পৌষ মেলার ডায়েরি

তিনি পৌষমেলায় এসেছেন, অথচ ডোকরাপট্টিতে যাননি, এমনটা কোনও দিন হয়েছে বলে, মনে করতে পারছেন না কয়েক দশক ধরে মেলায় আসা ডোকরাশিল্পীরা। কারও দোকানে দাঁড়িয়ে কানের দুল কিনেছেন তো, কারও দোকানে গলার হাড় অথবা পুঁথির মালা।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৪৬
Share:

বড়দিনে পৌষমেলায় উপচে পড়া ভিড়। ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিত্‌ রায়চৌধুরী।

এবং ঋতুপর্ণ

Advertisement

তিনি পৌষমেলায় এসেছেন, অথচ ডোকরাপট্টিতে যাননি, এমনটা কোনও দিন হয়েছে বলে, মনে করতে পারছেন না কয়েক দশক ধরে মেলায় আসা ডোকরাশিল্পীরা। কারও দোকানে দাঁড়িয়ে কানের দুল কিনেছেন তো, কারও দোকানে গলার হাড় অথবা পুঁথির মালা। কখনও আবার সৌজন্য বিনিময় করে বেরিয়ে যেতেন। চেনা মুখ দেখে বলতেন, “কেমন আছো তোমরা?” ফেরার পথে বলেও যেতেন, আবার দেখা হওয়ার কথা। শেষ যে বার এলেন, সে বারও বলেছিলেন তেমনই। এখন সে সবই শুধু স্মৃতি!

Advertisement

একা জগন্নাথ

একটা দু’টো নয়, এক সঙ্গে পাঁচটি বাদ্যযন্ত্র বাজান জগন্নাথ বেরা। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে এ ভাবেই বিভিন্ন মেলায় আগতদের সুরের মূর্চ্ছনায় মুগ্ধ করেন আদতে কলকাতার পার্ক সার্কাসের ওই যুবক। প্রতি বছর একই ভূমিকায় ঢোল, করতাল, ঝুনঝুনি, বাঁশি ও সিন্থেসাইজার নিয়ে হাজির হন শান্তিনিকেতনের পৌষমেলাতেও। জগন্নাথের কথায়, “মহারাষ্ট্র, বিলাসপুর এবং ভিরিঙ্গি মেলাতেও আমি বাজাতে যাই। তবে শান্তিনিকেতনের টানটা আলাদা।” তবে, বছর ৩৭-এর এই প্রতিবন্ধী শিল্পী এখন মনের মতো জুড়িদারের খোঁজে। রুজি-রুটি জোগাড়ে সাহায্য মেলার পাশাপাশি সংসার ধর্মও পালন করা যাবে যে!

১৪০০ সাহিত্যে

বাইশ বছর ধরে শান্তিনিকেতন মেলায় বসে ১৪০০ সাহিত্যের স্টল। ফি বছর লিটল ম্যাগাজিনের এই স্টলেই বসে লোকগান, কবিতা, ছড়া, আবৃতি চর্চার আসর। সঙ্গে রয়েছে নানা বাদ্যযন্ত্র সহযোগে সঙ্গীত ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জমে ওঠে সাহিত্যের আড্ডাও। ১৪০০ সাহিত্যের পৌষ সংখ্যার এ বার উদ্বোধন করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। পত্রিকার সম্পাদক প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “বাংলা লোকগানের বিশিষ্ট শিল্পী ভটা থেকে শুরু করে ছড়াকার অভীক বসু, সাধন বারিক বাউল শিল্পী রসিক দাস, তুফান দাস, বাঁশি শুনিয়েছেন বিখ্যাত বাঁশি বাদক শঙ্কর মালো।”

প্রতিবাদের সুর

মেলায় ঘুরতে এসে অনেকেই স্টলটার সামনে ভিড় জমাচ্ছিলেন। সেখানেই মিলছিল কালো ব্যাজ। বৃহস্পতিবার ওই কালো ব্যাজ পরেই অসমে জঙ্গি হানার প্রতিবাদ জানালেন তাঁরা। এ ভাবেই জঙ্গি হানায় হতাহতদের উদ্দেশে পৌষমেলার মাঠে শ্রদ্ধা জানাল একটি সংস্থা। সন্ধ্যায় শোকসভাও হয়। সেখানেই ওঠে নিন্দার ঝড়।

কচি-বায়না

দুপুরে আচমকা মেলার মাঠে মাইকে ঘোষণা: ‘শ্রীনিকেতনে দলছুট দাঁতাল এসেছে। সাবধানে থাকবেন। কেউ হাতিটিকে বিরক্ত করবেন না’। ওই ঘোষণাই বিপাকে ফেলল হুগলির বসু দম্পতিকে! মাইকে শুনেই একরতি খুদে মোনালিসা তার বাবা- মায়ের কাছে বায়না ধরল হাতি সে দেখেই ছাড়বে। কিছুতেই সে মেয়েকে বোঝানো গেল না, মেলার নয়, ওটা জঙ্গলের হাতি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন