অসন্তোষ দেবব্রত-র

বাম নেতাদের কর্তা-সুলভ আচরণে আন্দোলন স্তব্ধ

শীর্ষ বাম নেতারা এখনও কর্তা-সুলভ আচরণ ঝেড়ে ফেলতে পারেননি। তাই মুখ থুপড়ে পড়েছে আন্দোলন। এমনটাই মনে করছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস। রবিবার বাঁকুড়া শহরের ধর্মশালায় অগ্রগামী কিষাণসভার এক কর্মিসভায় তিনি এই অভিযোগ তুলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে নেতৃত্বে নতুন মুখ নিয়ে আসার দাবি তুললেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৮
Share:

শীর্ষ বাম নেতারা এখনও কর্তা-সুলভ আচরণ ঝেড়ে ফেলতে পারেননি। তাই মুখ থুপড়ে পড়েছে আন্দোলন। এমনটাই মনে করছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস। রবিবার বাঁকুড়া শহরের ধর্মশালায় অগ্রগামী কিষাণসভার এক কর্মিসভায় তিনি এই অভিযোগ তুলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে নেতৃত্বে নতুন মুখ নিয়ে আসার দাবি তুললেন।

Advertisement

তবে খোদ ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতৃত্ব বদলের দাবিতে নভেম্বর মাসে রাজ্য কাউন্সিলের যে অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল, তা স্থগিত হয়ে গিয়েছে সাংগঠনিক বেনিয়মের কারণে। ফলে দেবব্রতবাবুর নিজের দলেই নেতৃত্বে নতুন মুখ নিয়ে আসার বিষয়টি বিশবাঁও জলে চলে গিয়েছে।

এই বর্ষীয়ান বাম নেতা সারদা-কাণ্ডে ইডির তলব করা বস্ত্রমন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে (বিষ্ণুপুরের বিধায়ক) নিয়ে বাঁকুড়া জেলায় আন্দোলন না হওয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “শ্যামবাবুর বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে সেই সব বিষয় নিয়ে এই জেলায় বৃহত্তর আন্দোলন হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কিছুই হল না। আসলে বামফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা এখনও ‘বস’ মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারছেন না। আর পারবেও না। তাই নতুন মুখ দরকার।” তিনি জানান, দলীয় কর্মীদের নিচুতলা নতুন মুখ তুলে আনতে বলা হয়েছে। শ্যামবাবুর বিরুদ্ধে জেলার ফরোয়ার্ড ব্লকের নেতাদের বড়সড় আন্দোলনে নামার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিষ্ণুপুরের যে বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারি লগ্নি সংস্থার অনুষ্ঠানে শ্যামবাবুর বক্তৃতা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই সংস্থার বিরুদ্ধে শীঘ্রই তিনি কলকাতায় জমায়েত করে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলবেন।

Advertisement

রাজনীতি সচেতন মানুষজনের মতে, ‘বস’ মনোভাবাপন্ন বাম নেতা বলতে দেবব্রতবাবু সিপিএম নেতাদের বুঝিয়েছেন। রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর পরেও গত পঞ্চায়েত ভোটের সময়েও জেলায় জেলায় আসন বন্টন নিয়ে বামফ্রন্টের শরিক দলগুলির সঙ্গে মতানৈক্যের ঘটনা সামনে এসেছে সিপিএমের। বাঁকুড়া জেলার এক ফরওয়ার্ড ব্লক নেতার কথায়, “পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের প্রার্থীদের হয়ে সে ভাবে প্রচারে নামেনি সিপিএম। জেলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গেলেও বেশির ভাগ সময় ওদের পাশে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার কথা একাধিকবার ফব-র রাজ্য কমিটির বৈঠকেও উঠেছে।”

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্রের অবশ্য দাবি, “শ্যামবাবুর বিরুদ্ধে ওই বিষয়গুলি নিয়ে জেলায় আন্দোলন তো চলছে। আমরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে শ্যামবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি তুলে ধরছি। বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকারের কটাক্ষ, “আন্দোলন গড়ে তুলতে গেলে মানুষের সমর্থনের প্রয়োজন। সেটাই সিপিএম হারিয়ে ফেলেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন