চলছে জোরকদমের প্রস্তুতি। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
আসন্ন পৌষমেলার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে জোর কদমে। ইতিমধ্যেই জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেলেছেন বিশ্বভারতী এবং মেলা কর্তৃপক্ষ। শান্তিনিকেতনে আগামী ২৩ ডিসেম্বর ঐতিহ্যবাহী ওই মেলা শুরু হচ্ছে। কিন্তু, তার আগে দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছে না শান্তিনিকেতন চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, বিশ্বভারতীর কর্মী-পরিষদের। মেলায় স্টলের জন্য জায়গা বিলি থেকে দমকল ও অগ্নি নির্বাপণ বিভাগের বেঁধে দেওয়া শর্ত এবং পুলিশ প্রশাসনের মেলা বিষয়ক নিয়ম-নীতি মানা হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে তোড়জোড় চলছে সকল স্তরে। মেলায় ঢোকা এবং বেরনোর পথগুলিতে কোথায় কোথায় থাকবে ড্রপ গেট, মেলা চত্বরে কোথায় থাকবে ওয়াচ টাওয়ার, তার জায়গাগুলি চিহ্নিত করা শুরু হয়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে মেলার মধ্যে থাকা পুলিশ সহায়তা কেন্দ্রের লোকেশন ঠিক করা থেকে বিশ্বভারতীর নিজস্ব স্টলের জন্য সীমানা নির্ধারণ শুরু হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণে। এমনকী, পৌষ মেলার বিনোদন মঞ্চে তিন দিনের আউল-বাউল, ফকির, দরবেশের জন্য অনুষ্ঠানের সময়সূচি সেরে ফেলেছেন উদ্যোক্তারা।
বিশ্বভারতী কর্মী-পরিষদের অন্যতম সম্পাদক অমর্ত্য মুখোপাধ্যায় বলেন, “চলতি বছরের পৌষ উৎসবে প্রায় দু’ হাজার মতো স্টল থাকবে। অন্যান্য বারের মতো গ্রামীণ হস্ত ও কুটির শিল্পের পাশাপাশি লোকসংস্কৃতির অনুষ্ঠানকেও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই দোকানদারদের মধ্যে জায়গা বিলি, দূষণমুক্ত পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিন দিনের পৌষ উৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে আনুষঙ্গিক ব্যবস্থার কাজ জোর কদমে চলছে।”
এ দিকে, নানা টালবাহানার পরে অবশেষে পৌষ মেলায় নাগরদোলা-সহ একাধিক স্টলের বসার জায়গা সুনিশ্চিত হওয়ায় খুশি দোকানদারেরা। তবে, তাঁদের দাবি, সরকারি ভাবে তিন দিন এবং পরের দিন বাড়িয়ে মোট চার দিনের এই মেলায় তেমন অর্থে ছোট ছোট দোকানদারদের ব্যবসা হয় না। মেলা কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি স্টল তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করলে মালপত্র আনা, নিয়ে যাওয়ার খরচটাও উঠবে না বলে তাঁদের আশঙ্কা।
অন্য দিকে, শান্তিনিকেতন সফরে আসছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। আগামী ২৩ ডিসেম্বর তিনি বিশ্বভারতীতে আসছেন। জানা গিয়েছে, বিশ্বভারতীতে হতে চলা ‘বাংলাদেশ ভবন’ নিয়ে রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন। অন্য দিকে, একটি রবীন্দ্র সঙ্গীত গবেষণা কেন্দ্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আগামী ২৬ ডিসেম্বর শান্তিনিকেতনে আসবেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। দু’জনেরই নিরাপত্তা-সহ নানা বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবারই বৈঠক সেরেছেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা।