রাতের অন্ধকারে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসে হামলা চালিয়ে রক্ষীকে মারধর এবং অফিস ও পুজো মণ্ডপ ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠল কিছু যুবকের বিরুদ্ধে। মানবাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসে সোমবার রাতের ঘটনা। মঙ্গলবার তিন যুবকের বিরুদ্ধে মানবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা হলেন বিপ্লব চৌধুরী, শুভেন্দু চৌধুরী ও ছোটকা রায়। তিন জনই মানবাজার থানার মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা।
বণ্টন সংস্থার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বিজন দুয়ারির অভিযোগ, “সোমবার রাতে তিন যুবক আমাদের অফিসে চড়াও হয়ে নিরাপত্তা রক্ষীকে মারধর করেছে। দফতরের কয়েক জন কর্মী কাছেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। রাতে ওখানেও কর্মীদের গালাগালি ও হুমকি দিয়েছে। ফি বছর অফিসের বারান্দায় প্যান্ডেল খাটিয়ে বিশ্বকর্মা পুজো হয়। সেই প্যান্ডেলও ভাঙচুর করেছে হামলাকারীরা। অফিসের ভিতরে ঢুকে স্যুইচ বোর্ড ও কাচ ভেঙেছে। তিন জনকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি পুলিশের কাছে।” মঙ্গলবার সকালে ওই অফিসে গিয়ে দেখা গেল, পুজোর প্যান্ডেলের কাপড় ছেঁড়া, বাঁশ উল্টে পড়ে আছে। কাউন্টারের সামনে স্যুইচ বোর্ড ও কাচ ভাঙা।
সোমবার রাতে গোপালচন্দ্র রায় নামে এক পুলিশকর্মী ওই অফিসের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। গোপালবাবু বলেন, “তখন রাত সওয়া ১০টা হবে। অফিসের মূল দরজা বন্ধ করে আমি সবে উপরে উঠেছি। এমন সময় নীচে দরজায় ধাক্কা দেওয়ার আওয়াজ পাই। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড গালিগালাজ। ওরা চেনা ছেলে। তা-ও কেন এমন করছিল, জানি না। শেষে থানায় ফোন করি।” গোপালবাবুর অভিযোগ, রাত দশটার পর বাসস্ট্যান্ড এলাকা সুনসান হয়ে যায়। ফলে, পুলিশ না আসা অবধি নীচে নামার সাহস পাননি। পরে নেমে দেখেন পুজোর মণ্ডপে ভাঙচুর করা হয়েছে। তখনই ওই তিন যুবক ফের মোটরবাইকে এসে তাঁর উপরে চড়াও হয়। তিনি লাঠি জোগাড় করে তাদের দিকে তেড়ে যেতে পালিয়ে যায়।
অভিযুক্ত বিপ্লবের অবশ্য দাবি, বিদ্যুৎ দফতর আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। কয়েক দিন ধরে তাঁদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগের গোলমাল চলছিল। মেদিনীপুরের অফিসে জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছিল না। তিনি বলেন, “আমাদের গ্রাম মধুপুর থেকে বাসস্ট্যান্ডের অফিস বেশি দূরে নয়। তা-ও ওরা সংযোগ দিতে কেন গড়িমসি করছে, তা জানতেই সোমবার সন্ধ্যায় মানবাজারের অফিসে গিয়েছিলাম। সঙ্গে সম্পর্কে এক ভাই ও বন্ধু ছিলেন। এই ঘটনায় তাঁদেরও জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করিনি। বচসা হয়েছিল মাত্র।” বিপ্লবের পাল্টা অভিযোগ, দফতরের কর্মীরাই প্যান্ডেল ছিঁড়ে তাঁদের নামে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছে।