বৈঠক বিফল, বন্ধ থাকছে কারখানা

ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও জট খুলল না। আপাতত বন্ধই থাকছে পুরুলিয়ার আড়শার স্পঞ্জ আয়রন কারখানা। কাঁচামালের অভাব, উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং আর্থিক সঙ্কটের জেরে কর্মীদের মাইনে ও বিদ্যুতের বিল দিতে না পারার কারণ দেখিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি আড়শা ব্লকের ওই স্পঞ্জ আয়রন কারখানাটিতে লে-অফ নোটিস ঝুলিয়ে দেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২২
Share:

শ্রম দফতরের বাইরে অবস্থান।—নিজস্ব চিত্র।

ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও জট খুলল না। আপাতত বন্ধই থাকছে পুরুলিয়ার আড়শার স্পঞ্জ আয়রন কারখানা।

Advertisement

কাঁচামালের অভাব, উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং আর্থিক সঙ্কটের জেরে কর্মীদের মাইনে ও বিদ্যুতের বিল দিতে না পারার কারণ দেখিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি আড়শা ব্লকের ওই স্পঞ্জ আয়রন কারখানাটিতে লে-অফ নোটিস ঝুলিয়ে দেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। ২০০৫ সাল থেকে আড়শার কৌরাং গ্রামের অদূরে এই কারখানাটিতে উৎপাদন শুরু হয়। কারখানাটিতে ৭০ জন শ্রমিক এবং কারিগরি বিভাগে ৪০ জন কর্মী রয়েছেন। এ ছাড়া, মাল নামানোর জন্যও কিছু শ্রমিক কাজ পান। শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, গত ২২ ডিসেম্বরের পর থেকেই কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

মালিক পক্ষের অবশ্য দাবি, ওড়িশা থেকে কারখানার কাঁচামাল (আকরিক লোহা) আসে। সেখানে খনি বন্ধ থাকায় কাঁচামালের জোগান নেই। এই অবস্থায় কারখানায় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। কর্মীদের মাইনে বা বিদ্যুতের বিল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই তাঁরা আপাতত কারখানায় লে-অফ (অর্থাৎ, কারও কাজ থাকবে না) নোটিস দিয়েছেন। যদিও এতে শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। কারখানা খোলা নিয়ে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় সহকারী শ্রম কমিশনারের (পশ্চিম) কার্যালয়ে কর্মী সংগঠন ও মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। পরে কর্মী সংগঠনের মুখপাত্র রণজিৎ মাহাতো বলেন, “বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র মিলল না। মালিক পক্ষ জানুয়ারি মাসের মাইনে দু’কিস্তিতে দিতে চাইছেন। আর লে-অফ পিরিয়ডে ৩৫ শতাংশ মাইনে দেবেন বলছেন। পাশাপাশি লে-অফ পিরিয়ড আরও মাস দুই-তিন চলবে বলে জানিয়েছেন। আমরা বলেছি, জানুয়ারির মাইনে একসঙ্গে দিতে হবে। আর লে-অফ নোটিসও প্রত্যাহার করে নিতে হবে। মালিকপক্ষ তাতে রাজি নয়।”

Advertisement

বৈঠকে উপস্থিত কারখানার মালিক নিশান্ত দূত বলেন, “কাঁচামলাই মিলছে না, কী ভাবে কারখানা খুলতে পারব?” কিন্তু, কারখানা দিনের পর দিন বন্ধ রাখলে তো দু’পক্ষেরই ক্ষতি? মািকের বক্তব্য, “আমরা বর্তমানে উৎপাদন করতে পারছি না উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ায়। তাই আমরা বলেছিলাম, এই মন্দা টানা থাকবে না। আমাদেরও কারখানা খুলতে হবে। তাই কাঁচামালের জোগান স্বাভাবিক না হওয়া অবধি দু-তিন মাস লে-অফ পিরিয়ড থাকবে। এই সময়ে আমরা কর্মীদের ৩৫ শতাংশ মাইনে দেব। কিন্তু ওঁরা রাজি হলেন না।” এই কারখানার শ্রমিক ইউনিয়ন আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত। সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রফুল্ল মাহাতো বলেন, “এ বার আসানসোলে ডেপুটি শ্রম কমিশনারের অফিসে বৈঠক ডাকা হয়েছে। দেখা যাক, সেখানে কী হয়।” ১৮ ফেব্রুয়ারি বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন পুরুলিয়ার সহকারী শ্রম কমিশনার (পশ্চিম) সঞ্জয় দেবনাথ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন