প্রতিষ্ঠা দিবসের আগেই চুরি মন্দিরে

প্রতিষ্ঠা দিবসের আগের দিন রাতে চুরি হল ভবতারিণী কালীমন্দিরে। এই নিয়ে গত তিন বছরের ব্যবধানে চার বার চুরির ঘটনা ঘটল এই মন্দিরে। গত দু’বছর আগে কয়েক মাসের ব্যবধানে রামপুরহাটের এই মন্দিরে পর পর চুরির ঘটনার প্রতিবাদে পথ অবরোধ করেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন। রবিবার সেই মন্দিরেই ফের চুরির ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন, একটা ব্যস্ত রাস্তার ধারে মন্দির থেকে নেই নেই করে চার বার চুরি হয়ে গেল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৪ ০১:৫৬
Share:

গয়না ছাড়াই। রামপুরহাটে সোমবার অনির্বাণ সেনের তোলা ছবি।

প্রতিষ্ঠা দিবসের আগের দিন রাতে চুরি হল ভবতারিণী কালীমন্দিরে। এই নিয়ে গত তিন বছরের ব্যবধানে চার বার চুরির ঘটনা ঘটল এই মন্দিরে। গত দু’বছর আগে কয়েক মাসের ব্যবধানে রামপুরহাটের এই মন্দিরে পর পর চুরির ঘটনার প্রতিবাদে পথ অবরোধ করেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন। রবিবার সেই মন্দিরেই ফের চুরির ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন, একটা ব্যস্ত রাস্তার ধারে মন্দির থেকে নেই নেই করে চার বার চুরি হয়ে গেল। তা হলে পুলিশের কাছে কীভাবে মানুষ নিরাপত্তা আশা করে?

Advertisement

রামপুরহাট দুমকা রোড। এই রোডের উপর রামপুরহাটের ছ-ফুঁকো পেরিয়ে ভবতারিণী কালীমন্দির। সোমবার প্রতিষ্ঠা দিবস। এ দিন সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায় মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে প্রস্ততি চলছে। মন্দিরের সেবাইত রূপেন্দু আচার্য জানালেন, চার দিন থেকে মন্দিরের ভিতর এবং মায়ের মন্দিরের দরজা বন্ধ রেখে মায়ের রঙ করা হচ্ছিল। প্রতিষ্ঠা দিবসের জন্য তিনি নিজে মায়ের গলায় দু’টো সোনার হার, হাতে সোনার চুড়ি-সহ অন্যান্য সোনার গয়না পরিয়ে রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ মন্দিরে তালা লাগিয়ে বাড়ি চলে এসেছিলেন। সেবাইত বলেন, “সোমবার ৫টা নাগাদ প্রথমে আমি মন্দিরের তালা খুলি। পরে শিবের মন্দিরের তালা খুলে দেখি ভিতরের একটি জানলার গ্রীলের একটা অংশে কিছুটা ভাঙা এবং ভাঙা অংশ মন্দিরের চাতালে পড়ে আছে। উপরে তাকিয়ে দেখি ঘুলঘুলি ভাঙা। পরে শিবমন্দিরের দেওয়াল লাগোয়া মা ভবতারিণী মাকে যে সমস্ত গয়না দিয়ে আগের রাতে সাজিয়েছিলাম সেগুলি নেই।” এর পর মন্দির কমিটির অন্যান্য সদস্য-সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের চুরির ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশকেও ঘটনার কথা জানানো হয়। পুলিশ এলাকায় সকালে এসে তদন্ত করে চলে যায়। কিন্তু চুরি যাওয়া গয়না উদ্ধার হয়নি। কেউ ধরাও পড়েনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দিরে প্রায় ২৬ বছর ধরে পুরোহিত আছেন হারাধন চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি। বললেন, “এই ধরণের কাণ্ড এই নিয়ে চার বার হল। সব বার পুলিশ তদন্ত করে গিয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।”

এ দিকে সপ্তাহ খানেক আগে নলহাটি থানার আকালিপুর গ্রামে মহারাজ নন্দকুমার প্রতিষ্ঠিত গুহ্য কালীমাতার মন্দিরে চুরির ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার তো হয়ইনি, চুরি যাওয়া সামগ্রীও উদ্ধার করতে পুলিশ করতে পারেনি পুলিশ। বার বার চুরির ঘটনায় আকালিপুরের বাসিন্দারা তদন্তে আসা পুলিশকর্মীদের আটকে রেখেছিলেন। পুলিশ কুকুর এনে তদন্তের দাবি করেছিলেন। অন্য জেলা থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ কুকুর এনে তদন্ত করলেও আখেরে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তার পর আবার রামপুরহাটের মন্দিরে ফের চুরির ঘটনা। স্বাভাবিক ভাবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। রামপুরহাটের বাসিন্দা বাপী রায় বলেন, “পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতার করলেও তারা কীভাবে মামলা সাজায় যে দু’তিন মাস পরে ওই সমস্ত দুষ্কৃতীরা আবার ছাড়া পেয়ে যায়। অপরাধমূলক কাজ করতে থাকে তারা।”

Advertisement

জেলায় একের পর এক মন্দিরে চুরি হচ্ছে। একবার নয়, বার বার। এলাকার বাসিন্দারা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন? এ ব্যাপারে সোমবার দুপুরে জেলা সুপার অলোক রাজোরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিরক্তির সুরে জবাব দেন, “তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আমাদের তরফ থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন