোর কাজে সমস্যা হবে। পুকুর ভরাট করা বেআইনি জেনেও যারা এই কাজে যুক্ত মহকুমাশাসকের কাছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছি।”
মহকুমাশাসক বলেন, “জলাশয় ভরাট করা বেআইনি। অভিযোগ পেয়েই আমি কাজ বন্ধের নির্দেশ পাঠিয়েছি। তবে নির্দিষ্ট করে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। আমি ব্লক ভূমি আধিকারিক এবং থানার আইসি-কে ঘটনাটি দেখতে বলেছি।” বিএলআরও (বিষ্ণুপুর) পার্থ লোধ বলেন, “ওই পুকুরটি কার নামে রয়েছে এখনই জানা যাচ্ছে না। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের আটকে রাখা গাড়িগুলি আটক করা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। এলাকায় নজর রাখা হচ্ছে।