পুরভোটের ঢাকে কাঠি পড়তেই অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠতে শুরু করেছে পুরুলিয়ার ঝালদা। সদ্য তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া ঝালদার প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এ বার আসরে নামল সিপিএম। এর সঙ্গেই তারা তুলেছে ঝালদা পুর-এলাকার নানা সমস্যার কথা। মঙ্গলবার সিপিএমের ঝালদা শহর জোনাল কমিটির নেতৃত্বে এই সব অভিযোগে পথে নামেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা।
এ দিন ঝালদায় মিছিল করে পুরসভায় মোট ১২ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়ার পাশাপাশি পুরসভার সামনে সভাও করে সিপিএম। ঝালদা শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক কালীপদ চট্টোপাধ্যায়, কমিটির সদস্য বৈদ্যনাথ কৈবর্তরা অভিযোগ করেন, ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত থাকা পুরবোর্ডে ঝালদার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সাওবাঁধ নামে একটি পুকুরের পাড়ে রাস্তা নির্মাণ হয়েছিল। সে সময় সংশ্লিষ্ট ওযার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন প্রদীপ কর্মকারের স্ত্রী মিনুদেবী। পরের পুরবোর্ডে বেশ কিছুদিনের জন্য পুরপ্রধানের দায়িত্বে ছিলেন প্রদীপবাবু। বৈদ্যনাথবাবুর অভিযোগ, “২০১২-১৩ অর্থবর্ষে ফের ওই একই রাস্তা সংস্কারের কাজ করান প্রদীপবাবু। খরচ দেখানো হয় পাঁচ লক্ষ টাকা। কিন্তু, বাস্তবে সেই রাস্তা সংস্কারই হয়নি।” সিপিএমের আরও দাবি, পুরসভা চত্বরে একটি কমিউনিটি হল রয়েছে। আগের পুরবোর্ডের সময়েই এই হলের কাজ হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী কালে প্রদীপবাবু এই হলটির সিঁড়ি তৈরির কাজ করান। এই কাজের জন্য অন্তত ১২ লক্ষ টাকা তিনি নির্মাণ খরচ দেখিয়েছেন। সিপিএমের ঝালদা জোনাল কমিটির সম্পাদক উজ্জ্বল চট্টরাজ বলেন, “এই যে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, আমরা তার তদন্ত তাই। তদন্তে প্রদীপবাবু দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে।”
অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রদীপবাবু বলেন, “তদন্ত হতেই পারে। পাশাপাশি আমি আগেও দাবি করেছি এবং এখনও দাবি করছি, আগের বোর্ডের নয়, বর্তমান পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ যা উঠেছে, সেই সবেরই তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।” আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগের পাশাপাশি ঝালদায় টাউন থানা গঠন করা, বস্তিবাসীদের জমির অধিকার-সহ মোট ১২ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি এ দিন সিপিএমের তরফে তুলে দেওয়া হয় পুরসভার কর্মীদের হাতে। বৈদ্যনাথবাবু জানান, এ দিন পুরপ্রধান ছিলেন না। তাই পুরসভার প্রধান করণিক গৌতম গোস্বামী স্মারকলিপি নিয়েছেন। গৌতমবাবুর মোবাইল বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।