দ্বন্দ্ব তৃণমূলের অন্দরে

পঞ্চায়েতে ফের অনাস্থা

দলীয় সদস্যদের কাছেই বার বার তৃণমূলের প্রধান থেকে উপপ্রধানদের সরতে হচ্ছে। এ বার দলের উপ-প্রধানের বিরুদ্ধেই অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন তৃণমূলের তিন সদস্য। সোনামুখী ব্লকের মানিকবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। বুধবার সোনামুখীর বিডিও বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “ওই পঞ্চায়েতের তিন সদস্য উপ-প্রধানের বিরুদ্ধে সহযোগিতা না পাওয়ার কারণ দর্শিয়ে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। আমি শীঘ্রই সদস্যদের চিঠি পাঠিয়ে সভা ডাকব। তারপরই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সোনামুখী ও রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৫০
Share:

দলীয় সদস্যদের কাছেই বার বার তৃণমূলের প্রধান থেকে উপপ্রধানদের সরতে হচ্ছে। এ বার দলের উপ-প্রধানের বিরুদ্ধেই অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন তৃণমূলের তিন সদস্য। সোনামুখী ব্লকের মানিকবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। বুধবার সোনামুখীর বিডিও বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “ওই পঞ্চায়েতের তিন সদস্য উপ-প্রধানের বিরুদ্ধে সহযোগিতা না পাওয়ার কারণ দর্শিয়ে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। আমি শীঘ্রই সদস্যদের চিঠি পাঠিয়ে সভা ডাকব। তারপরই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”

Advertisement

প্রশাসন ও তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েতে মোট ৭টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে তৃণমূল ৩টি, বামফ্রন্ট ৩ টি এবং ১টি আসনে নির্দল জেতে। তবে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের পরে চিত্রটা বদলে যায়। সব বাম ও নির্দল সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। এর ফলে সাত জন সদস্যই তৃণমূলের হয়ে যান। তৃণমূলের কদম লোহার প্রধান নির্বাচিত হন, উপ-প্রধান ছিলেন তৃণমূলের সঞ্জয় গড়াই। অনাস্থা প্রস্তাবে তৃণমূল সদস্য রূপা লোহার, জলেশ্বর মাণ্ডি, সুচিত্রা মহন্ত অভিযোগ করেছেন, উপ-প্রধান স্কুল শিক্ষকতা করেন। সে জন্য পঞ্চায়েতের কাজে সময় দিতে পারেন না। এ ছাড়া অন্য সদস্যদের সঙ্গে তিনি অসহযোগিতা করেন। সে কারণেই তাঁকে ওই পদ থেকে সরানোর জন্য অনাস্থার প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য উপ-প্রধানকে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেন নি।

এ দিকে, সিপিএমের প্রধানকে আগেই নিজেদের দিকে এনে রঘুনাথপুর ২ ব্লকের নতুনডি পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছিল তৃণমূল। এ বার সিপিএমের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাকে অপসারিত করল তৃণমূল। সম্প্রতি ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভীম মালের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে তলবি সভা হয়। উপপ্রধান-সহ সিপিএমের চার সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তৃণমূলের ছয় সদস্য উপস্থিত থাকায় কোরাম গঠন করা যায়। উপস্থিত সদস্যেরা উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থায় সমর্থন জানান। রঘুনাথপুর ২ বিডিও উৎপল ঘোষ বলেন, “নতুনডি পঞ্চায়েতে উপপ্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা গৃহীত হয়েছে।”

Advertisement

রঘুনাথপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে নির্বাচনে সিপিএম দখল করেছিল তিনটি। বাকি তিনটি গিয়েছিল তৃণমূলের দখলে। এ বার সিপিএমের প্রধান সহ তিন সদস্যকে নিজেদের দিকে টেনে নতুনডি পঞ্চায়েত দখল করল তৃণমূল। নির্বাচনে নতুনডির ১০টি আসনের মধ্যে সিপিএম পেয়েছিল সাতটি আসন। তৃণমূলের দখলে গিয়েছিল তিনটি। সম্প্রতি ওই পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান গোলাম মোস্তাফা ও দুই পঞ্চায়েত সদস্য কানাই মাজি ও পারুল বাউরি যোগ দেন তৃণমূলে। ফলে পঞ্চায়েতে তৃণমূলের আসন বেড়ে দাঁড়ায় ছটিতে। সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় পঞ্চায়েতের দখল পায় তৃণমূল। দল বদল করলেও প্রধান হিসাবে থেকে গেছেন গোলাম মোস্তাফা। এবার সিপিএমের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাঁকেও অপসারিত করা হল।

তবে পঞ্চায়েত দখল করার প্রসঙ্গে জোর জবরদস্তি করার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে এনেছে সিপিএম। দলের চেলিয়ামা জোনাল সম্পাদক শক্তি বাউরির অভিযোগ, “সারা রাজ্যেই তৃণমূল অনৈতিক পদ্ধতিতে আমাদের দখলে থাকা পঞ্চায়েতগুলি দখল করছে। নতুনডির ক্ষেত্রেও আমাদের সদস্যদের হুমকি দিয়ে তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে।”.তৃণমূলের পাল্টা দাবি, সিপিএম ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। দলের ব্লকের অন্যতম নেতা বরুন মেহেতা বলেন, “এলাকার উন্নয়নের স্বার্থেই সিপিএমের সদস্যরা আমাদের দলে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। তাই তাঁদের দলে নেওয়া হয়েছে।” একই দাবি করেছেন প্রধান গোলাম মোস্তাফাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন