বাবা-মাকে হারিয়ে প্ল্যাটফর্মে দুই বোন

মেয়েদের ট্রেনে রেখে খাবার কিনতে ট্রেন থেকে নেমেছিলেন বাবা-মা। ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায় উঠতে পারেননি দু’জনই। বাবা-মাকে হারিয়ে আদ্রা স্টেশনে বসে কাঁদছিল দুই বোন। রেলপুলিশ দুই নাবালিকা বোনকে উদ্ধার করে তুলে দেয় পুরুলিয়া চাইল্ড লাইনের হাতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আদ্রা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৪ ০০:৪৩
Share:

রানি ও আরতি। —নিজস্ব চিত্র।

মেয়েদের ট্রেনে রেখে খাবার কিনতে ট্রেন থেকে নেমেছিলেন বাবা-মা। ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায় উঠতে পারেননি দু’জনই। বাবা-মাকে হারিয়ে আদ্রা স্টেশনে বসে কাঁদছিল দুই বোন। রেলপুলিশ দুই নাবালিকা বোনকে উদ্ধার করে তুলে দেয় পুরুলিয়া চাইল্ড লাইনের হাতে। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। পরে চাইল্ড লাইনের আদ্রার সদস্যেরা উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ওই দুই বোনকে পৌঁছে দিয়েছেন জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির কাছে। সমিতির চেয়ারম্যান অমিতা মিশ্র জানান, ওই দুই বোনকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

রেলপুলিশ ও চাইল্ড লাইন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে আদ্রা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দু’টি বাচ্চা মেয়েকে বসে কাঁদতে দেখেন রেলপুলিশের কর্মীরা। তাদের নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। সব জেনে রেলপুলিশ দুই বোনকে নিয়ে যায় মনিপুর গ্রামে চাইল্ড লাইনের দফতরে। চাইল্ড লাইনের মনিপুরের কর্মকর্তা মন্টু মাহাতো জানান, দুই বোনের মধ্যে বছর তেরোর মেয়েটির নাম রানি কুমারী। তার বোন আরতির বয়স বছর ছয়েক। তারা জানিয়েছে, তাদের বাড়ি ইলাহাবাদের করাম থানার বোরোখার গ্রামে। বিহারের গয়ায় দিদিমার বাড়ি থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে ইলাহাবাদ ফিরছিল তারা। শুক্রবার রানি বলে, “বাবা-মা আমাদের ট্রেনের কামরায় বসিয়ে রেখে স্টেশনে নেমেছিল খাবার কিনতে। কিন্তু, ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায় ওরা আর চাপতে পারেনি। আমরা পরের স্টেশনে নেমে পড়েছিলাম।” কিন্তু, কোন ট্রেনে তারা ইলাহাবাদ ফিরছিল বা কোন স্টেশনে তাদের বাবা-মা নেমেছিলেন, তা জানাতে পারেনি রানি, মন্টুবাবু বলেন “রানি জানিয়েছে, সে গ্রামের স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বাড়ির ঠিকানা বলতে পারলেও কোনও ফোন নম্বর দিতে না পারায় ওদের বাবা-মা বা আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।”

বৃহস্পতিবার রাতে মনিপুর গ্রামের হোমে ওই দুই বোনকে রাখার পরে শুক্রবার দুপুরের দিকে চাইল্ড লাইনের সদস্যেরা দুই বোনকে নিয়ে যান পুরুলিয়ায় শিশুকল্যাণ সমিতির কার্যালয়ে। সমিতির চেয়ারম্যান অমিতা মিশ্র বলেন, “আপাতত ওই দু’জনকে রাখা হচ্ছে পুরুলিয়ার আনন্দমঠ হোমে। বাড়ির ঠিকানা বলতে পেরেছে রানি। আমরা ওদের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে চাইল্ড লাইনের সদস্যেরা ইলাহাবাদে গিয়ে ওদের বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে আসবে।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন